শত টাকার জামাতেই ঈদ আনন্দ!


প্রকাশিত: ০৪:৪৮ পিএম, ২৮ জুন ২০১৬

ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই জমে উঠছে রাজধানীর ঈদের বাজার। আর কয়েকটাদিন পরেই ঈদ। ঈদকে সামনে রেখে চলছে শেষ সময়ের কেনাকাটা। বাহারি সব নতুন পোশাকে নিজেকে রাঙাতে, প্রিয় জনদের নতুন পোশাক কিনতে রাজধানীর মার্কেটগুলো হয়ে উঠেছে জমজমাট। পা ফেলার ঠাঁই নেই রাজধানীর মার্কেটগুলোতে। অভিজাত সব শপিংমল থেকে সাধারণ মার্কেট কিংবা ফুটপাত সর্বত্রই ঢল মানুষের।

অভিজাত শপিংমল, সুপার মার্কেট, বিপণিবিতানগুলো, বড় বড় ফ্যাশন হাউস, কাপড়ের দোকান, জুতার দোকানসহ বিদেশি নামিদামী ব্র্যান্ডের আউটলেট রয়েছে রাজধানীজুড়েই। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই ঈদকে কেন্দ্র করে সাজিয়েছে নিত্যনতুন ডিজাইনের পোশাক, জুতাসহ অন্যান্য সামগ্রীতে। অভিজাত শ্রেণির ক্রেতারা এসব মার্কেটে ভিড় করছেন প্রতিদিন, কিনছেন নানা রঙ-বেরঙের দেশি-বিদেশি পোশাক ও অন্যান্য সামগ্রী।

এসব অভিজাত, মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ ছাড়াও রাজধানীতে আছে একেবারেই নিম্ন আয়ের দিনমজুর শ্রেণির মানুষ। তারাও তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে ঈদ উদযাপন করতে চায়। ঈদে নতুন পোশাক পড়ার আগ্রহ তাদেরও আছে। কিন্তু নিম্ন আয়ের মানুষ হওয়ার কারণে ইচ্ছা থাকলেও সব জায়গা থেকে তাদের পোশাক কিনতে পারেনা। তাই বলে কি তাদের ঈদ আনন্দ থেমে থাকবে?

ঈদকে সামনে রেখে পরিবার পারিজন নিয়ে ঈদ উদযাপন করতে তারও কিনছে ঈদের পোশাক কিন্তু সেটা কোন শপিং মল থেকে নয়। রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় ভ্যান গাড়িতে করে বিক্রি হচ্ছে কম দামি নানা পোশাক, আর তাদের ভরসা সেখানেই।


রাজধানীর কমলাপুর এলাকার মুগদা-মান্ডা নামক মহল্লায় ভ্যান গাড়ি থেকে শার্ট কিনছিলেন আব্দুর রহমান নামের এক রিকশাচালক। রংপুর জেলার বাসিন্দা আব্দুর রহমান ঢাকায় জমা খরচ বাবদ রিকশা চালান ৪ বছর ধরে। কেমন হবে তার এবারের ঈদ? এ বিষয় কথা হয় আব্দুর রহমানের সঙ্গে।

তিনি বলেন, ‘কম টেকার মধ্যে ঈদ করতে হয় প্রত্যক বার। সারাদিন রিকশা চালায়ে যা আয় হয় তা দিয়েই ঢাকায় নিজের খরচ, বাড়িতে টেকা পাঠানোর পর হাতে কিছুই থাকেনা। ঈদ আসলেই খরচ বাইড়া যায়।’

বাড়িতে দুই ছেলে মেয়ে আছে তাদের জন্যও জামা কিনছি, আর বউয়ের জন্য একটা শাড়ি কিনতেই টেকা প্রায় শেষ হয়ে গেছে, জানিয়ে আব্দুর রহমান বলেন, ঈদের এক-দুইদিন আগে বাড়িত যাইতে মেলা টাকা ভাড়া লাগে।ওই টেকা ছাড়া আর কোন টেকা নাই আমার কাছে।

তিনি বলেন, ‘এই কয়দিন রিকশা চালায়ে যা ইনকাম হইবে তা নিয়েই বাড়ি গিয়া ঈদ করমু। আমার মেয়ে বড় হইছে বুদ্ধি হইছে তাই সে কয়- আব্বা তোমারও জামা কিনা লাগবো, না হইলে আমারাও নতুন জামা পড়মু না।আমার মেয়েডার আবদারে তাই এই ভ্যান থ্যাইক্যা জামা কিনতাছি, এই ১০০ টেকার জামাতেই আমাগো ‘ঈদ আনান্দ’ বলেও যুক্ত করেন আব্দুর রহমান।’

এএস/এসএইচএস/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।