ইন্দুর-বান্দরই সব খায়


প্রকাশিত: ০৭:২৭ এএম, ০৯ আগস্ট ২০১৬

‘আমাগো কপালে তো জোটে না স্যার। যা দিবেন আমাগো, তা হাতে দিয়া যায়েন। নেতাগো হাতে দিলে আমরা আর পামু না। ইন্দুর-বান্দরই সব খায়।’

মঙ্গলবার মধ্যদুপুর। জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার মলমগঞ্জ উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে প্রবেশ করতেই বন্যার্ত অসহায় মানুষের আর্তনাদ চোখে পড়ে। গাড়ি থেকে নামতেই অসহায় নারীরা ঘিরে ধরেন। সময় গড়াতেই অসহায় মানুষের সারি বাড়তে থাকে।
এদেরই একজন ফুলমতি। বয়স ষাটের কাছে হবে হয়ত। স্কুলের পাশেই পাথর্শী গ্রামে বাস। অসুস্থ স্বামী ঘরে পড়ে আছে। কিন্তু ঘরে খাবার নেই। জাগো নিউজের পক্ষ থেকে দেয়া ত্রাণ মেয়েকে নিয়ে নিতে এসেছেন ফুলমতি। এসময় বলছিলেন, ত্রাণ নিয়ে ক্ষোভের কথা।

জাগো নিউজের সঙ্গে কথা হয় এই বৃদ্ধার। বলেন, ‘খুব খারাপ অবস্থায় অাছি বাবা। বাড়ি পানিতে ডুবে গেছিল। ১০ দিন পানিতে আটকে ছিলাম। ওই সময় কেউ-ই খোঁজ নেয়নি। মাত্র ১০ কেজি চাল পাইছিলাম ইউনিয়ন পরিষদ থেকে। তাও কতজনরে হাতে-পায়ে ধরে।’

Islampur

তিনি বলেন, ‘শুনছি আপনারা ত্রাণ নিয়া আইবেন। তাই মাইয়ারে নিয়া সকাল থেহে বইয়া আছি। যা দিবেন দয়া করে আমাগো হাতে দিয়া যায়েন। ইন্দুর-বান্দরের হাতে দিলে আমাগো কপালে জুটব না।’

ফুলমতির পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা শিখা গত সোমবার ত্রাণ নিতে যাওয়ার অভিজ্ঞতার কথা জানান। বলেন, ‘সোমবার ত্রাণ দেয়ার কথা বলে স্লিপ হাতে দিয়া আমাগো পাশের খানপাড়া গ্রামে নিয়া যাওয়া হয়। সারাদিন ত্রাণের জন্য বসেছিলাম। মাগরিবের নামাজের পর আমাগো খালি হাতে ফেরত দেয়া হয়। মনে বড় কষ্ট পাইছি।’

ইসাতন নামের আরেক নারী বলেন, ‘গেল দুই বছর অাগে নদীতে বাড়ি ভাইঙা যায়। পাথর্শী বাড়ি করছি। এবার এনেও পানিতে বাড়ি ডুবে গেল। মাইনসে সরাসরি হাতে যা দিছে তাই পাইছি। চেয়ারম্যান-মেম্বারগো হাতে পড়লে আমরা কিছু পাই না।’

এএসএস/একে/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।