পুড়ছে নগরী, তবুও স্বর্গ হাতিরঝিল


প্রকাশিত: ০৮:৫১ এএম, ২৩ মে ২০১৭
ছবি : মাহবুব আলম

গ্রীষ্মের দাবদাহে পুড়ছে দেশ। পুড়ছে রাজধানী ঢাকাও। টানা গরমে নগরবাসীর জীবন ক্রমশই অসনীয় হয়ে উঠছে। আবহাওয়া অফিস বলছে, দাবদাহ থাকবে আরও কয়েকদিন। ইট-পাথরের নগরীর সর্বত্রই যেন খা খা করছে। গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লোডশেডিং। আবার বিদ্যুৎ মিললেও ফ্যানের বাতাসে প্রাণ জুড়াচ্ছে না।

এমন অসহনীয় গরমেও হাতিরঝিল যেন এক টুকরো স্বর্গ। স্বর্গীয় বাতাস বইছে হাতিরঝিলে। রাজধানীর বুকে যেন বিশাল এক সবুজের বাগান।

ঝিলপাড়ের গাছগুলো ছায়া দিচ্ছে দু-তিন বছর আগে থেকে। এবার গাছের পত্রপল্লবে আরও পূর্ণতা এসেছে। দু’ধার সবুজে ভরে গেছে। বাহারি বনজ গাছে দৃষ্টিনন্দন শোভা মিলছে ঝিলজুড়ে। ঘন ঘাসের আবরণে যেন সবুজের মাদুর বিছানো আছে। কৃষ্ণচূড়া, কদম, অশোক ফুলও ফুটেছে বেশ। সবুজের মাঝে কৃষ্ণচূড়ার লাল যেন দেশীয় রূপ ফুটেছে।

ঝিলের পানির গন্ধও কমে এসেছে খানিকটা। ওয়াটার বাস চলাচল করায় পানি এখন পরিষ্কারও বটে। রাজধানীর বৈরী আবহাওয়া হাতিরঝিলে এসে প্রায় ধরাশায়ী। অসহনীয় গরমে সর্বত্রই জীবন যখন ওষ্ঠাগত, তখন হাতিরঝিলে শীতল হাতছানি। সবুজে চোখ জুড়ায় না কেবল, সবুজ ছায়া আর খানিক ঠান্ডা বাতাস শরীরও জুড়ায়।

গরম পড়লেই ঝিলের আশপাশের মানুষ ছুটে আসছে হাতিরঝিলের গাছের ছায়ায়। দল বেঁধেও অনেকে মিলে যান ঝিলের পাড়ে। অনেকেই গাড়ি থামিয়ে গাছের ছায়ায় জিড়িয়ে নেন। আড্ডা চলে রাতেও।

jhell

সোমবার দুপুর বেলা। কাঠফাটা গরমে উষ্ণ হাওয়া বইছে চারদিকে। এমন গরমেও প্রশান্তির ভঙ্গিতে গাছের তলায় বসে তন্দ্রা যাচ্ছেন ষাটোর্ধ্ব মোবারক আলী হালদার। বাড়ি বরিশাল। নিরাপত্তারক্ষীর চাকরি করেন বাংলামোটরে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। আলোকচিত্রী ক্লিক করতেই তন্দ্রাভাব কাটিয়ে স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করেন তিনি।

বলেন, ‘এমন শান্তির জায়গা রাজধানীর আর কোথাও মিলবে না। গাছের ছায়া। পানির ঢেউ। বাতাসও কিছুটা ঠান্ডা। ফ্যানের বাতাসে পরান জুড়ায় না। যেন গাঁও-গ্রামের কোনো বটতলার ছায়ায় বসে আছি। কখন ঘুম চলে এসেছে, বুঝতে পারি নাই।’

বৃদ্ধ মোবারক যেখানে বসে আছেন তার খানিক দূরেই মধুবাগ ব্রিজ। ব্রিজঘাটে চলছে দুরন্তপনার সীমাহীন কাণ্ডকীর্তি। পানি ময়লা, কি গন্ধ তার ধার ধারেনি ওরা। দুরন্ত শিশু-কিশোরদের লাফালাফিতে ঝিলের পানি থৈ থৈ করছে। তীব্র গরমে ঝিলের পানিতে প্রশান্তির ডুব দিয়ে শরীর জুড়াচ্ছেন বয়স্করাও।

ব্রিজ থেকে পানিতে লাফ দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল চতুর্থ শ্রেণির শিশু বাবু। বলে, এখন প্রতিদিনই এখানে ডুব দেই। অনেকেই আসেন। বড়রাও আসেন। এখানে ডুব দেয়ার মজাই আলাদা।

এএসএস/এআরএস/এমএআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।