কপাল খুলেছে সিএনজি-ট্যাক্সিক্যাব চালকদের
রাজধানীতে সিটিং সার্ভিস বন্ধ। তাই দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছাতে একমাত্র ভরসা ভাড়ায়চালিত অটোরিকশা ও ট্যাক্সিক্যাব। এতেই কপাল খুলেছে এ খাতে সংশ্লিষ্ট চালকদের। নির্দিষ্ট স্থানে যাত্রী পৌঁছে দিতে নানা টালবাহানা। অবশেষে দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে বাধ্য হচ্ছেন অফিসগামী যাত্রীরা।
রোববার সকালে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। কথা হয় বিড়ম্বনার শিকার যাত্রী আরিফুজ্জামানের সঙ্গে। বেসরকারি ন্যাশনাল ব্যাংকে চাকরি করেন তিনি। থাকেন রাজধানীর শেওড়াপাড়ায়।
জাগো নিউজকে তিনি বলেন, ‘সকাল ১০টার মধ্যে মতিঝিল অফিসে ঢুকতে হবে। প্রতিদিন শেওড়াপাড়া থেকে বিকল্প বা হাজী পরিবহনে মতিঝিলে আসি। আজ বিকল্প পরিবহনে দেখি সব সিটেই যাত্রী, দাঁড়িয়ে আছেন অনেকে। ওঠার কোনো সুযোগ নেই। তাই সিএনজি করে আসলাম দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে। আগে এক ঘণ্টা থেকে সোয়া এক ঘণ্টার মধ্যে ২৫ টাকা ভাড়া দিয়ে মতিঝিলে আসতাম। সিএনজিতে এক ঘণ্টাই লাগলো কিন্তু ভাড়া গুণতে হলো ৩৫০ টাকা। শেওড়াপাড়া থেকে মতিঝিল পর্যন্ত সিএনজিতে সর্বোচ্চ ভাড়া হবে ২০০ টাকা।’
রাজধানীর মুগদা এলাকায় জালাল আহমেদ নামের এক অফিসগামী বলেন, ‘বসুন্ধরা-বারিধারায় যাওয়ার বাস পাচ্ছি না। একটি হলুদ ক্যাবের চালককে ভাড়া জিজ্ঞাসা করলাম, ৪০০ টাকা চাইল। কীভাবে যাব বলেন! সিএনজি ভাড়া চাচ্ছে ৩০০ টাকা। মিটারে গেলে দেড় থেকে দুইশ টাকার বেশি ভাড়া হবে না।’
এ সময় রাস্তার পাশে পার্ক করে থাকা সিএনজিচালক আজিজুলের কাছে বেশি ভাড়া চাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যাইলে যাবেন না যাইলে যাবেন না। এত কথা বলার সময় নেই।’
অফিসগামী জালাল বলেন, ‘এদের (চালকদের) ব্যবহার দেখছেন। মানে আমরা তাদের কাছে জিম্মি। আমি প্রতিদিন সিটিং সার্ভিস রাইদা বা অনাবিল পরিবহনে যাতায়াত করি। আজ সব বাসে যাত্রীতে ঠাসা। সিএনজিতে যাব, মিটারে তো যাবেই না; যা মন চাচ্ছে ভাড়া বলছে। সিটিং সার্ভিস বন্ধের সুযোগ নিচ্ছে অটোরিকশা ও ট্যাক্সিক্যাব চালকরা।’
তিনি বলেন, ‘সিটিং সার্ভিস বন্ধ হয়েছে ভালো। কিন্তু এ সুযোগ যে অন্যরা নিচ্ছে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। কারণ সরকারকে সবার সুযোগ-সুবিধা দেখতে হবে।’
ট্যাক্সিক্যাবের চালক শামীম জাগো নিউজকে বলেন, রোববার রাস্তায় যানজট বেশি। সকালে ও বিকেলে যাত্রী বেশি থাকে। মাঝখানে অনেক সময় বসে থাকতে হয়। সব মিলিয়ে ভাড়া বেশি রাখতে হয়।
মিটারে যান না কেন- জানতে চাইলে এই চালক বলেন, ‘গাড়ির জমা ও খরচ অনেক বেশি। মিটারে গেলে পোষাইব না।’
রাজধানীতে গণপরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কৌশল বন্ধ করতে সিটিং সার্ভিস বন্ধ করেছে সংশ্লিষ্টরা। তবে তা কতটুকু বাস্তবায়ন হবে তা সময়ই বলে দেবে।
শনিবার রাজধানীর এলেনবাড়িতে বিআরটিএর প্রধান কার্যালয়ে এক বৈঠক শেষে সংস্থার চেয়ারম্যান মো. মশিয়ার রহমান রোববার (আজ) থেকে সিটিং সার্ভিস বন্ধের ঘোষণা দেন। সে লক্ষ্যে মাঠে নেমেছে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ।
এসআই/জেডএ/এমএআর/বিএ/পিআর