আজিমপুর কবরস্থানে মোহরার দায়িত্বে ব্যায়ামাগারের কর্মচারী
প্রতিদিন গড়ে দুই ডজনেরও বেশি মরদেহ দাফন হলেও দাফতরিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য আজিমপুর কবরস্থানে পর্যাপ্ত সংখ্যক মোহরার নেই। কাকডাকা ভোর থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত মরদেহের গোসল ও কবর খোঁড়ার জন্য কমপক্ষে ১৬ জন ড্রেসার প্রয়োজন হলেও বর্তমানে এক-চতুর্থাংশ অর্থাৎ মাত্র ৪ জন ড্রেসার দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে।
এছাড়া অবাক হওয়ার মতো তথ্য হলো আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা মোট মরদেহের শতকরা ৪০ ভাগ নারী হলেও তাদের গোসল করানোর জন্য তিন বছর যাবত কোনো নারী ড্রেসার নেই। ভবিষ্যতে চাকরি হবে এমন আশায় দুজন নারীকে দিয়ে কোনো রকমে কাজ চালানো হচ্ছে। জাগো নিউজের অনুসন্ধানে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতাধীন রাজধানীর অন্যতম বৃহৎ এই কবরস্থানে একজন সিনিয়র মোহরার ও দুজন মোহরারের অনুমোদিত পদ রয়েছে। অবসরজনিত কারণে প্রায় তিন বছর ধরে মোহরারের দুটি পদ শূন্য।
ফলে লাশ দাফনের আগে ও পরে মৃত ব্যক্তির তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও মৃত্যুসনদ প্রদানসহ দাফতরিক বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনায় মারাত্মক সমস্যা হচ্ছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, কাজ চালাতে আজিমপুর কবরস্থানে দুজন ‘আপদকালীন মোহরার’ কাজ করছেন। তাদের একজন হাফিজুল ইসলাম ও আরেকজন নুরুল হক।
হাফিজুল ইসলাম লাশের গোসল করানো ও জানাজা পড়ালেও বর্তমানে কাজের ফাঁকে মোহরারের দায়িত্বও পালন করছেন।
অপর মোহরার নুরুল হক আজিমপুর কবরস্থানের নিজস্ব কর্মচারী নন। তিনি ডিএসসিসির অধীনে পরিচালিত পার্শ্ববর্তী একটি ব্যায়ামাগারের কর্মচারী। তাকে ডেপুটেশনে এখানে কাজ করতে পাঠানো হয়েছে।
ডিএসসিসি সূত্রে জানা যায়, আজিমপুর কবরস্থানটি ১৮৫০ সালে ৩২ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৬৬ বছরের পুরনো এই কবরস্থানটি দেশের প্রথম মিউনিসিপ্যালিটি কবরস্থান। বর্তমানে এখানে নারী, পুরুষ ও শিশু মিলিয়ে বছরে দশ হাজারেরও বেশি লাশ দাফন হয়।
আজিপুর করবস্থানের মোহরার মিজানুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বর্তমানে এখানে একজন সিনিয়র মোহরার, চারজন পুরুষ ড্রেসার, পাঁচজন দারোয়ান ও চারজন মালি কর্মরত।
মোহরার সংকটে কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। ইমাম ও ব্যায়ামগার থেকে দেয়া দুজনকে দিয়ে কাগজপত্র লেখাসহ সকল দাফতরিক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, অনুমোদিত নারী ড্রেসার না থাকলেও দুজন নারীকে দিয়ে আপাতত কাজ চালিয়ে নেয়া হচ্ছে।
এম ইউ/এমএমজেড/এমএস