জনবল সংকটে ট্যুরিস্ট পুলিশ


প্রকাশিত: ০৩:০৮ পিএম, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৬

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারসহ ৭ শতাধিক পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে বাংলাদেশে। পর্যটন কর্পোরেশনের হিসেব মতে, প্রতি বছর এসব পর্যটন এলাকায় ৬০ লাখ দেশি-বিদেশি পর্যটক ভ্রমণ করেন। কিন্তু এতো সংখ্যক পর্যটক ও পর্যটন কেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ সদস্য রয়েছেন মাত্র ৫৮১ জন। অন্যদিকে আরও ৬৮৯ জন নতুন জনবল নিয়োগের অনুমোদন মিললেও তা এখনও চূড়ান্তভাবে নিয়োগ দেয়া হয়নি।

ট্যুরিস্ট পুলিশ সদর সূত্রে জানা গেছে, দেশের সম্ভাবনাময় খাতের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন শিল্প। এ খাতকে এগিয়ে নিতে ২০১৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর চালু করা হয় ট্যুরিস্ট পুলিশ ইউনিট। প্রতিষ্ঠালগ্নে ৬৯৯ পুলিশ সদস্য ও কর্মকর্তা নিয়ে যাত্রা শুরু করে এ ইউনিটটি। এরপর ২০১৫ সাল থেকে শুরু হয় অপারেশনাল কাজ।

সূত্রে আরও জানা গেছে, জনবল নিয়োগে পুলিশ সদর দফতরের অনুমোদনের পর অর্থ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়েরও অনুমোদন পাওয়া গেছে। তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আটকে রয়েছে চাহিদাপত্রটি। এ জন্য এখনো নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। প্রতিষ্ঠার ২ বছর পরেও ৬৯৯ জন জনবল নিয়েই চলতে হচ্ছে ট্যুরিস্ট পুলিশকে।

Torist

চলতি বছরকে (২০১৬) পূর্বেই পর্যটন বর্ষ ঘোষণা করা হয়েছিল। প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন, ধর্মীয় স্থান, সমুদ্র সৈকত, পাহাড়-দ্বীপ, ঐতিহাসিক স্থান, বন-জলাবন মতো ৭ শতাধিক পর্যটন কেন্দ্র পর্যটনকদের জন্য আকর্ষনীয় ও নিরাপদ করার বিষয়টি অধিক গুরুত্ব পায়।

দেশি-বিদেশি পর্যটকদের সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ করে ২০টি পর্যটন স্পট। এর মধ্যে শুধু কক্সবাজারেই প্রতি বছর যাতায়াত করেন প্রায় ১৫ লাখ পর্যটক। এতো সংখ্যক পর্যটকের জন্য সেখানে ট্যুরিস্ট পুলিশের জনবল রয়েছে মাত্র ৪০ জন। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কলাতলী, সুগন্ধা, সি-বিচ, লাবণী, ইনানী বিচসহ সকল পয়েন্টে পর্যটকদের আনাগোনা থাকলেও জনবল সংকটে নিরাপত্তার বিষয়টি রয়ে গেছে উদ্বেগের পর্যায়েই। একই দশা দেশের গুরুত্বপূর্ণ ও জনপ্রিয় সকল ট্যুরিস্ট স্পটগুলোতেও।

Torist

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশ ও উন্নয়নের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন। এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানটির মহাব্যবস্থাপক (বিপণন) মো. মাহবুবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমণে আসার পেছনে প্রধান দাবিই থাকে নিরাপত্তার বিষয়। বিশেষ করে যেসব ট্যুরিস্ট স্পটে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের যাতায়াত বেশি সেখানে নিরাপত্তার বিষয়টি শতভাগ নিশ্চিত করা জরুরি।

ট্যুরিস্ট পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) মো. নজমুল হোসেন বলেন, দুই বছর আগে ট্যুরিস্ট পুলিশ পথচলা শুরু করলেও এর অপারেশনাল কাজ শুরু হয় ২০১৫ সালে। তবে খুব অল্প সময়ের মধ্যে পর্যটন স্পট ও পর্যটকদের নিরাপত্তার আশ্রয়স্থল হিসেবে খ্যাতি পেয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। কিন্তু মানুষের আগ্রহ ও চাহিদা অনুযায়ী সকল টুরিস্ট স্পটের নিরাপত্তা দেয়ার ক্ষেত্রে আমাদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

Torist
 
ট্যুরিস্ট পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি সোহরাব হোসেন জাগো নিউজকে জানান, পর্যটন শিল্পে ট্যুরিস্ট পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। পর্যটন সম্পদ ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা, প্রত্ন সম্পদ চুরি রোধ, পর্যটন আকর্ষণ এলাকায় যৌন হয়রানি বন্ধ, বখাটে ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিহত, দেশি-বিদেশি পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, পর্যটকদের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা, পর্যটন অঞ্চলের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদসহ নানা কাজে জড়িত ট্যুরিস্ট পুলিশ।

তিনি আরও বলেন, এসব এলাকায় যানবাহনের পাশাপাশি জনবলের অভাব প্রকট। জনবল পেলে যানবাহনও মিলবে। তখন আরও ট্যুরিস্ট পুলিশের এগিয়ে যাওয়ার পথ প্রশস্ত হবে।

জেইউ/আরএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।