এখনও গ্যাস সংযোগ পায়নি সাভার
রাজধানীর অদূরে সাভারের চামড়া শিল্পনগরীতে উৎপাদনে যাওয়া কারখানাগুলো এখনও গ্যাস সংযোগ পায়নি। ফলে চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের সার্বিক কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে না। এই অবস্থার সমাধান না করে সাভারে কারখানা স্থাপনে চাপ দেওয়া নিয়া প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাভারে উৎপাদনে যাওয়া কারখানাগুলোতে গ্যাস সংযোগের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এখন চলছে পাইপ লাইন স্থাপনের কাজ। বাকি কারখানায় আগামী এক মাসের মধ্যে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হবে।
সোমবার চামড়া শিল্পনগরী সরেজমিনে ঘুরে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।
ট্যানারির শ্রমিক মো. হুমায়ুন বলেন, সাভারে গত কোরবানি ঈদের আগে ট্যানারি স্থানান্তর করা হয়েছে। কিন্তু এখনও গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়নি। এজন্য চামড়ার পুরোপুরি প্রক্রিয়াকরণ কাজ সম্ভব হচ্ছে না।
শিল্প মন্ত্রণালয় বলছে, চামড়া শিল্পনগরীর ১৫৫টি প্লটের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৮৬টি প্লটে ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। আরও ৩৫টি প্লটে ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ কাজ শুরু করেছে ৩৭টি ট্যানারি কারখানা। পাশাপাশি আরো ৫২টি কারখানা ট্যানিং ড্রাম ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি স্থাপন করেছে। ৩৫টি ট্যানারি স্থায়ী বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়েছে। আর বিদ্যুৎ সংযোজনের জন্য ডিমান্ড নোটের টাকা জমা দিয়েছে ৬১টি প্রতিষ্ঠান।
তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, আবেদন করেও গ্যাস সংযোগ পাচ্ছেন না তারা। ফলে কাজে যেমন গতি আসছে না, তেমনি উৎপাদন খরচও বেড়েছে কয়েকগুণ। এ প্রসেঙ্গ বিসিক শিল্পনগরীর সহকারী প্রকৌশলী সোহেলী সাদেক জাগো নিউজকে বলেন, ‘আগামী এক মাসের মধ্যে গ্যাস সমস্যার সমাধান হবে। এ বিষয়ে কাজ চলছে।’
তিনি বলেন, ‘কারখানার উৎপাদন শুরু করতে না পারলে গ্যাস সংযোগ পাওয়া কঠিন। যারা শুরু করেছেন তারা পেয়ে গেছেন।’ তার কথার সত্যতা মিললো এপেক্স ট্যানারিতে গিয়ে। এ ট্যানারির দায়িত্বে থাকা সিকিউরিটি ইনচার্জ আবদুর রহমান বলেন, ‘আমরা সংযোগ পেয়েছি। এখন পাইপ লাইন স্থাপনের কাজ চলছে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দূষণমুক্ত চামড়া শিল্পনগরী গড়তে শিল্প মন্ত্রণালয় সাভারের হেমায়েতপুরে প্রকল্প নিয়েছে ২০০৩ সালে। ১৩ বছর ধরে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প (বিসিক) এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। সেখানে জমি বরাদ্দ পেয়েছে রাজধানীর হাজারীবাগের ১৫৪টি কারখানা।
এদিকে, এই শিল্পের উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, সাভার ও হাজারীবাগের দুই কারখানায় পণ্য পরিবহন, মালামাল স্থানান্তর এবং আদালত নির্ধারিত জরিমানাসহ আনুষঙ্গিক খরচ বেড়ে যাওয়ায় মুনাফা কমে গেছে।
চামড়া ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সাধারণ সম্পাদক সাফায়েত উল্লাহ এ প্রসঙ্গে জানান, ১ ফেব্রুয়ারি থেকে হাজারীবাগে চামড়া প্রবেশ বন্ধ আছে। এখন সব চামড়া যাচ্ছে সাভারে। যাদের এখনও কারখানা চালু হয়নি তারা অন্যের গুদামে বা ড্রামে চামড়া রাখছেন।
তবে সরকার প্রকল্পের কাজ শেষ না করে ব্যবসায়ীদের দু’দিকে টানাটানি করছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। জাগো নিউজকে সাফায়েত উল্লাহ বলেন, ‘ট্যানারি মালিকদের যে প্লট বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে, তার কাগজপত্র (দলিল) এখনও হস্তান্তর করা হয়নি। ফলে ব্যবসায়ীরা ব্যাংকের সঙ্গে কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি। এ অবস্থায় কারখানার একটা অংশ ওখানে, আরেকটা এখানে। আমরা চাচ্ছি টানাটানির মধ্যে না থেকে হেমায়েতপুরে চলে যেতে। এজন্য যেসব সমস্যা আছে তা দ্রুত সমাধান করা প্রয়োজন। যাতে আমরা উৎপাদনে যেতে পারি।
এমএ/এমএআর/বিএ