জাপানে শ্রমবাজারের খোঁজে বাংলাদেশ


প্রকাশিত: ০৪:৩৬ এএম, ১৩ এপ্রিল ২০১৭

২০২০ সালে জাপানের টোকিও-তে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে অলিম্পিক গেমসের আসর। এ আসর উপলক্ষে দেশটিতে প্রচুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। দক্ষকর্মী পাঠিয়ে অর্থনৈতিকভাবে প্রভাবশালী এশিয়ার এ দেশের বাজার ধরতে চায় বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যে নিজেদের কর্মীদের দক্ষতা সম্পর্কে জানাতে চলতি মাসে পাঁচ দিনের সফরে দেশটিতে যাচ্ছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

নির্মাণ ও উৎপাদনমুখী শিল্পের জন্য বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন (কারিগরি প্রশিক্ষণার্থী) নেয় জাপান। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজেদের আরও কর্মী দেশটিতে পাঠানোর কথা ভাবছে বাংলাদেশ।

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় জানায়, ইন্টারন্যাশনাল ম্যানপাওয়ার ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন, জাপান (আইএম জাপান) দেশটির বিভিন্ন নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানের হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে কর্মী সংগ্রহ করেন। আইএম জাপানের সঙ্গে সম্প্রতি একটি চুক্তিও করেছে বাংলাদেশ। আগামী ২০ এপ্রিল টোকিতে প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোগে একটি সম্মেলন আহ্বান করা হয়েছে। সেখানে নিয়োগকর্তা প্রতিষ্ঠানগুলো অংশগ্রহণ করবে। সেই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বাংলাদেশের কর্মীদের সম্পর্কে তথ্য তুলে ধরবেন। কিভাবে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কর্মীদের দক্ষ করে তোলা হচ্ছে- সেসব বিষয় জানানো হবে।

এ প্রসঙ্গে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাবেদ আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘২০২০ সালে অলিম্পিকের আয়োজক দেশ হিসেবে জাপানে কনস্ট্রাকশনের কাজ হচ্ছে। সেখানে অনেক শ্রমিক প্রয়োজন। আমরা সুযোগটি নিতে চাই।’

এছাড়া জাপানে কর্মীদের বেতন মধ্যপ্রাচ্যেরে যেকোনো দেশের তুলনায় বেশি। এখানে একজন কর্মীর অল্প সময়ে অনেক বেশি আয় করার সুযোগ থাকবে বলেও জানান তিনি।

japan

মন্ত্রীর সফর সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আগামী ২০ এপ্রিল টোকিও-তে এমপ্লয়ারদের যে সম্মেলন রয়েছে, সেখানে বাংলাদেশের কর্মীরা দক্ষতার ক্ষেত্রে কিভাবে উন্নতি করছে, আমাদের কতজন দক্ষকর্মী রয়েছে- সেসব বিষয়ে জানানো হবে। এতে এমপ্লয়াররা বাংলাদেশের কর্মীদের প্রতি আগ্রহী হবেন বলে আশা করছি।’

সরকারের এমন উদ্যোগে সাধুবাদ জানিয়েছেন জনশক্তি রফতানিকারকসহ সংশ্লিষ্টরা।

জনশক্তি রফতানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) সাবেক মহাসচিব আলী হায়দার চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই আমাদের শ্রমবাজার মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর উপর নির্ভরশীল। কিন্তু অর্থনৈতিক মন্দার কারণে এসব বাজার আগের মতো চাঙ্গা নেই। অনেক দেশ আবার বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেয়া বন্ধ রেখেছে। এসব কারণে রেমিটেন্স প্রবাহ অব্যাহত রাখতে বিকল্প শ্রমবাজার খোঁজা অত্যন্ত জরুরি।’

তবে জাপানের মতো বাজারে দক্ষকর্মীর বিকল্প নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এসব দেশে পরীক্ষিত দক্ষকর্মী পাঠাতে হবে। অন্যথায় বাজার ধরে রাখা কঠিন হয়ে যাবে।’

জাপানে কাজের সুযোগ হতে পারে- এমন খবরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন বিদেশ যেতে আগ্রহী যুবক রিজভী হাসান। সদ্য ডিপ্লোমা পাস করা এ তরুণ জাগো নিউজকে বলেন, ‘দক্ষ শ্রমিকদের গ্রহণযোগ্যতা ও বেতন জাপানে অনেক বেশি। তাই আমরা যারা ডিপ্লোমা পাস করেও দেশে চাকরি পাচ্ছি না, তাদের জন্য জাপানে কর্মসংস্থানের সুযোগ অনেক বড় ব্যাপার। আশা করি সরকার এ বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নেবে।’

জেপি/এমএআর/এনএফ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।