বিচারক নিয়োগে মেধা ও দক্ষতার গুরুত্ব দিতেন বঙ্গবন্ধু
বিচার ব্যবস্থা নিয়ে বঙ্গবন্ধুর চিন্তা ও গৃহীত পদক্ষেপ বিষয়ে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলেছেন বিশিষ্ট আইনজীবী ও সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির (বার) সাবেক সভাপতি (সাবেক বিচারপতি) অ্যাডভোকেট এএফএম মেজবাহউদ্দিন।
তিনি বলেন, বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করতে ১৯৫২ সালের সংগ্রামের বিষয় উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু সর্বোচ্চ আদালতে বাংলা প্রচলনে গুরুত্বারোপ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু আইন অঙ্গনের লোক না হলেও এ অঙ্গনের প্রতি তার আলাদা দরদ ছিল। বিচার বিভাগের প্রতি অনেক শ্রদ্ধাশীল ছিলেন তিনি।
মেজবাহউদ্দিন বলেন, বিচার বিভাগ ও এ বিভাগের সঙ্গে সম্পৃক্তদের প্রতি তার বিনয় ছিল অসাধারণ। বিচারক ও আইন কর্মকর্তা নিয়োগে মেধা ও দক্ষতার বিষয়টি তিনি গুরুত্ব দিতেন বঙ্গবন্ধু।
হাইকোর্টের সঙ্গে জেলা ও দায়রা জজ পদেও আইনজীবীদের মধ্য থেকে বিচারক নিয়োগের দাবি উঠেছিল। তারই পরিপ্রেক্ষিতে কয়েকজন আইনজীবী এ পদে নিয়োগও পান। এদের মধ্য থেকে পরে কেউ কেউ হাইকোর্টেও নিয়োগ পান। পরবর্তীতে আপিল বিভাগেও নিয়োগ পান এবং দেশের প্রধান বিচারপতি হন।
এ বিষয়ে মেজবাহউদ্দিন বিচারপতি এটিএম আফজালের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শীতা ছিল।
সুপ্রিমকোর্ট বারের মূল ভবনটি বঙ্গবন্ধুর সময়ে নির্মিত হয়েছিল। সর্বোচ্চ আদালতে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মেজবাহউদ্দিন বলেন, বঙ্গবন্ধু এখানে একটি অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। ওই অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু সর্বোচ্চ আদালতে বাংলা প্রচলনের বিষয়ে তার অভিপ্রায়ের কথা বলেন। তখন বঙ্গবন্ধু ‘বাংলা ভাষা’ প্রতিষ্ঠায় সংগ্রাম ও ত্যাগের কথা উল্লেখ করেছিলেন। তখন ওই অনুষ্ঠানে বিচারপতি দেবেশ ভট্টাচার্যসহ অন্যরা বঙ্গবন্ধুর কাছে একটি প্রস্তাব তুলে ধরেন। ওই দিন বলা হয়, আমাদের দেশের প্রায় সব আইনই বৃটিশ আইন। এসব আইন বাংলায় অনুবাদ করে তা বিচার ব্যবস্থায় প্রয়োগে জাতীয় সংসদ কর্তৃক অথেন্টিকেশন করা। তাতে বঙ্গবন্ধু একমত পোষণ করেছিলেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে সপরিবার হত্যা করে ঘাতক ও ষড়যন্ত্রকারীরা। বঙ্গবন্ধুর অভিপ্রায় বৃটিশ আইনগুলো বাংলায় আর অনুবাদ করা হয়নি। এখনো সর্বোচ্চ আদালতে বাংলা প্রচলনে বঙ্গবন্ধুর অভিপ্রায় বাস্তবায়িত হয়নি।
এফএইচ/এনএফ/এমএস