সাড়ে ৩ হাজার পুলিশের জন্য মাত্র একজন চিকিৎসক

জসীম উদ্দীন
জসীম উদ্দীন জসীম উদ্দীন , নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:০৮ পিএম, ২৫ অক্টোবর ২০১৭
ফাইল ছবি

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের কর্মকর্তাসহ জনবল সাত হাজার। এতসংখ্যক পুলিশ সদস্যের আবাসনের জন্য ব্যারাকের সংখ্যা বৃদ্ধি, কেনাকাটার জন্য শপিংমল নির্মাণ হলেও বাড়েনি তাদের চিকিৎসাসেবা। সাড়ে তিন হাজার পুলিশ সদস্যের জন্য মাত্র একজন চিকিৎসক। অর্থাৎ সাত হাজার পুলিশ সদস্যের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে রয়েছেন মাত্র দুজন চিকিৎসক।

ডিএমপির পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (পিওএম) বিভাগ সূত্রে জানা যায়, দুজন চিকিৎসক সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অর্থাৎ অফিস চলাকালীন মিরপুর-১৪ তে অবস্থিত পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টের অসুস্থ পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসাপত্র দেন। প্রাথমিক চিকিৎসাপত্রে ওষুধ খেয়ে যারা সুস্থ হন না তাদের যেতে হয় রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে।

পিওএম’র পুলিশ সদস্যরা বলছেন, বিকেল ৫টার মধ্যে সাত হাজার পুলিশ সদস্যের তাৎক্ষণিক চিকিৎসা তো দূরের কথা, ব্যবস্থাপত্রও ঠিক মতো মেলে না। এজন্য মিরপুর-১৪ পিওএম ব্যারাক থেকে যেতে হয় রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে।

তারা জানান, মিরপুরের পিওএম সদস্যদের জন্য আধুনিক চিকিৎসা সম্বলিত একটি আলাদা মেডিকেল সেন্টার কিংবা হাসপাতাল নির্মাণ করা গেলে তাদের আর রাজারবাগে যেতে হতো না। একই সঙ্গে সব সদস্যের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে অন্তত এক ডজন চিকিৎসক প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেন তারা।

ডিএমপি সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, ডিএমপির একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা হচ্ছে পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট, যা সংক্ষিপ্তভাবে পিওএম নামে পরিচিতি। পিওএম’র চারটি শাখা। এর মধ্যে মিরপুরের পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টের অধীনে রয়েছে তিনটি। উত্তর, দক্ষিণ ও পশ্চিম। পূর্ব বিভাগটি রাজারবাগে অবস্থিত।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মিরপুরের পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টে পুলিশ সদস্যদের আবাসনের জন্য রয়েছে ১০টি ব্যারাক। সেখানে পুলিশ সদস্য রয়েছেন সাড়ে ছয় হাজার। আরেকটি ব্যারাকে থাকছেন হাজারখানেক ট্রাফিক পুলিশ সদস্য। এছাড়া ব্যারাকের বাইরে তাঁবুতে থাকছেন পুলিশের অধীন কাজ করা আনসার সদস্যরাও। সব মিলে সাত হাজার জনবল অবস্থান করছেন মিরপুরের ব্যারাকে।

পুলিশের কেন্দ্রীয় হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, পুলিশ সদস্যদের মধ্যে শ্বাসকষ্ট, কিডনি রোগ, পেপটিক আলসার, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগীর সংখ্যাই বেশি। ২০১৫ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ছয়জন এবং ২০১৬ সালে নয় পুলিশ সদস্য। এর বাইরে কিডনি, ক্যান্সার ও হাইপারটেনশনজনিত রোগ তো আছেই। প্রতি বছরই কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। চলতি বছর হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া রোগীর সংখ্যা তিন লাখ ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ হচ্ছেন পিওএম সদস্য।

পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টের যুগ্ম কমিশনার ইমতিয়াজ আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, পুলিশ সদস্যদের সব সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির বিষয়টি অধিক গুরুত্বসহকারে দেখছে ডিএমপি। আবাসন সুবিধা বাড়ানো হয়েছে, কর্মঘণ্টা কমিয়ে আনা হয়েছে। পুলিশ সদস্যদের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনায় তিন শিফটে আট ঘণ্টা করে কর্মঘণ্টা নির্ধারণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এখানে থাকা প্রায় সাত হাজার পুলিশ সদস্যের জন্য দুজন চিকিৎসক রয়েছেন, যা কখনই পর্যাপ্ত নয়। আমরা বিষয়টি ডিএমপিকে জানিয়েছে।

‘পিওএম’র জন্য আলাদা একটি ১০ শয্যাবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। সদর দফতর বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবেই দেখছে। শিগগিরই এ বিষয়ে অগ্রগতি জানা যাবে’ উল্লেখ করেন তিনি।

জেইউ/এমএআর/বিএ

সাত হাজার পুলিশ সদস্যের তাৎক্ষণিক চিকিৎসা তো দূরের কথা ব্যবস্থাপত্রও মেলে না

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।