‘হাজত থেকে বের হয়ে দেখি দেশ ‘স্বাধীন’ হয়ে গেছে’

রায়হান আহমেদ তামীম
রায়হান আহমেদ তামীম রায়হান আহমেদ তামীম , ছড়াকার,ফিচার লেখক
প্রকাশিত: ০২:১৬ পিএম, ০৮ আগস্ট ২০২৪
গ্রামে ফেরার পর বন্ধুরা ফুলের শুভেচ্ছা জানান লেখককে। ছবি: লেখকের সৌজন্যে

লংমার্চের আগের দিন খাবার-পানির সংকট দেখে ভাবলাম, ক্রাউড ফান্ডিং করবো। বাসায় ফিরে রাতে একটা স্ট্যাটাস দিই, একরাতেই জমা হয় লক্ষাধিক টাকা। রাতেই বিভিন্ন ভাইদের সাথে যোগাযোগ করে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় টাকা পোঁছে দিই।

লংমার্চের দিন সকাল থেকেই শুরু হয় থমথমে পরিবেশ, খাবার নিয়ে যেতে না পেরে খালি হাতেই বের হই আমি এবং আমার বন্ধু শেখ ফরিদ। ফরিদ গণমাধ্যমকর্মী, ওর সহকারী পরিচয়ে শাহবাগ যাবো এই ছিল প্ল্যান। সিটি কলেজের সামনে আসতেই দেখি ছাত্রদের ধাওয়া দিচ্ছে পুলিশ। ফরিদ ভিডিও নেয়।

এরপর আমরা শাহবাগ যাবো ভেবে বার্তা২৪-এর সাংবাদিকের সাথে তাদের সিএনজিতে উঠি। সিএনজি স্টার্ট দিতেই আটকে কার্ড দেখতে চায় পুলিশ। সাথের দুইজন বার্তা২৪ এবং সময়ের কণ্ঠস্বরের প্রেস কার্ড দেখালে তাদের ছেড়ে দেয়। আমার যেহেতু কার্ড নেই, জামাত-শিবির কর্মী বলে আটক করে গাড়িতে তোলা হয় আমাকে। কেড়ে নিয়ে অফ করা হয় ফোন।

‘হাজত থেকে বের হয়ে দেখি দেশ ‘স্বাধীন’ হয়ে গেছে’

আরও পড়ুন

কিছুক্ষণের মধ্যেই রাস্তা থেকে ছাত্র এবং হাসপাতালগামী কয়েকজনকে গ্রেফতার করে আমাদের একসাথে ধানমন্ডি (গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অপজিটে) থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। নাম-ঠিকানা লিখে হাজতে আটকে রাখা হয় প্রায় ত্রিশ জনকে। ঘণ্টাখানেক পর সবাইকে হাজত থেকে বের করে তোলা হয় প্রিজন ভ্যানে।

প্রায় দশ মিনিট ভ্যানে গাদাগাদি করে বসে-দাঁড়িয়ে থেকে গরমে অস্থির হয়ে উঠি আমরা। কেউ কেউ ‘গাড়িটা ছাড়েন স্যার, তাইলে বাতাস লাগবে’ বলে চিল্লাতে থাকে। আমাদের অবাক করে দিয়ে একে একে সবাইকে প্রিজন ভ্যান থেকে নামানো হয়।

ফিরিয়ে দেওয়া হয় প্রত্যেকের মোবাইলসহ যাবতীয় মালামাল। ছেড়ে দেওয়া হয় সবাইকে। হাজত থেকে বের হয়ে সংবাদ পাই, দেশ স্বাধীন হয়ে গেছে!

এসইউ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।