পুনর্বাসন চায় পদ্মা পাড়ের স্পিডবোট চালকরা


প্রকাশিত: ১০:২৯ এএম, ০৫ ডিসেম্বর ২০১৬

ডিঙি সম নৌযান, বিমানসম গতি। এমন গতিতে তাল মিলিয়ে চলে তাদের জীবন। জীবন চলে পদ্মার ঢেউয়ের তালে। অতটুকু ডিঙিতেই সংসারের ভার -বলছি পদ্মা পাড়ে স্পিডবোটের চালকদের কথা।

শীতের কুয়াশা সবে কাটতে শুরু করেছে, হেমন্তের রোদ পদ্মার জলে আছড়ে পড়ছে, আর তাতে যেন মরীচিকার মত চিকচিক করছে। আড়মোরা ভেঙে সকালেই পদ্মা পাড়ে এসেছে ওরা। রাজধানী থেকে ছেড়ে আসা বাসের যাত্রীরা ভিড় করছেন স্পিডবোট ঘাটে। চালকদের কেউ হাঁক ছাড়ছেন কেউবা ঘাটে বোট ভিড়াচ্ছেন আবার কেউ অলস সময় কাটাচ্ছেন। এদেরই একজন জুলহাস, বয়স ৩০ ছুঁই ছুঁই।

জাগো নিউজ টিমকে তিনি জানান, প্রায় ৮ বছর ধরে এখানে কাজ করছেন। প্রথম দিকে সহযোগী হিসেবে কাজ করলেও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এখন স্পিডবোটের চালক হয়েছেন।

শুধু জুলহাস নন, এই স্পিডবোটের সঙ্গে জড়িত প্রায় ৩০০ চালক বা সহকারী। আর তাদের পরিবারের সদস্য সংখ্যা প্রায় ৭০০ জন। এদের সবারই জীবিকার উৎস এ স্পিডবোট। মাওয়া শিমুলিয়া ঘাট থেকে কাওরাকান্দি ঘাটে লঞ্চে যেখানে সময় লাগে প্রায় এক ঘণ্টা সেখানে স্পিটবোটে সময় লাগে মাত্র ২০ মিনিট। তবে তার বিপরীতে গুণতে হয় জনপ্রতি ১৫০ টাকা।

Spreedboard

জুলহাস বলেন, পদ্মা সেতু হয়ে গেলে আর কেউ স্পিডবোটে নদী পাড় হবে না। তখন আমাদের জীবিকা নির্বাহ করতে হবে অন্যভাবে। তবে কীভাবে হবে তা অনিশ্চিত। তবুও মনে প্রাণে চাই খুব তাড়াতাড়ি পদ্মা সেতুর কাজ সম্পন্ন হোক। সেই সঙ্গে যেন সরকারও আমাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে।

ঘাটপাড়ে দায়িত্বরত স্পিডবোটের ব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম জানান, মাওয়া-শিমুলিয়া ঘাটে প্রায় ১০০-রও বেশি স্পিডবোট আছে। সাড়ে তিন লাখ টাকায় কেনা ১২ সিটের ইয়ামাহা ওয়াই-৪০ স্পিডবোটে যাত্রী ধারণক্ষমতা ১২ জন। আর সাড়ে ৭ লাখ টাকায় কেনা স্পিডবোটের যাত্রী ধারণক্ষমতা ২০ জন।

তিনি আরও বলেন, অনেকেই জায়গা জমি বিক্রি করে স্পিডবোট কিনেছেন। কিন্তু পদ্মা সেতু হলে আমরা কীভাবে জীবিকা নির্বাহ করবো, সেটাই আমাদের চিন্তার বিষয়। এ জন্য প্রায় ৭০০ পরিবারের কথা চিন্তা করে সরকার যেন আমাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে।

২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে পদ্মা সেতুর কাজ শেষ করার লক্ষ্যে কাজ এগিয়ে চলছে। সেতু প্রকল্পের অগ্রগতির মধ্যে মূল সেতু নির্মাণ ৩১ শতাংশ, নদী শাসন কাজ ২৬, জাজিরা সংযোগ সড়ক নির্মাণ ৮২, মাওয়া সংযোগ সড়ক নির্মাণ ১০০,
সার্ভিস এরিয়া-২ নির্মাণ ১০০ শতাংশ মিলিয়ে সার্বিক ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৩৭ শতাংশ।

সেতু বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত মোট ১১ হাজার ৬১৬ কোটি ৭৯ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। তিনবার সংশোধন করে বর্তমানে পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণে (দ্বিতীয় সংশোধিত) ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা।

এএস/আরএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।