২০১৫ সালে ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন যারা


প্রকাশিত: ০৪:৩১ এএম, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৫

দেখতে দেখতেই শেষ হতে চলল আরো একটি বছর। ক্রিকেট বিশ্বে ২০১৫ সালে ঘটেছে অনেক ঘটনা। তার মধ্যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে যারা অবসর নিয়েছেন অনেকেই। ক্রিকেটের ব্যাট-বলের যুদ্ধ হয়তো থেমে থাকবে না, তাদের জন্য। কিন্তু ক্রিকেটপ্রেমীরা নিশ্চয়ই তাদের মিস করবেন। এবার দেখা যাক ক্রিকেট বিশ্ব আগামী বছর কাদের মিস করছে-

কুমার সাঙ্গাকারা

শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটে ব্র্যাডম্যান বলা হত তাকে। তিনি সামনে থেকে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলকে ব্যাট হাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। দলকে অনেক জয় একাই এনে দিয়েছেন কুমার সাঙ্গাকারা। কিন্তু বয়সের কাছে হার মানতে হয়েছে তাকে। ২০১৫ সালের আগস্টে ভারতের বিপক্ষে গল টেস্টে শেষে অবসর নেন এই কিংবদন্তি। শ্রীলঙ্কার হয়ে ১৩৪ টেস্টে ১২৪০০ রান করেন তিনি। ৪০৪ ওয়ানডেতে রয়েছে ১৪২৩৪ রান। এছাড়া ৫৬ টি-টুয়েন্টিতে ১৩৮২ রান করেন এই বাঁহাতি। আর সাঙ্গাকারাই একমাত্র ব্যাটসম্যান যিনি ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে টানা চার ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছেন।
kumar

বীরেন্দ্র শেবাগ

ভারতীয় ক্রিকেট দলের এক সময়ের ড্যাশিং ওপেনার বিরেন্দ্র শেবাগ। বিশ্ব ক্রিকেটে বোলারদের কাছে যিনি ছিলেন আতঙ্কের অন্য নাম। অথচ এই ব্যাটসম্যান দীর্ঘ আড়াই বছর ভারতীয় দলের বাইরে ছিলেন। কিন্তু যখনই ঘরোয়া কোন লিগে তিনি খেলতেন, তখনই বুঝিয়ে দিতেন তিনি মোটেও হারিয়ে যাননি। এরপরও ২০১৫ সালের অক্টোবরে হঠাৎ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলেন এই ডানহাতি।

VIRU

১০৪ টেস্ট ম্যাচে আট হাজার ৫৮৬ রান নিয়ে শেবাগ ভারতের সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যানের তালিকায় পঞ্চম স্থানে রয়েছেন শেবাগ। ওয়ানডেতে তার রান ৮ হাজার ২৭৩, সেঞ্চুরি ১৫টি। সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রান ২১৯, যা বিশ্ব ক্রিকেটে ব্যক্তিগত রানের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। ১৯ টি-টুয়েন্টি ম্যাচে করেছেন ৩৯৪ রান। শেবাগের টেস্টে ৪০ ও ওয়ানডেতে ৯৬ উইকেট রয়েছে।

ইউনিস খান

পাকিস্তানের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ইউনিস খান ওয়ানডে ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন ২০১৫ সালে ১১ নভেম্বর। আবুধাবিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ইউনিস খান তার শেষ ওয়ানডে ম্যাচ খেলেন। তবে টেস্ট ও টি-টুয়েন্টি ম্যাচ খেলবেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। পাকিস্তানের জার্সি গায়ে টেস্ট ক্রিকেটে সবথেকে বেশি রানের মালিকও তিনি। ইউনিস পাকিস্তানের হয়ে ২৬৫ ওয়ানডেতে ৭২৪৯ রান করেন। যার মধ্যে রয়েছে ৭ সেঞ্চুরি আর ৪৭ অর্ধশতক রয়েছে।
YOUNUS-KHAN



মাইকেল ক্লার্ক

রিকি পন্টিংয়ের পর অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটের হাল ধরেন মাইকেল ক্লার্ক। ২০১৫ আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ তার নেতৃত্বেই আবারো ঘরে তোলে অস্ট্রেলিয়া।  অথচ সেই মাইকেল ক্লার্ক ৩৪ বছর বয়সে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে এ বছরের আগস্টে অবসর নেন।  ক্লার্ক ১১৫ টেস্টে ব্যাটহাতে ৮৬৪৩ রান করেন।  এছাড়া ২৬৫ ওয়ানডেতে করেন ৭৯৮১ রান। আর টি-টুয়েন্টিতে করেন ৪৮৮ রান।

michael

মিচেল জনসন

অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের পেস আক্রমণে বেশ কয়েক বছর নেতৃত্ব দিয়েছেন। গ্লেন ম্যাকগ্রার অবসরের পরও অজি পেস বোলিংয়ের ধার একটুও কমতে দেননি মিচেল জনসন। কিন্তু চোটের কাছে হেরে ২০১৫ সালের নভেম্বরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পার্থ টেস্টে চতুর্থ দিনে সবাইকে অবাক করে সব ধরনের ক্রিকেটকে অবসর নেন এই বাঁহাতি পেসার। জনসন ৭৩ টেস্টে ৩১৩ উইকেট নেন। ১৫৩ ওয়ানডেতে নেন ২৩৯ উইকেট আর টি-টুয়েন্টিতে নেন ৩৮ উইকেট। জনসন শুধু বল হাতেই নয়, ব্যাটে হাতেও ছিলেন উজ্জ্বল। টেস্টে ব্যাটহাতে করেন ২০৬৫ রান, ওয়ানডেতে ৯৫১ রান রয়েছে তার।

ড্যানিয়েল ভেট্টোরি

বিশ্বকাপ মিশন শেষ করেই দীর্ঘ ১৮ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন নিউজিল্যান্ডের বাঁহাতি স্পিনার ড্যানিয়েল ভেট্টোরি। বিশ্বকাপ জিতে বিদায়টা স্মরণীয়ই করে রাখতে চেয়েছিলেন ভেট্টোরি। কিন্তু তা আর হয়নি। পুরো টুর্নামেন্টে অপরাজিত থেকে শুধু ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে যায় কিউইরা।

vettori

দেশের হয়ে ১১২টি টেস্ট খেলে ৩৪.৩৬ গড়ে ৩৬২ উইকেট শিকার করেছেন ভেট্টোরি। তার চেয়ে বেশি উইকেট পাওয়া কিউই একমাত্র ক্রিকেটার স্যার রিচার্ড হ্যাডলি। সাবেক এ ফাস্ট বোলার ২২.২৯ গড়ে নেন ৪৩১ উইকেট। একটি জায়গায় অবশ্য হ্যাডলির চেয়েও অনন্য ভেট্টোরি। বিশ্বে টেস্ট ক্রিকেটে ৪ হাজার রান ও ৩০০ উইকেটের ‘ডাবল’ করা তৃতীয় খেলোয়াড় তিনি।

ব্রেট লি

বিশ্ব ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার একচ্ছত্র রাজত্বের সময় দলটির বোলিং নেতৃত্বে ছিলেন পেসার ব্রেট লি। ২০ বছরের ক্যারিয়ারে তিনি একাধিক বিশ্বকাপ ও অ্যাশেজ শিরোপা জয় করেছেন। ৩৮ বছর বয়সী এ তারকা চলতি বছরের জানুয়ারিতে সিডনিতে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার মাধ্যমে ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন।অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট ও ওয়ানডে দলের গুরুত্বপূর্ণ এ সদস্য অবশ্য এর আগেই এ দুই ভার্সন থেক অবসর নিয়েছিলেন।

bretli

জহির খান

ভারতের সর্বকালের সেরা পেসারদের একজন জহির খান। দু’বার আইসিসির র্যাং কিং সেরা হওয়া এ বোলার নিজের সময়ে ভারতের একমাত্র ফাস্টবোলার ছিলেন, যিনি নতুন ও পুরনো বলে সমান দক্ষ ছিলেন। ১৫ বছরের বেশি সময়ের ক্যারিয়ারে ৯২ টেস্টে ৩১১টি উইকেট নিয়েছেন তিনি। আর ২৬৯টি ওয়ানডে উইকট সংগ্রহ করেছেন। ২০১১ সালে ভারতের বিশ্বকাপ জয়ে তার ভূমিকা ছিল অসাধারণ, যেখানে তিনি যুগ্মভাবে সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক ছিলেন।

ম্যাট প্রিয়র

বয়স মাত্র ৩৩, কিন্তু তাতেই বিদায় বলে দিতে হলো। অন্য অনেক ক্রীড়াবিদের মতো ম্যাট প্রিয়রেরও যে প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছিল ইনজুরি! ফলে ইংল্যান্ড ও সাসেক্সের এই উইকিপার ব্যাটসম্যান চলতি বছরের জুনে পেশাদার ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিয়েছেন। আলেক স্টুয়ার্টের পর এটি ইংল্যান্ডের পক্ষে টেস্টে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ। টেস্টের বিশ্ব র্যাং কিংয়ে ইংল্যান্ডকে এক নম্বরে তোলা ও তিনটি অ্যাশেজ জয়ে তার ভূমিকা ছিল অসাধারণ। তিনি ইংল্যান্ডের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৫৬টি ডিসমিসাল করেছেন।

ব্রাড হাডিন

মাইকেল ক্লার্কের মতো তিনিও চলতি বছর বিশ্বকাপ জিতে ওয়ানডেকে ও অ্যাশেজ হেরে টেস্টকে বিদায় বলেছেন। ২০০১ সালে ওয়ানডে অভিষেক হলেও অ্যাডাম গিলক্রিস্টের অবসরের পর ২০০৮ সালে তিনি অস্ট্রেলিয়ার নিয়মিত উইকেটকিপারের দায়িত্ব পান। ২০১৩ সালে এক টেস্ট সিরিজে (ইংল্যান্ডে অ্যাশেজ সিরিজে) উইকেটকিপার হিসেবে সর্বোচ্চ ২৯টি ডিসমিসাল করেন তিনি, ক্রিকেট ইতিহাসে অন্য কোনো উইকেট কিপার এক সিরিজে এ সফলতা দেখাতে পারেননি। তিনি অস্ট্রেলিয়ার চতুর্থ সফল উইকেটকিপার।

র‍্যায়ান হ্যারিস

অস্ট্রেলিয়ার এই পেসার চলতি বছরে ইংল্যান্ডে অ্যাশেজ চলাকালে ৩৫ বছর বয়সে হাঁটুর ইনজুরির কারণে অবসর নিয়েছেন। ৩০ বছর বয়সে অভিষেক হলেও ক্রিকেটের অন্যতম সফল বোলারদের একজন তিনি।

এমআর

 

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।