প্রযুক্তিনির্ভর হচ্ছেন মধ্যবয়সীরা
আব্দুস সালাম। বয়স ৫০-এর কাছাকাছি। চটপটে। ধারণা রাখেন কোন মোবাইল কোম্পানি কখন কি অফার দিচ্ছে সে বিষয়েও। শুধু তাই নয়, কোন মোবাইল কোম্পানি সস্তায় মেগাবাইট বিক্রি করছে সে সম্পর্কেও ব্যাপক জানাশোনা তার। খোঁজ রাখেন বিভিন্ন অনলাইনের।
তবে এই অনলাইনগুলো চালাতে অর্থ আসছে কোত্থেকে বা কীভাবে তারা আয় করছে এর উত্তর খুঁজছেন দীর্ঘদিন ধরে। কখনো অভিজ্ঞ কাউকে পেলে নিজের সময় থাকেনা কথা বলার। কখনো সময় নিয়ে অভিজ্ঞ কাউকে খুঁজে ফিরলেও পান না কাউকেই।
আব্দুস সালাম পেশায় ওষুধ ব্যবসায়ী। মিটফোর্ড থেকে পাইকারি ওষুধ কিনে বিক্রি করেন বিভিন্ন ফার্মেসিতে। থাকেন রাজধানীর রামপুরা এলাকায়। চার কন্যাসন্তানের এই জনকের বংশের বেশির ভাগ লোকই থাকেন ভারতে।
১৯৭৭ সালে কলকাতা থেকে এসএসসি পাস করেন তিনি। এরপর ১৯৭৯ সালে এইচএসসি। কিছুদিন কলকাতায় থাকার পর চলে আসেন বাংলাদেশে। চাকরি নেন একটি বেসরকারি ব্যাংকে।
১৯৮৯ সাল পর্যন্ত ব্যাংকে চাকরি করেন তিনি। এরপর চলে যান কাতারে। সেখানে ৬ বছর থাকার পর পুনরায় ফিরে আসেন বাংলাদেশে। এখন তার মূল ব্যবসা ওষুধকেন্দ্রিক।
মঙ্গলবার বেলা ২টা। মহাখালী থেকে বৈশাখী পরিবহনের গাড়িতে তিনি উঠলেন বাড্ডা লিঙ্ক রোড পর্যন্ত আসার জন্য। সিট মিলে গেল জাগো নিউজের এই প্রতিবেদকের পাশেই। এ সময় এই প্রতিবেদক মোবাইলে বিভিন্ন অনলাইনের নিউজ দেখছিলেন এবং মাঝে মধ্যে ফেসবুকও ব্রাউজ করছিলেন। অনেকক্ষণ ধরেই সে বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করছিলেন তিনি।
একপর্যায়ে প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন যে, কোন প্যাকেজ চালান আপনি? উত্তরে গ্রামীণফোন বলামাত্রই তিনি বললেন আমি এয়ারটেল। কোনটার সুবিধা কেমন জানতে চাওয়ায় মনে হয়েছিল তিনি কি কোনো ফোন কোম্পানির কেউ নাকি, কিন্তু বয়স এবং পোশাকের সঙ্গে কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
একেক কোম্পানির একেক রকম সুবিধা জানানোর পর তিনি শুরু করলেন তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক নানা প্রশ্ন। বিক্রয়ডট কীভাবে চলে? তারা কীভাবে টাকা আয় করে। এই যে জাগো নিউজ কীভাবে চলে? তখনো কিন্তু তার সঙ্গে জাগো নিউজ নিয়ে কোনো কথা হয়নি। তিনি আমার পরিহিত গেঞ্জি দেখেই বুঝে নিয়েছেন এটা একটা নিউজপোর্টাল।
একপর্যায়ে অনলাইনগুলোর আয়ের উৎস সম্পর্কে সামান্য ধারণা দেয়া শুরু করলেই তিনি বুঝে ফেলেন সব বিষয়।
তিনি বলেন, যে যাই বলুক তথ্যপ্রযুক্তিতে দেশ কিন্তু এগিয়ে যাচ্ছে। আমি নিজেই ফেসবুক চালাই তাতে করে টিভি বা পত্রিকার চেয়ে কিছু কিছু খবর সবার আগেই পাই। তবে এটা ঠিক যে, প্রযুক্তিকে যে যেভাবে কাজে লাগাবে সেভাবেই ব্যবহার হবে।
আব্দুস সালাম বলেন, অনেক আগে যে বিষয়গুলো নিয়ে ভাবতাম এখন প্রযুক্তির ফলে সেগুলো হাতের নাগালে পাচ্ছি। এটাই হয়তো প্রযুক্তির সফলতা। বলা যেতে পারে তথ্যপ্রযুক্তিতে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ।
একপর্যায়ে গাড়িও এগিয়ে যেতে যেতে বাড্ডা লিঙ্ক রোডে হাজির। এরপর নেমে গেলেন আব্দুস সালাম।
এমএএস/এবিএস