গতি ফিরছে আকাশ পথে পণ্য পরিবহনে


প্রকাশিত: ০৬:১৮ এএম, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

আকাশ পথে পণ্য আমদানি ও রফতানিতে দীর্ঘ দিনের অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। নানা উদ্যোগ ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ফলে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আকাশ পথে পণ্য পরিবহনের সেই চিরচেনা রূপ পাল্টে যেতে শুরু করেছে। কমতে শুরু করেছে দুর্নীতি ও অনিয়ম।

শাহজালালে কার্গো আমদানি ও রফতানি শাখায় পণ্য খালাসকারি রফতানিকারকদের সেবাদানে মন্ত্রণালয়, সিভিল এভিয়েশন ও বিমানের যৌথ উদ্যোগে নেয়া কর্মকাণ্ডে নতুন গতির সঞ্চার করেছে। ফলে বৃদ্ধি পেয়েছে সেখানকার সেবার মান। একই সাথে বৃদ্ধি পেয়েছে সেখানকার হ্যান্ডিলিং ও নিরাপত্তার মানও।

সম্প্রতি শাহজালালে কার্গো আমদানি টার্মিনাল ও কার্গো এক্সপোর্ট ভিলেজ সরেজমিন ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

সরেজমিন ঘুরে এবং সংশ্লিষ্ঠদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে ৪শ থেকে সাড়ে ৫শ মেট্রিক টন আমদানিকৃত কার্গো ডেলিভারি দেওয়া হচ্ছে টার্মিনাল থেকে। একই সঙ্গে কার্গো ভিলেজ থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন দেশে পাঠানো হচ্ছে প্রায় ৬শ মেট্রিক টন কার্গো।

লন্ডনসহ কযেকটি গন্তব্যে কার্গো বন্ধ থাকার পরও শাহজালালে কার্গো আমদানি টার্মিনাল ও কার্গো এক্সপোর্ট ভিলেজ এলাকা মালামাল উঠানামায় সরগরম। গত ২-৩ মাসে এখানে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। লাগানো হয়েছে সেমি অটোমেশন ইকুইপমেন্টস। এর ফলে মালামাল সুষ্ঠুভাবে হ্যান্ডিলিং, সংরক্ষণ ও ডেলিভারি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সেখানে কর্মরতরা।

কিছুদিন আগেও বিল ইস্যু করা হতো ম্যানুয়ালি। এখন সেখানে বসানো হয়েছে ডিজিটাল অপারেশন সিস্টেম ‘কার্গো স্পট’ নামে ব্যতিক্রম সফটওয়্যার। যা দিয়ে ইউট্রায়াল এয়ারওয়ে বিল ইস্যু করা হচ্ছে। এছাড়া সকল প্রকার বিল আলাদা আলাদা সফটওয়্যারের মাধ্যমে করা হচ্ছে। এর ফলে দুর্নীতি ও অনিয়ম অনেকাংশে কমে গেছে বলে দাবি করেছেন বিমানের মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস শাথার ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোহাম্মদ আলী আহসান।

বিমানের কার্গো শাথার সাম্প্রতিক উন্নয়নকে অভূতপূর্ব আখ্যায়িত করে জনসংযোগ শাখার মহাব্যবস্থাপক শাকিল মেরাজ বলেন, অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় বিমানের কার্গো শাখা এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ ও যুগোপযোগী। সময় ও চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে কার্গো শাখা এখন ডিজিটালাইজড। মানোন্নয়নে ইতোমধ্যে ৪টি ডাবল ভিউ এক্সরে মেশিন, ১টি বিস্ফোরক নির্ণয় যন্ত্র বসানো হয়েছে। বসানো হয়েছে ১৩০টি সিসি টিভি, ইলেকট্রনিক্স স্কেলিং মেশিন, কার্গো আর্চওয়ে, সিকিউরিটি স্কেনার এবং বৃটিশ নিরাপত্তা পরামর্শক প্রতিষ্ঠান রেড লাইনের গাইড লাইন মোতাবেক কার্গোর নিরাপত্তা ম্যানুয়েল আপডেট করা হয়েছে। বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে অ্যাক্সেস কন্ট্রোল সিস্টেম চালু করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সুষ্টুভাবে কার্যক্রম পরিচালনার জন্যে ৩ শতাধিক জনবল নিযোগ দেওয়া হয়েছে।

সবচেয়ে বড় সফলতার কথা বলতে গিয়ে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এম মোসাদ্দিক আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, কার্গো পরিবহনে ইতিহাদ ও এমিরাটসের সঙ্গে বিমানের কোড শেয়ার সৃষ্টি চুক্তি হয়েছে। এই চুক্তির ফলে এখন থেকে বিমান ইউরোপ আমেরিকাসহ বিশ্বের নানা গন্তব্যে সহজ ও দ্রুততার সঙ্গে কার্গো পাঠাতে সক্ষম হবে। সার্বিকভাবে কার্গোর নিরাপত্তা ও অপারেশনাল সেফটির মানোন্নয়নের জন্যে বিমান কার্গো এভিয়েশন সেক্টরের শীর্ষ সংস্থা আইয়াটা অপারেশনাল অ্যান্ড সেফটি অডিট (আইওএসএ) সনদ পেয়েছে।

উল্লেখ্য, গত অর্থবছরে (২০১৫-২০১৬) বিমান ৪৯ হাজার ৯শ ৯১ টন কার্গো পরিবহন করে ৩১৫ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে।

আরএম/এআরএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।