১১ সপ্তাহে ৭৪১৬ রিট, নিষ্পত্তি হলো কতো?
দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি থেকে ২৩ মার্চ পর্যন্ত ১১ সপ্তাহ দুই দিনে ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ে মোট সাত হাজার ৪১৬টি রিট করা হয়েছে। এর মধ্যে কোনোটি ব্যক্তিস্বার্থে হলেও কোনো কোনোটিকে ‘জনস্বার্থে’র রিট বলা হয়েছে। এসব রিটের মধ্যে কয়টি নিষ্পত্তি করা হয়েছে তার হিসাব সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে পাওয়া যায়নি। তবে রিট করার পেছনে অনেক সময় প্রচার-পরিচিতি পাওয়ার বিষয় জড়িয়ে থাকে বলে মনে করেন আইনজীবীরা।
তারা রিটের বিষয়, কারণ, বাদী এবং রিটের গুরুত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলছেন, ব্যক্তির মৌলিক স্বার্থরক্ষা এবং জনস্বার্থের কথা বলে যেন-তেন বিষয়ে হাইকোর্টে রিট করার কারণে আইনি এ উপায়ের গুরুত্ব ক্রমেই প্রশ্নের মুখে পড়ছে। প্রশ্ন উঠছে রিটকারীদের বিষয়েও।
আলোচিত যত রিট
গত ২০ জানুয়ারি পদ্মা সেতুর নাম প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নামে করার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার কামরুজ্জামান স্বাধীন।
২১ জানুয়ারি দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে আরেকটি রিট দায়ের হয়। ভাওয়াল মির্জাপুর পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রিন্সিপাল আব্দুল কাইয়ুম সরকারের পক্ষে তার আইনজীবী ফারুক আলমগীর চৌধুরী এ রিট করেন।
বাংলাদেশি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে সুইস ব্যাংকসহ গোপনে বিদেশে ব্যাংকে পাচারকৃত অর্থ অবিলম্বে ফেরত যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশনা চেয়ে ১ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেন আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম খান ও সুবীর নন্দী দাস। সেটির শুনানি নিয়ে রুল জারি করেন আদালত।
২৮ ফেব্রুয়ারি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের বিরুদ্ধে কোনো অপরাধে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ এলে তা তদন্ত করার জন্য স্বাধীন ‘পুলিশ অভিযোগ তদন্ত কমিশন’ গঠনের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের ১০২ জন আইনজীবীর পক্ষে অ্যাডভোকেট মো. শিশির মনির হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই রিট করেন। রিটে আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং পুলিশ মহাপরিদর্শককে (আইজিপিকে) বিবাদী করা হয়।
ওই রিটে তদন্ত কমিশন গঠনের জন্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, অবসরপ্রাপ্ত আইজিপি, অবসরপ্রাপ্ত সচিব, আইনের শিক্ষক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে কমিটি গঠনের অর্ন্তর্বতীকালীন নির্দেশনা চাওয়া হয়।
গত ১৮ মার্চ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ে নিয়োগে বিদ্যমান কোটা বাতিলের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়। এতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব, রেলপথ মন্ত্রণালয় সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সচিব, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালককে বিবাদী করা হয়। চাকরিপ্রত্যাশীদের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী একলাছ উদ্দিন ভুঁইয়া এই রিট করেন।
৪১তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় গত ১৯ মার্চ। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে ঝুঁকি নিয়ে পরীক্ষায় বসতে চান না শিক্ষার্থীরা— এমন অভিযোগ করে সেই পরীক্ষা স্থগিত চেয়ে গত ১১ মার্চ হাইকোর্টে রিট করেন কয়েকজন পরীক্ষার্থী। তবে রিটের শুনানি নিয়ে সেটা সরাসরি খারিজ (সামারিলি রিজেক্ট) করে দেন হাইকোর্ট। স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেন্দ্র প্রস্তুত করতে পিএসসির পদক্ষেপে সন্তুষ্ট হয়েই আদালত রিট খারিজ করে দেন।
গত ২১ মার্চ হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আইনজীবী মুনতাসির মাহমুদ রহমান রিট করেছিলেন। এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে করা রিটটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ (নট প্রেস রিজেক্ট) করে আদেশ দেন হাইকোর্ট। এর ফলে গত ২ এপ্রিল মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
এভাবে রিটের পর রিট দায়ের হয়েই চলেছে। এর মধ্যে কিছু রিটের শুনানি ও পরবর্তী পদক্ষেপ এগোলেও এমন কিছু রিট আছে, যেগুলোর শুনানি হচ্ছেই না। এসব রিটের শুনানিরও কোনো উদ্যোগ দেখা যায় না। ওই রিটগুলোর গ্রহণযোগ্যতা, গুরুত্ব ও সাংবিধানিক যৌক্তিকতার বিষয়েও আলোচনা আছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের স্পেশাল অফিসার ও মুখপাত্র ব্যারিস্টার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘(আলোচ্য সময়ে) রিটের সংখ্যা বলতে পারলেও, কতগুলো রিট নিষ্পত্তি করা হয়েছে তার হিসাব আমাদের কাছে ওইভাবে নেই। তবে, সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ থেকে হিসাব এলে আমরা হয়তো বলতে পারবো।’
রিটের বিষয়ে বিচারপতিদের দৃষ্টিভঙ্গি
গত বছর ‘জনস্বার্থ মামলার অবস্থা : একটি রূপরেখা’ শীর্ষক এক সেমিনারে দেশের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘মিডিয়ার সামনে উপস্থাপনের জন্য কিছু আইনজীবী জনস্বার্থ মামলা করে থাকেন। ১৯৯৬ সালে ‘ড. মহিউদ্দিন ফারুক বনাম বাংলাদেশ’ মামলা দিয়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট জনস্বার্থ মামলার বিষয়ে বিচারিক ভূমিকার পরিধি বাড়ানো শুরু করে।’
সুবিধাবঞ্চিত ও পিছিয়ে পড়া জনগণের অধিকার রক্ষায় জনস্বার্থের মামলা সহায়তা করে উল্লেখ করে সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘মানবাধিকার বিষয়ক বিচারকাজে জনস্বার্থ মামলা (পিআইএল) দেশীয় মডেল হিসেবে বিচার বিভাগকে উন্নত করতে সহায়তা করে। জনগণের মঙ্গলের জন্য জনস্বার্থ মামলায় আইন ও ন্যায়বিচারের মাধ্যমে বিচার বিভাগের সক্ষমতা কাজে লাগাতে হবে। জাতির উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখতে হবে।’
ওই সেমিনারে সুপ্রিম কোর্টের কয়েকজন বিচারপতি জনস্বার্থ মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে কোনো কোনো আইনজীবীর ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেন।
সেমিনারে আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘আমি যখন রিট মামলা শুনানির এখতিয়ার সম্পন্ন বেঞ্চের দায়িত্বে ছিলাম, তখন একজন আইনজীবী ভারত থেকে ভেসে আসা একটি হাতি মারার ঘটনায় পিআইএল করেছিলেন। ওই মামলা আমি শুনিনি। আইনজীবীদের ধারণা থাকতে হবে আসলে জনস্বার্থে মামলা কোনটা হবে।’
হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ বলেন, ‘শুধু মিডিয়ার সামনে নিজেকে উপস্থাপনের জন্যই কিছু আইনজীবী জনস্বার্থে মামলা করেন। এ ধরনের আইনজীবীরা মামলা করার সঙ্গে সঙ্গে মিডিয়ার সামনে গিয়ে হাজির হন। এটা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পাবলিক ইন্টারেস্ট লিটিগেশন (পিআইএল) এখন পাবলিসিটি ইন্টারেস্ট লিটিগেশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এভাবে চলতে পারে না। জনস্বার্থের মামলা পরিচালনার নামে যারা নিজেদেরকে মিডিয়ায় উপস্থাপনে ব্যস্ত তাদের লাগাম টেনে ধরতে হবে।’
বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম বলেন, ‘কিছু আইনজীবী মামলা করেই মিডিয়ার সামনে নিজেকে উপস্থাপন করতে মরিয়া হয়ে পড়েন। এতে কোর্টের পরিবেশ নষ্ট হয়। জনস্বার্থমূলক মামলা শুনানি গ্রহণের ক্ষেত্রে বেঞ্চগুলোর মধ্যে সমন্বয় থাকা দরকার।’
বিচারপতি এ কে এম আব্দুল হাকিম বলেন, ‘জনস্বার্থের মামলা যেন প্রকৃতপক্ষে জনগণের স্বার্থেই হয় সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।’
আইনজীবীরা যা বলছেন
এ বিষয়ে সাবেক আইনমন্ত্রী ও সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘রিট করলেই তো আর হবে না। রিটের পর সেটা কার্যতালিকায় (কজলিস্ট) আসবে, তারপর সেটা আদালত দেখবেন, এটা শোনার মতো কি-না। ফাইল করে রেখে দিয়ে মামলার সংখ্যা বৃদ্ধি করলেই তো হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘মামলার বিষয়বস্তু যেটা সংবিধানে বলা আছে সে অনুযায়ী হতে হবে। আইনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য বা মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করার জন্য বিষয়বস্তু অনুযায়ী সেটাই নেয়া হবে। যেমন: ক্রিমিনাল কেস (অপরাধ মামলা) আছে, সিভিল কেস (দেওয়ানী মামলা) আছে, রিট পিটিশন আছে এবং নানা ধরনের মামলা আছে।’
শফিক আহমেদ বলেন, ‘রিট করলেই যে সেটা শুনানি হবে বা কার্যকর হবে বিষয়টি তা কিন্তু না। প্রথমে দেখতে হবে যে এটা সাংবিধানিক কোনো পয়েন্ট বা প্রশ্ন আছে কি-না, আইনের কতগুলো প্রশ্ন আছে এটা কোর্টকে বলতে হবে বা জানাতে হবে। যদি মনে করে যে আছে, তাহলে এটা রুল দেবে, সংশ্লিষ্টরা জবাব দেবেন। করোনাকালীন এমনিতেই মামলার শুনানি শেষ করা যাচ্ছে না। আমরা বাসায় বসে ভার্চুয়ালি মামলার শুনানি করছি। এর মধ্যে মামলার সংখ্যা বাড়ানো কী দরকার!’
রিট ও জনস্বার্থ মামলার বিষয়ে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘রিট হলো সাধারণত আমরা যেটা বলে থাকি, আমাদের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১০২ অনুযায়ী মৌলিক অধিকার কার্যকর করার জন্য যেটা করা হয়ে থাকে। অন্যভাবেও বলা যায়। রিট বলতে আমরা বুঝি, উচ্চ আদালতের আদেশ বা সংবিধানে যে প্রবেশন আছে সেটাকে। রিটের কতোগুলো ভাগ আছে; নির্দেশনা, সরকারের কোনো সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করা, অবৈধ উপায়ে কোনো কিছু করে থাকলে বা কাউকে অবৈধভাবে গ্রেফতার করলে সেটা নিয়েও রিট করা যায়।’
মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘রিটের মূল জিনিসটা হলো, যার সমস্যা তাকেই রিট করতে হয়। কিন্তু জনস্বার্থের রিট হলো, হয়তো কোনো একটা রাস্তা ভেঙে গেল, সেটা সংস্কার বা মেরামত করা হয়নি, সেটা তো আর কারো কোনো ব্যক্তিগত সমস্যা নয়, জেনারেল সমস্যা। এমন একজন যদি জেনারেল সমস্যা নিয়ে একজন রিট করতে চলে আসলো, সমস্যাটি ব্যক্তিগত না হওয়ায় একজন চাইলেই রিটে আসতে পারছিল না, তখন কিন্তু সেটা জনস্বার্থের রিট করতে পারবে।’
এই আইনজীবী বলেন, ‘আমরা অনেক সময় দেখি, মামলা করা হয় ব্যক্তিস্বার্থে কিন্তু বলা হয় জনস্বার্থ। বেশ কয়েক বছর ধরে এই সমস্যাটা দেখা যাচ্ছে। এর আগে কিন্তু কিছু এনজিও বিদেশি ফান্ড নিয়ে যারা কাজ করে, তারা অবশ্য এসব জনস্বার্থ নিয়ে কাজ করতো। বাৎসরিকভাবে ফান্ড নিয়ে তারা সেভাবে কাজ করতো। আর আমরা ২০০৯ সালে ইন জেনারেল কাজ শুরু করলাম, পরে আদালত রিটের বিষয়ে আরও প্রসারিত করলো। সেখানে রিটের ক্ষেত্র বড় হলো। তারপর থেকে অনেকে রাজনৈতিক বিষয় নিয়েও রিট করা শুরু করলো।’
‘ধরেন, একজন একটা লিগ্যাল নোটিশ দিয়ে দিলো পত্রপত্রিকায় এবং সেটা টিভিতে দেখাচ্ছে। এতে আইনজীবীর পরিচিতি বাড়ালো। আবার দেখা গেল, পরীক্ষা পেছানোর জন্য রিট করা হলো, সেটাও তো জনস্বার্থ না। সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতর আছে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন তারা—বলেন মনজিল মোরসেদ।
তিনি বলেন, ‘সংগঠন বা অনেক আইনজীবী একসঙ্গে মিলে যদি করে সেটা জনস্বার্থের রিট হতে পারে। অর্থাৎ সেখানে যদি ১০ জন মিলে একটা কাজ করেন তাদের মধ্যে কেউ একজন কোনো কিছু করার চেষ্টা করলে তাকে সবাই ধরার সুযোগ আছে। চাইলেও একা কিছু একটা করতে পারবে না। তার সঙ্গে থাকা আরও ১০ জনের চোখে সেটা বাজবে। জনস্বার্থে একটা বিষয়ে রিট করার পর সংগঠন বাদ দিয়ে একা কোনো কিছু করতে পারবে না। ব্যক্তিগতভাবে জনস্বার্থের রিট করার পরে এ বিষয়ে কোর্ট চাইলে যাচাই-বাছাই করতে পারেন।’
‘জনস্বার্থের রিটের প্রেক্ষিতে দেয়া রায় আদেশে মানুষের অনেক উপকার হয়েছে। আমাদের নিজেদের সংগঠন থেকে প্রায় তিনশর মতো মামলা জনস্বার্থে করা হয়েছে। তবে এসব মামলায় অনেগুলোর রায় ঠিকমতো বাস্তবায়ন হচ্ছে না। সেখানে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা এবং প্রভাবশালী মহলের চাপ রয়েছে। প্রভাবশালীরা রায় বাস্তবায়নে বারবার বাধা দেয়’—বলেন এই আইনজীবী।
আরেক আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির জাগো নিউজকে বলেন, ‘নাগরিকের এমন কোনো মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হলে তা বলবৎ করার আইন অনুযায়ী কার্যকরের জন্য যে প্রক্রিয়া সেটা রিট। বিভিন্ন প্রকারের রিট হলেও, সংবিধানের ১০২ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রিট মূলত পাঁচ প্রকার; বন্দী প্রদর্শন রিট (Writ of habeas corpus),পরমাদেশ বা হুকুমজারি রিট (Writ of mandamus), প্রতিষেধক বা নিষেধাজ্ঞামূলক রিট (Writ of prohibition), উৎপ্রেশন রিট (Writ of certiorari) এবং কারণ দর্শাও রিট (Writ of quo-warranto)।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে অনেক অযৌক্তিক ও ছোটখাট বিষয়েও রিট পিটিশন করা হয়। এটা কাম্য নয়। সামান্য বিষয় নিয়ে হাইকোর্টে চলে আসা, এটা কেন হয়, প্রশাসনিক অথরিটি যে সিদ্ধান্ত নেয়, তারা আইন মেনে নেন না। এজন্য প্রশাসনিক সিদ্ধান্তগুলো যদি আইন অনুযায়ী হয়, তা হলে তো রিটে আসার কোনো প্রয়োজন নেই।’
এফএইচ/এমএসএইচ/এইচএ/জিকেএস