জঙ্গির চিঠির সূত্রধরে মিতু হত্যার তদন্তে নতুন মোড়


প্রকাশিত: ১২:০৮ পিএম, ১৪ জুন ২০১৬

চট্টগ্রাম কারাগারে বন্দি এক জঙ্গির চিঠির সূত্রধরে পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদ খানম মিতু হত্যার তদন্তের মোড় নিয়েছে। রহস্য উন্মোচনে নতুন ক্লু নিয়ে কাজ শুরু করেছে চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশ।
 
এছাড়া মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন এবং ডিসি পদমর্যাদার এক কর্মকর্তাকে মিতু হত্যা মামলার মনিটরিংয়ের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়ার পর তদন্তে নতুন করে গতি এসেছে বলে মনে করছে ডিবি।

মূলত বাবুল আক্তারসহ জঙ্গি অভিযানে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের হত্যার নির্দেশনা দিয়ে কারাগারে বন্দি বুলবুল নামের এক জঙ্গি সদস্যের পাঠানো একটি চিঠির সূত্র ধরে এগোচ্ছে তদন্ত কার্যক্রম। জঙ্গিরাই বাবুল আক্তারকে হত্যা করতে না পেরে তার স্ত্রীকে হত্যা করেছে বলে ধারণা করছে পুলিশ। তাই এই চিরকুটের লেখক গ্রেফতারকৃত জঙ্গি সদস্য বুলবুলকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের উদ্যোগ নিয়েছে মামলার তদন্ত দল।

মিতু হত্যায় তদন্ত সংশ্লিষ্ট একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হত্যা মামলাটি এখন নতুন করে গতি পেয়েছে। আমরা শিগগিরই বড় কোন সাফল্য দেখাতে সক্ষম হবো।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, গত মাসে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জঙ্গিদের কাছে প্রেরিত একটি বিশেষ চিরকুট নিয়ে নতুন করে তদন্ত শুরু হয়েছে। এই চিরকুটে কারাগারে বন্দি বুলবুল নামের এক জঙ্গি তার উপর নির্যাতনের কাহিনী এবং জঙ্গি নেতা জাবেদকে গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হত্যার কথা উল্লেখ করে পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বের হয়ে বিভিন্ন হাত ঘুরে চিরকুটটি এখন নগর গোয়েন্দা পুলিশের হাতে এসেছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানিয়েছেন। এই চিরকুটের নির্দেশনায় মিতু হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে কি-না তা অনুসন্ধানে নেমেছে পুলিশ।

উল্লেখ্য, গত ৫ অক্টোবর নগরীর কর্ণফুলী থানার খোয়াজনগর এলাকা থেকে বুলবুলসহ পাঁচ জঙ্গিকে অস্ত্র, গ্রেনেড ও বিস্ফোরকসহ গ্রেফতার করেন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার। গ্রেফতারকৃতরা হলো- মো. জাবেদ (২৪), ফুয়াদ ওরফে মো. বুলবুল (২৬), সুজন ওরফে বাবু (২৫), মাহবুব (৩৫) এবং সোহেল ওরফে কাজল (৩৫)। খোয়াজনগরের এই অভিযানের সময় জঙ্গিরা গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বাবুল আক্তারকে হত্যার চেষ্টা করে। কিন্তু এদিন তিনি প্রাণে রক্ষা পান। গ্রেফতারকৃত পাঁচ জঙ্গির মধ্যে জাবেদ পরদিন ভোরে পুলিশের অস্ত্র ও গ্রেনেড উদ্ধার অভিযানে গ্রেনেড বিস্ফোরিত হয়ে নিহত হয়।  

মিতু হত্যাকাণ্ডের নতুন তদন্ত কর্মকর্তা নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার (দক্ষিণ) কামরুজ্জামান জানান, হত্যার রহস্য উন্মোচনে সম্ভাব্য সব দিক অনুসন্ধান করা হচ্ছে। এর মধ্যে কারাগারে বন্দি কোন জঙ্গির নির্দেশনা বাইরে বাস্তবায়ন হয়েছে কি-না বা এর সঙ্গে কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

কারাগারের বিশেষ চিরকুটের বিষয়ে সরাসরি কোন মন্তব্য না করলেও সিনিয়র এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, বন্দি জঙ্গি সদস্য বুলবুলকে বাকলিয়া থানার একটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়েছে।

এদিকে, মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আদালতে বুলবুলকে হাজির করলে আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন। ফলে মিতু হত্যায় কারাগার থেকে কোন নির্দেশনা ছিল কিনা তা বেরিয়ে আসবে।  

জীবন মুছা/এএইচ/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।