ড্রাইভার যদি কামায় কোটি কোটি টাকা, আমি কামিয়েছি বিলিয়ন বিলিয়ন!

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:১৫ পিএম, ০৮ জুলাই ২০২৪
অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর মিলন/ছবি- ফেসবুক

‘আমার অফিসের গাড়ির ড্রাইভার যদি কামায় কোটি কোটি টাকা, তাহলে আমি তো কামিয়েছি বিলিয়ন বিলিয়ন!’ সোমবার (৮ জুলাই) পিএসসির প্রশ্নফাঁস নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এসব কথা লেখেন অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর মিলন।

‘বিসিএস প্রিলি–লিখিতসহ গুরুত্বপূর্ণ ৩০ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস’ শিরোনামে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল রোববার একটি সংবাদ প্রকাশ করেছে। এ সংবাদে পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) ক্যাডার ও নন–ক্যাডারসহ বিভিন্ন পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সর্বশেষ গত শুক্রবার (৫ জুলাই) অনুষ্ঠিত রেলওয়ের ৫১৬টি পদের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। এক যুগের বেশি সময় ধরে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে আসছে একটি চক্র। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বিসিএসসহ ৩০টি ক্যাডার ও নন–ক্যাডার পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত পিএসসির কয়েকজন কর্মকর্তা।

‘বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (বিপিএসসি) কোনো নিয়োগ পরীক্ষা এলেই প্রশ্নপত্র ফাঁসের অনেক অভিযোগ আসতে শুরু করে। কয়েক বছর আগে থেকেই এসব অভিযোগের সূত্র মেলাতে কাজ শুরু করে চ্যানেল টোয়েন্টি ফোরের অনুসন্ধানী দল। খোঁজ মেলে এমন এক ব্যক্তির, যিনি চক্রটির কার্যক্রম খুব কাছ থেকে দেখেছেন।’

চক্রটির কার্যক্রম কাছ দেখা ওই ব্যক্তি বলেন, ‘তিনি (অভিযুক্ত ব্যক্তি) নিজ মুখে গল্প করতেন আমি চার–পাঁচজনকে বিসিএসে ক্যাডার বানিয়েছি। নন–ক্যাডার অফিসারও বানিয়েছি, বৈদেশিক ও কর্মসংস্থানে...। আমার কাছে সবকিছু হয়। তিনি আমাকে বলেন, ৩৩ ও ৩৪তম বিসিএসে কাজ করেছি চার–পাঁচটা ক্যাডার বানিয়েছি। ৩৫তম প্রিলিমিনারিতে আমি পড়াইছি।’

আরও পড়ুন

পিএসসির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা চ্যানেলটিকে বলেন, ‘আমি দেখছি রাজস্ব কর্মকর্তার প্রশ্ন তিনি পান, অনেক পড়িয়ে ৫–৬ জনের চাকরি হয়। ওই চক্রটির কর্মকর্তা পরে পিএসসির নন–ক্যাডারের দিকে ঝুঁকে পড়েন। এরপর এটিও, রাজস্ব কর্মকর্তা ও স্টাফ নার্সের ২০–২৫টা চাকরি হয় তাঁর মাধ্যমে।’

এদিকে দিনভর আলোচনা-সমালোচনার পর সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) অধীনে বিসিএস পরীক্ষাসহ ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় আসা সৈয়দ আবেদ আলী ও তার ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়ামসহ ১৭ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গ্রেফতাররা হলেন— পিএসসির উপপরিচালক মো. আবু জাফর, মো. জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর কবির, অডিটর প্রিয়নাথ রায়, নোমান সিদ্দিকী, সৈয়দ আবেদ আলী, খলিলুর রহমান, সাজেদুল ইসলাম, আবু সোলায়মান মো. সোহেল, মো. জাহিদুল ইসলাম, শাহাদাত হোসেন, মো. মামুনুর রশীদ, মো. নিয়ামুন হাসান, সাখাওয়াত হোসেন, সায়েম হোসেন, লিটন সরকার ও সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম।

প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় আলোচনায় আসা সৈয়দ আবেদ আলীর গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর জেলার ডাসার উপজেলায়। সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকায় ও গ্রামে একাধিক বাড়ি, গরুর খামার রয়েছে তার। সর্বশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের জন্য প্রচারণা চালিয়েছিলেন আবেদ আলী। আবেদ আলী সমাজের বিত্তবান ও প্রভাবশালীদের সঙ্গে নিয়মিত চলাফেরা করতেন। প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের সঙ্গেও উঠবস করতেন তিনি।

এমআরএম/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।