সিন্ডিকেট ভাঙতে তৎপর টিসিবি


প্রকাশিত: ০৮:১৫ এএম, ০৪ এপ্রিল ২০১৭

পবিত্র রমজানে বাজারের চাহিদা মেটাতে চিনি, ছোলা, মসুরের ডাল, ভোজ্যতেল ও খেজুর আমদানির প্রক্রিয়া শুরু করেছে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। ইতোমধ্যে মসুর ডাল, ছোলা ও খেজুর আমদানি করতে আন্তর্জাতিক টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। এর বাইরে চিনি ও সয়াবিন তেল আমদানির দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়া চলছে।

প্রাথমিকভাবে পাঁচ হাজার টন চিনি, দুই হাজার টন ছোলা, এক হাজার টন সয়াবিন এবং দুই হাজার টন মসুরের ডাল আমদানি করা হচ্ছে। প্রয়োজনে আমদানির পরিমাণ আরও বাড়ানো হবে। টিসিবি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে টিসিবির প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা আক্তার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, রমজানে বাজার নিয়ন্ত্রণে ইতোমধ্যে তিনটি পণ্যের আমদানি নিশ্চিত করতে টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। টেন্ডারের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে দুই হাজার টন ছোলা এবং দুই হাজার টন মসুর ডাল আমদানি করা হবে। তবে টেন্ডার দিলেও খেজুরের বিষয়ে নতুন করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ হিসেবে ভোজ্যতেল, চিনিও আমদানি করা হবে। এর টেন্ডার প্রক্রিয়াও চলছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছর রমজানে বাজার অস্থির হয়ে ওঠে। বিশেষ কয়েকটি পণ্য নিয়ে সিন্ডিকেটের কারসাজি শুরু হয়। কখনও চিনি নিয়ে কখনও ছোলা নিয়ে কেলেঙ্কারি চলে। কখনও পেঁয়াজ ও রসুন চলে যায় সিন্ডিকেটের কবলে। সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট রমজান মাসের বাড়তি চাহিদা পুঁজি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। রমজান শুরুর দু-তিন মাস আগ থেকে সিন্ডিকেটের অপতৎপরতা শুরু হয়।

চলতি বছরও সক্রিয় হয়ে উঠেছে সিন্ডিকেট। তবে এবার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নিয়ে এ সিন্ডিকেট যাতে কোনো কারসাজি করতে না পারে সেজন্য টিসিবিকে আগেই মাঠে নামানো হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অতীত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য যৌক্তিক ও স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে সরকার এখন থেকেই পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে। তবে বাজারে সক্রিয় হয়ে ওঠা সিন্ডিকেটের অপতৎপরতার মুখে শেষ পর্যন্ত সরকারি সদিচ্ছা কতটুকু কার্যকর থাকে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু সালেহ মো. গোলাম আম্বিয়া জাগো নিউজকে বলেন, ‘বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের অংশ হিসেবে টিসিবি প্রতি বছরই উদ্যোগ নেয়। এবারও ব্যতিক্রম হচ্ছে না। ইতোমধ্যে টেন্ডার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।’

বাজার চাহিদার কতটুকু টিসিবি পূরণ করতে পারবে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের অংশগ্রহণ একবারে কমও নয়। জরুরি মুহূর্তে বা অন্য যেকোন পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য যথেষ্ট।’

জানা গেছে, রমজানে ছোলার চাহিদা অন্তত ৬০-৭০ হাজার টন। স্বাভাবিক সময়ে ছোলার চাহিদা মাসে গড়ে চার-পাঁচ হাজার টন। রমজানের এ বাড়তি চাহিদা পুঁজি করে প্রতি বছর ছোলার দাম বাড়িয়ে কোটি কোটি টাকা মুনাফা করে ওই সিন্ডিকেট চক্র। কিন্তু এবার ছোলার দাম কেউ যাতে বাড়াতে না পারে এজন্য আগে থেকে বিশেষ ব্যবস্থা হিসেবে টিসিবিকে দিয়ে দুই হাজার টন ছোলা আমদানি করা হচ্ছে।

এছাড়া দেশে প্রতি মাসে গড়ে এক থেকে সোয়া লাখ টন চিনির চাহিদা রয়েছে। রমজান মাসে এর চাহিদা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় দুই লাখ টনে। এবার তীব্র গরমের মধ্যে রোজা হওয়ায় চিনির ব্যবহার বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সে অনুযায়ী টিসিবি ব্যবস্থা নিচ্ছে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

এমএ/এমএআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।