খালেদা জিয়ার দুই পরোয়ানার হদিস নেই


প্রকাশিত: ০৪:৪৪ পিএম, ০৪ জানুয়ারি ২০১৭
ছবিটি ফাইল

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন পৃথক দুটি আদালত। পরে তা তামিল করার জন্য গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে। তবে গুলশান থানার পুলিশ এখনও হাতে পায়নি খালেদা জিয়ার গ্রেফতারি পরোয়ানা। এমনকি গ্রেফতারি পরোয়ারা কোথায় রয়েছে তাও জানা নেই সংশ্লিষ্টদের।

মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিরূপ বক্তব্য দেয়ায় মানহানির মামলায় গত বছরের ২৩ আগস্ট নড়াইলে এবং মিথ্যা তথ্য দিয়ে জন্মদিন পালন করার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ১৭ নভেম্বর ঢাকার একটি আদালতে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর খালেদা জিয়ার গুলশানের ঠিকানায় তা তামিল করার জন্য পরোয়ানা পাঠিয়ে দেয়া হয়। এখন তা তামিল করার কাজ পুলিশের। ফলে এ বিষয়ে আদালতের কিছু জানা নেই।

তবে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম জাগো নিউজ জানান, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কোন গ্রেফতারি পরোয়ানা আমাদের থানায় আসেনি। পরোয়ানা আসলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেব। পরোয়ানাগুলো কোথায় আছে তা আমার জানা নেই।

ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু জাগো নিউজকে বলেন, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার দায়িত্ব আদালতের। আর তা তামিল করার দায়িত্ব পুলিশের। তবে গুলশান থানা পুলিশ কেন এখনও তা হাতে পাননি বা তামিল করেননি তা আমার জানা নেই।

খালেদার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি
মিথ্যা তথ্য দিয়ে ভুয়া জন্মদিন পালন করার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ১৭ নভেম্বর গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকা মহানগর হাকিম মাজহারুল ইসলাম।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার একাধিক জন্মদিন নিয়ে ১৯৯৭ সালে দুটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, খালেদা জিয়ার ম্যাট্রিক (এসএসসি) পরীক্ষার মার্কশিট অনুযায়ী তার জন্ম তারিখ ১৯৪৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর। ১৯৯১ সালে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে একটি দৈনিকে তার জীবনী নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জন্মদিন ১৯৪৫ সালের ১৯ আগস্ট। এছাড়া বিয়ের কাবিননামায় তার জন্মদিন ১৯৪৪ সালের ৪ আগস্ট। সর্বশেষ ২০০১ সালে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট অনুযায়ী তার জন্মদিন ১৯৪৬ সালের ৫ আগস্ট।

বিভিন্ন মাধ্যমে তার পৃথক পাঁচটি জন্মদিন পাওয়া গেলেও কোথাও ১৫ আগস্ট জন্ম তারিখ পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় তিনি পাঁচটি জন্মদিনের একটিও পালন না করে ১৯৯৬ সাল থেকে ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী (১৫ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবসে জন্মদিন পালন করে আসছেন।

এ ঘটনায় ৩০ আগস্ট ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী জহিরুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে খালেদাকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারি করেন।

নড়াইলে খালেদার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
২০১৬ সালের ২৩ আগস্ট স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিরূপ বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে মানহানির মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নড়াইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাহিদুল আজাদ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২১ ডিসেম্বর ঢাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে ত্রিশ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছেন বলা হয়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে কতজন শহীদ হয়েছেন, তা নিয়ে বিতর্ক আছে। এছাড়া তিনি একই সমাবেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম উল্লেখ না করে তাকে ইঙ্গিত করে বলেন, তিনি স্বাধীনতা চাননি। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন।

খালেদার জিয়ার ওই বক্তব্য বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচার হয়। পরে ২৪ ডিসেম্বর নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার চাপাইল গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান মো. রায়হান ফারুকী ইমাম বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।

জেএ/আরএস/ওআর/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।