ভবের রাজ্যে অসহায় হাতিয়ার শিক্ষা ব্যবস্থা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৩৯ এএম, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৬

দেশের দক্ষিণ উপকূলীয় অঞ্চলের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার পৌনে এক লাখ শিশুর জন্য রয়েছে ৪০২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ উপজেলাতেই রয়েছে জেলার সর্বাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের জন্য সরকারের পর্যাপ্ত বরাদ্দ থেকে প্রতিনিয়ত চলছে কর্তা ব্যক্তিদের তহবিল তছরুপ। খাতা-কলমে নাম সর্বস্ব বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেও তারা হাতিয়ে নিচ্ছে লাখো টাকা। শিশুদের বিনা পয়সার বই বিক্রি থেকে শুরু করে উপবৃত্তির টাকা পর্যন্ত আত্মসাৎ হচ্ছে। সব মিলিয়ে দুর্নীতির মহোৎসব চলছে এ উপজেলায়। ১০ দিন ধরে পুরো উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষায় দুর্নীতির অনুসন্ধানে চিরুনি অভিযান চালিয়েছেন আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক শাহেদ শফিক। হাতিয়া থেকে ফিরে এ নিয়ে তার ৮ পর্বের ধারাবাহিক প্রতিবেদনের আজ থাকছে পঞ্চম পর্ব

halchalপুরো নোয়াখালী জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়াতে। জনবহুল এ দ্বীপের অনগ্রসরদের জন্য ৪০২টি সরকারি ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকার পরেও এই দ্বীপের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১১শ শিক্ষক ও ৮২ হাজার শিক্ষার্থী জিম্মি শিক্ষা অফিসের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ভবরঞ্জন দাসের হাতে।

টাকার বিনিময়ে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ, বদলি বাণিজ্য, প্রকল্পভিত্তিক স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ, স্কুলের জন্য বরাদ্দকৃত টাকার ভুয়া বিল-ভাউচার দেখিয়ে আত্মসাৎ, নোট-গাইড বিক্রিসহ নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠেছে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। অনুসন্ধানে হাতিয়া শিক্ষা অফিসের ভয়াবহ এ চিত্র পাওয়া গেছে।

হাতিয়ার চরাঞ্চলের ঠিকানায় গড়ে ওঠা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণের নামে লাখো টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। বিভিন্ন সময় ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্বে থেকে রাতারাতি বিভিন্ন স্কুলের ফাইল তৈরি করে সেসব স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে বাণিজ্য করছেন এই কর্মকর্তা।  

এই কর্মকর্তার হয়রানির বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করেছেন উপজেলার জনতা বাজার বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুক্ত বেগম ও বাংলা বাজার বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল হাশেম। পৃথক দুটি অভিযোগপত্রে তারা জানান, ২০০৩ সাল থেকে তারা প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসলেও ভবরঞ্জন দাস সরেজমিন পরিদর্শন না করে তার পরিবর্তে উপজেলা যাচাই-বাছাই কমিটির সভায় ওই দুটি স্কুলে যথাক্রমে সেলিম উদ্দিন ও জসিম উদ্দিন নামে বিতর্কিত দুই ব্যক্তিকে প্রধান শিক্ষক করে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। তাদের অভিযোগ টাকার বিনিময়ে ভবরঞ্জন এই অনিয়ম করেছেন।

অভিযোগ উঠেছে, হাতিয়ার অর্ধশতাধিক বেসরকারি স্কুল জাতীয়করণ করার প্রক্রিয়ায় পূর্বে শিক্ষা অফিসারদের স্বাক্ষর জাল করে শিক্ষকদের নতুন নাম দিয়ে ফাইল তৈরি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে নতুন শিক্ষকদের কাছ থেকে ৩ থেকে ৫ লাখ টাকা করে আদায় করা হয়েছে। এসব বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে যারা বিনামূল্যে ক্লাস করে এসেছেন তাদের অধিকাংশকে বাদ দিয়ে টাকার বিনিময়ে নিজের ইচ্ছেমতো শিক্ষকের নাম দিয়ে ফাইল তৈরি করা হয়েছে। বঞ্চিত শিক্ষকরা জেলা শিক্ষা অফিসসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দিয়েছেন। এ কাজে ভবরঞ্জনকে সহযোগিতা করেছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক। এই কর্মকর্তার সহায়তায় এখন ওই শিক্ষকেরা বনে গেছেন কোটি টাকার মালিক।

Incert

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের চরাঞ্চলের স্কুলগুলো জাতীয়করণের কথা বলে লাখো টাকা নেয়া হয়েছে। প্রতিজন শিক্ষক থেকে ৩ লাখ ও প্রধান শিক্ষক থেকে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা করে নেয়া হয়েছে।
 
অপর এক প্রধান শিক্ষক জাগো নিউজকে বলেন, যখন বিদ্যালয়গুলোর ফাইল তৈরি করা হয় তখন এই শিক্ষকরা তাকে সঙ্গে নিয়ে পাশের বাজারে বসিয়ে রেখে আমাদের দেখিয়ে টাকা নিতেন। কিন্তু আমরা যারা গরীব-নিরীহ তারা তো তাদের চাহিদা মতো টাকা দিতে পারতাম না। আমরা যারা টাকা দেইনি তাদের সে বাদ দিয়ে সেখানে অন্যদের নাম দিয়ে ৩ থেকে ৫ লাখ টাকা করে নিয়েছেন। এখন কিছুই করতে না পেরে তিনি বদলি হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

সরকারি স্কুলগুলোতে নৈশপ্রহরী কাম দফতরি নিয়োগেও রয়েছে এই কর্মকর্তার বাণিজ্য। ২০১৩ সালে ৩৬ জন পিয়ন নিয়োগ দেয়া হয়। সে সময় টাকা না পেয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা এই কর্মকর্তা দীর্ঘদিন পর্যন্ত নিয়োগ ফাইলে স্বাক্ষর করেননি বলে অভিযোগ রয়েছে। এরপর থেকে সবকটি নিয়োগে বিধি অমান্য করে দুই থেকে তিন লাখ টাকা নিয়ে নিয়োগ দিয়েছেন। এক্ষেত্রে প্রার্থীর বাড়ি বিদ্যালয় এরিয়ার মধ্যে থাকা বাধ্যতামূলক হলেও তিনি তা মানেননি।

২০০৮ সালের পর থেকে বিভিন্ন মেয়াদে এই সহকারী শিক্ষক হাতিয়া উপজেলায় সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। দায়িত্ব নেয়ার পর উপজেলা শিক্ষা অফিসার জগদীশ চন্দ্র দেবনাথ, ফরহাদ আলী, মো. জালাল উদ্দিন, টিপু সুলতানসহ অন্যান্য শিক্ষা অফিসারদের লাঞ্চিত করেন তিনি। পরে তারা বাধ্য হয়েই বদলি হয়ে চলে যান। শিক্ষা অফিসাররা বদলি হয়ে গেছে, তিনি ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্ব নিয়ে বসে থাকেন। সম্প্রতি এ উপজেলায় নতুন করে শিক্ষা অফিসার হিসেবে যোগদান করলে তিনি তাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে গড়িমসি করেন। এই শিক্ষা কর্মকর্তার অনিয়মের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমেও খবর প্রকাশিত হয়েছে।

উপজেলার প্রাথমিকের শিক্ষকরা জানান, প্রতিবছর তাদের স্কুলের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য ৪০ হাজার টাকা, বিশেষ বরাদ্দ ১০ হাজার টাকা ও প্রাক-প্রাথমিকের জন্য ৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু জাগো নিউজের অনুসন্ধানে উপজেলার অধিকাংশ স্কুল ঘরে এর কোনো চিহ্ন চোখে পড়েনি।

Incert

উপজেলার চরহেয়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি লুৎফুল্লাহিল মাজিদ নিশান জাগো নিউজকে বলেন, প্রাথমিক স্কুলের জন্য প্রতি বছর প্রায় ৮০ হাজারের মতো টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু এ টাকার দুই শতাংশও স্কুলের কাজে আসে না।

তিনি বলেন, একদিন আমার স্কুলের টাকা উত্তোলনের জন্য ব্যাংকে যাই। অথচ টাকা আমার উত্তোলনের কথা নয়। এটা ব্যাংক কর্মকর্তারই সরাসরি বিতরণ করার কথা। উপবৃত্তিধারীরা ব্যাংকে গিয়ে তার কার্ড দেখিয়ে স্বাক্ষর করে টাকা নিয়ে যাবেন। এটাই হচ্ছে নিয়ম। কিন্তু তারা তা করছেন না। স্কুল সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককেই টাকা তুলতে হচ্ছে। সেখানে গিয়ে আশ্চর্য হলাম ব্যাংক কর্মকর্তারা ২০ শতাংশ টাকা কেটে রেখে দিচ্ছেন। তারা বলেন, আপনার খান আমরা রাখলে সমস্যা কী? এটা তো সবাই দিচ্ছে। বাকি টাকাগুলো উত্তোলনের পর শিক্ষা কর্মকর্তা, স্কুলের সভাপতি, প্রধান শিক্ষক সবাইকে দিতে হয়।

শুধু তাই নয়, স্কুলের জন্য বরাদ্দ দেয়া মোবাইল, সিম, অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র, খেলাধুলার সামগ্রী না দিয়ে সে টাকাও আত্মসাৎ করেছেন ভবরঞ্জন। উপজেলার কোনো বিদ্যালয়েই এসব মালামাল চোখে পড়েনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রধান শিক্ষক বলেন, স্কুলের জন্য যে টাকা বরাদ্দ আসে তার থেকে মোটা অংকের টাকা ভবরঞ্জন দাসকে দিয়ে দিতে হয়। না হয় সে বিভিন্ন সময় হয়রানি করে। দেখেন না স্কুলের ভবনটি ফাটা। টেবিল-চেয়ার নেই। কী দিয়ে কিনবো? সভাপতিও এর থেকে ভাগ নিয়ে যায়।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, হাতিয়ার সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের নামে বরাদ্দ দেয়া মোবাইল নম্বরগুলো বন্ধ রয়েছে। প্রধান শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, সিমের সঙ্গে মোবাইল ফোন বরাদ্দ দেয়া হলেও তাদের মোবাইল দেয়া হয়নি। যে কারণে সব নম্বর বন্ধ রয়েছে।  

ডেপুটেশন-বদলিতেও রয়েছে এই কর্মকর্তার সিন্ডিকেট। এক্ষেত্রে যেসব স্কুলে অতিরিক্ত শিক্ষকের পদ নেই সেসব স্কুলে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী দেখিয়ে পদ সৃষ্টি করে ডেপুটেশনে বদলি করা হচ্ছে। অন্যদিকে যেসব স্কুল অপেক্ষাকৃত দুর্গম স্থানে সেসব স্কুলে পদ থাকলেও তাতে শিক্ষক দেয়া হচ্ছে না।

Voboranjon
ছবি : সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ভবরঞ্জন দাস

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, উপজেলার হাতিয়া পৌরসভার চরকৈলাশ তাহেরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সব মিলিয়ে ১০০ শিক্ষার্থীও নেই। কিন্তু এ বিদ্যালয়টিতে ১২ জন শিক্ষক রয়েছেন। নিয়ম অনুযায়ী প্রতি ৪০ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে একজন শিক্ষক থাকার কথা।

অন্যদিকে মধ্যহরণী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। সে মোতাবেক বিদ্যালয়টিতে ৮ জন শিক্ষকের পদ রয়েছে। কিন্তু এখানে কর্মরত রয়েছেন ৪ জন। এর মধ্যে একজন শিক্ষক আগামী মাসে বদলি হয়ে যাচ্ছেন।

এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমেনা বেগম বলেন, খুব কষ্ট করেই ক্লাস নিচ্ছি। আমার বাড়ি হাতিয়া পৌরসভায়। সেখান থেকে ১৫ মাইল দূরে এসে ক্লাস নিচ্ছি। অথচ পৌরসভার স্কুলগুলোতে ঠিক মতো শিক্ষার্থী নেই। সেখানে অতিরিক্ত শিক্ষক দেয়া হচ্ছে। যারা টাকা দিতে পারে তারাই বদলি হয়। যেসব বিদ্যালয়ে ২০ জন শিক্ষার্থীও নেই সেসব বিদ্যালয়ে ১০-১২ জন শিক্ষক থাকেন। আর যে বিদ্যালয়ে ৫০০ শিক্ষার্থী রয়েছে সে বিদ্যালয়ে শিক্ষক নেই ২ জনও। উপজেলা শিক্ষা অফিসাররা টাকা খেয়ে এসব দুর্নীতি করেন।

চিকিৎসার নামে বেতনসহ শিক্ষকদের ছুটি গিয়ে মোটা অংকের টাকা আদায় করেন এই কর্মকর্তা। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, সদ্য জাতীয়করণ হওয়া বিদ্যাগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সিরাজ উদ্দিন ২০১৩ সালের পহেলা জানুয়ারি থেকে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পঙ্গু অবস্থায় রয়েছেন। কিন্তু তার স্বাক্ষর জাল করে বেতনের টাকা আত্মসাৎ করেন ভবরঞ্জন দাস। মাসে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে মিলতি বালা দাসকে দীর্ঘ ৯ মাস ছুটি দিয়েছেন ভারতে যাওয়ার জন্য। কিন্তু আবার তাকে ক্লাসে হাজির দেখিয়ে বেতন উঠিয়ে দেন।

এছাড়া বেতনের অর্ধেক ঘুষ হিসেবে নিয়ে সহকারী শিক্ষক বিলাশ কৃষ্ণ দাস, ঝুমুর রানী দাস এবং প্রধান শিক্ষক নিউটন দাসকে দীর্ঘ ছুটি দিয়েছেন।

অপরদিকে জ্যেষ্ঠতার নীতিমালা লঙ্ঘন করে চলতি শিক্ষাবর্ষে ২১ জন শিক্ষককে ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন (ডিপিএড) প্রশিক্ষণের জন্য ডেপুটেশন প্রদান করা হয়েছে। গত ১৫ নভেম্বর হাতিয়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জ্যেষ্ঠদের বাদ দিয়ে অধিকাংশ সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের ডেপুটেশন প্রদান করেন। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করেও এ বছর ডিপিএড প্রশিক্ষণে যাওয়ার অনুমতি পাননি এমন জ্যেষ্ঠ চার শিক্ষক প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন।

প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের লাঞ্চিত করে বদলি করার পর বিভিন্ন সময়ে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্বে থেকে তিনি দ্বীপের বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলের অর্ধশতাধিক বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মূল শিক্ষকদের বাদ দিয়ে নতুন করে নিয়োগ দিয়েছেন। তবে এসব ফাইল শিক্ষা অফিসে সংরক্ষিত নেই।

Incert

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নোট-গাইড ও সাজেশন নিষিদ্ধ হলেও এই কর্মকর্তা বিভিন্ন সময়ে একটি কোম্পানিটির নোট-গাইড ও সাজেশন বাধ্যতামূলক করে দেন বলে অভিযোগ একাধিক শিক্ষকের। ওই কোম্পানির সাজেশন বিক্রি না করলে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কারণ দর্শানোর নোটিশ ও বদলিসহ হয়রানি করারও অভিযোগ তাদের।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সব অভিযোগ অস্বীকার করে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ভবরঞ্জন দাস বলেন, `আসলে হাতিয়া এমন একটি জায়গা যেখানে যে কেউ তাদের স্বার্থের জন্য আমাদের বিরুদ্ধে অনেক কথা বলেন। এর সঙ্গে আমি জড়িত না। বরং আমি বিভিন্ন সময়ে অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি।’

এ প্রসঙ্গে জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির জাগো নিউজকে বলেন, চরের স্কুলগুলোর অনিয়ম ভবরঞ্জনের সময় হয়েছে। তিনিই এসব ফাইল চূড়ান্ত করেছেন। এখন কিছু অভিযোগের তদন্ত করছি। সত্যতা পাওয়া যাচ্ছে।

• আগামী পর্বে থাকছে- দফতরি নিয়োগ : জানেন না স্কুল সভাপতি

এমএসএস/এনএফ/এআরএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।