মরণ ছাড়া কাঁধ থাইক্যা বোঝা নামব না


প্রকাশিত: ০৩:৪২ এএম, ০১ মে ২০১৭

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসির সামনে থেকে দোয়েল চত্ত্বর মোড় পেরিয়ে দ্রুত পায়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন আনুমানিক ৬০ বছর বয়সি এক বৃদ্ধ। মাথায় খড়ের ভারি বোঝা। পরনে সাদা লুঙ্গি ও হাত গুটানো ফুল শার্ট ও পায়ে প্লাস্টিকের এক ফিতার জুতা।

রোববার দুপুরে প্রখর সূর্যতাপে দরদর করে ঘামছিলেন তিনি। শিশু একাডেমির সামনে যানজটে আটকে পড়া প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল ও রিকশা আরোহীদের অনেকেই বয়স্ক লোকটির ঘামে ভিজতে দেখে আফসোস করছিলেন।

মোটরসাইকেল আরোহী এক তরুণ উচ্চস্বরে ওই বুড়া মিয়া বোঝাডা নামাইয়া একটু রেস্ট নিয়া যান বলতেই বৃদ্ধ আরও জোরে হাঁটতে লাগলেন। কৌতুহলবশত এ প্রতিবেদক কথা বলতে চাইলে প্রথমে বৃদ্ধ সরাসরি অস্বীকৃতি জানান।

অনেক পীড়াপীড়ির পর জানান, নাম চাঁন মিয়া। বাড়ি সিরাজগঞ্জ। গত চার দশকের বেশি সময় ধরে পাঁচ সদস্যের পরিবারের বোঝা টানছেন। দুই ছেলের একজন মাদকাসক্ত। অন্যজন বিয়ে করে বউ ছেলে নিয়ে তার সঙ্গে রয়েছেন। ঠাটারিবাজার একটি সিরামিকের কাপ পিরিচের দোকানে মাসিক আট হাজার টাকা বেতনে চাকরি করেন।

তিনি জানান, প্রতিদিন কাকডাকা ভোরে যেতে হয় শাহবাগে ফুলের মার্কেটে। সেখান থেকে প্রতি আটি খড় ১০০ টাকায় কিনেন। শাহবাগ থেকে ঠাটারিবাজার পর্যন্ত পায়ে হেঁটে যান। প্রতিদিন কমপক্ষে পাঁচ ছয়বার আসা যাওয়া করতে হয়।

ক্ষণিকের বিরতিতে একটু জিরিয়ে নেয়ার সময় বোঝাটা উঠিয়ে দিতে সাহায্যে চাইলেন চাঁন মিয়া। আবার দ্রুত পায়ে হেঁটে যাওয়ার সময় ব্যথিত হৃদয়ে বললে, সংসারের চাকা সচল রাখতে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত এই বোঝা টাইন্যা যাইতো হইব।

এমইউ/এএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।