বিচারপ্রার্থীদের হয়রানি না হওয়ার নিশ্চয়তা চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু


প্রকাশিত: ০৪:১৬ এএম, ১৫ আগস্ট ২০১৬

কোন বিচারপ্রার্থী যেন হয়রানির শিকার না হন সংবিধানে তার নিশ্চয়তা চেয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীন বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা নিয়ে বঙ্গবন্ধুর চিন্তা ও গৃহিত পদক্ষেপের বিষয়ে জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে এমন মন্তব্য করেন দেশের বিশিষ্ট আইনজীবী, বাংলাদেশের সংবিধান প্রনয়ণ কমিটির অন্যতম সদস্য ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (বার) সাবেক সভাপতি ব্যারিষ্টার এম আমীর-উল ইসলাম।

তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পর যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে কিভাবে সাজাবেন তা নিয়ে বঙ্গবন্ধু সরাক্ষণ ভাবতেন। এর মধ্যে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি ‘সংবিধান’ রচনা ছিলো অন্যতম বিষয়। সংবিধান প্রণয়নে গঠিত কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলাম আমি (ব্যারিষ্টার এম আমীর) এবং ড. কামাল হোসেন। সংবিধান সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে মতবিনিময় করতাম। বিশেষ করে স্বাধীন বাংলাদেশে বিচার ব্যবস্থা কেমন হবে তা নিয়ে বঙ্গবন্ধু তার চিন্তা আমাদের সঙ্গে শেয়ার করতেন। বঙ্গবন্ধু তার দীর্ঘ সংগ্রামে যে শোষণমুক্ত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন সংবিধানে তার প্রতিফলন দেখতে চেয়েছিলেন। এ জন্য তিনি একটি শক্তিশালী বিচার ব্যবস্থা চেয়েছিলেন। ১৯৭২ সালে প্রণীত দেশের সংবিধানে তার প্রতিফলনও ছিলো। যেখানে স্বাধীন ও শক্তিশালী বিচার ব্যবস্থা সংবিধানে নিশ্চিত করা হয়।’

ব্যারিষ্টার আমীর বলেন, বিচার বিভাগ নিয়ে বঙ্গবন্ধুর চিন্তার গভীরতা আমরা দেখেছি। সকলের জন্য ন্যায়বিচার, মামলায় যেন দীর্ঘসূত্রিতা তৈরি না হয় এ বিষয়গুলোতে গুরুত্ব দিতে বলেছিলেন বঙ্গবন্ধু।

তিনি (বঙ্গবন্ধু) বলেছিলেন, আদালতে যাতায়াত অর্থ ও সময়ের অপচয়। এ বিষয়টি উল্লেখ করে শক্তিশালী বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার মত দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। যাতে জনগণ আদালতে কোনভাবেই হয়রানির শিকার না হন।

ব্যারিষ্টার এম আমীর-উল ইসলাম বলেন,  ল’ সেটেল করার জন্য আমরা একটা ব্যবস্থা প্রচলনের জন্য বঙ্গবন্ধুর কাছে মতামত পেশ করি। এর ভিত্তিতেই সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ প্রবর্তিত হয়। যেমন ব্রিটেনে রয়েছে ‘প্রিভি কাউন্সিল’। ব্যারিষ্টার আমীর আপিল বিভাগের এখতিয়ার বিষয়ে সংবিধান প্রদত্ত বিভিন্ন আর্টিকেল উল্লেখ করেন।

ব্যারিষ্টার আমীর বলেন, বঙ্গবন্ধু যে রকম বিচার ব্যবস্থা চেয়েছিলেন এখন তার অনেকটা বাস্তবায়ন হলেও এখনো অনেক কিছু বাকি রয়ে গেছে। আপিল বিভাগে দেয়া মাসদার হোসেন মামলার রায়ের আলোকে বিচার বিভাগ নির্বাহী বিভাগ পৃথকে অনেক কাজ হলেও এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি।

তিনি বলেন, বিচার বিভাগের এখনো অনেক বিষয় আইন মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণ করে থকে। এজন্য বিচার বিভাগের জন্য আলাদা সচিবালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যা হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক পরিচালিত হবে।

ব্যারিষ্টার আমীর বলেন, প্রধান বিচারপতি হলেন হেড অব জুডিশিয়ারি। এখন তাকে বিচার কাজ ও বিচার বিভাগ সংক্রান্ত প্রশাসনিক কাজ উভয়ই করতে হচ্ছে। আলাদা সচিবলায় হলে এ ক্ষেত্রে প্রধান বিচারপতির প্রশাসনিক কাজের চাপ আর থাকত না। এতে বিচার বিভাগ উপকৃত হতো। বিচার বিভাগের জন্য আলাদা সচিবালয় প্রতিষ্ঠা হলে বঙ্গবন্ধু যে বিচার ব্যবস্থা চেয়েছিলেন সেই স্বপ্নও পূরণ হতো।

এফএইচ/এআরএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।