বছরের সেরা নায়িকারা


প্রকাশিত: ১২:১২ পিএম, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৬

নায়িকাদের মন্দ ভাগ্যের বছর ২০১৬। ব্যবসায়িক খরার কারণে ঠিকমতো জ্বলে উঠতে পারেননি কোনো নায়িকাই! বলার মতো নায়িকাপ্রধান ছবিও নেই। যদিও ‘রক্ত’ ছবিটি ছিল নারীপ্রধান। তবে পরীমনির দুর্বল অভিনয়ে এটি হতাশ করেছে দর্শকদের। আবার ‘কৃষ্ণপক্ষ’ দিয়ে প্রথমবারের মতো অফট্র্যাকের ছবিতে অভিনয় করে নিজের অভিনয়কে অন্য উচ্চতায় প্রতিষ্ঠিত করেছেন মাহিয়া মাহি।

তবে ব্যবসায়িক সাফল্য জুটেনি কোনো নায়িকার ভাগ্যে। এরপরও পর্দায় সাফল্য না পেলেও গুজবে, গুঞ্জনে, আলোচনায় নায়িকারা বছরব্যাপী মিডিয়া সরগরম রেখেছিলেন। ২০১৬ সালে ব্যস্ততায় যারা এগিয়ে ছিলেন, জাগিয়েছেন দর্শক প্রত্যাশা সেসব শীর্ষ ১০ নায়িকার তালিকার ফিরিস্তি নিয়ে হাজির জাগো নিউজ-

মাহিয়া মাহি
হুমায়ূন আহমেদের গল্পের নায়িকা, রিয়াজের জুটির নায়িকা, অফট্র্যাকের ছবিতে নাম লেখানো, বিয়ে, বিয়ে-পরবর্তী কথিত পুরনো প্রেমিক দ্বারা আগের বিয়ের ছবি প্রকাশ নানা কারণেই ইন্ডাস্ট্রির সবচেয়ে আলোচিত নায়িকা মাহিয়া মাহি। তার অভিনীত দুটি ছবি মুক্তি পেয়েছে এই বছর। একটি ‘কৃষ্ণপক্ষ’ অন্যটি ‘অনেক দামে কেনা’। দুটি ছবিতে মাহির অভিনয় প্রশংসার কুড়িয়েছে। তবে চলচ্চিত্র সমালোচকরা মনে করেন, আগের বছরের তুলনায় এই বছরটা ছবি মুক্তির দিক দিয়ে মাহির ক্যারিয়ারে ভাটা পড়ছে। কিন্তু বিয়ের পরপর সবাইকে চমকে দিয়ে প্রায় হাফ ডজন ছবিতে তিনি চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। তাই বোদ্ধাদের দাবি, আগামী বছর হবে মাহিময়।

অপু বিশ্বাস
অপু বিশ্বাস অভিনীত ‘রাজা ৪২০’ এবং ‘সম্রাট’ নামের দুটি ছবি মুক্তি পায় এ বছর। বছরের শেষে এসে ছবি দুটির প্রযোজকদের দাবি, টেনেটুনে লগ্নির পয়সা উসুল করেছেন তারা। সেক্ষেত্রে বছরের ব্যবসা সফল ছবির নায়িকা হিসেবে অপু বিশ্বাসের নাম উল্লেখ করা যায়। তবে মার্চেই অপু নিরুদ্দেশ হওয়ায় অনেকটাই হতাশ ভক্তরা। কোনো রকম সাড়া-শব্দ পাওয়া যায়নি তার। হারিয়ে গিয়েও যে আলোচনায় আসা যায় তার প্রমাণ অপু এবং তার জনপ্রিয়তা।  

বিদ্যা সিনহা মিম
বেশ কয়েক বছর ধরেই রূপালি পর্দায় মনোযোগী বিদ্যা সিনহা মিম। তবে চলতি বছর তিনি ভেলকি দেখিয়েছেন বিগ বাজেটের কিবছু ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়ে। গেল ভালোবাসা দিবসে মিম অভিনীত ‘সুইটহার্ট’ ছবিটি মুক্তি পায়। এটি দিয়ে মূলত চলতি বছরে আলোচনায় আসেন তিনি। তারপর বছর শেষে আমি ‘তোমার হতে চাই’ ছবিটি মুক্তি পায়। ছবিটি ব্যবসায়িকা সফলতা না পেলেও ছবিতে মিমের উপস্থিতি, নাচ এবং গ্ল্যামার তাকে প্রশংসিত করেছে এবং নতুন সাফল্যের দিকে এগিয়ে নিয়েছে। আশা করা যায়, আগামী বছর মীমের বছর আরো ভালো কাটবে।

বুবলী
চলচ্চিত্রে বুবলীর অভিষেকটা রাজকীয়ভাবে। চিত্রনায়ক শাকিবের হাত ধরে পরপর দুটি ছবি মুক্তি পায় এই অভিনেত্রীর। দুটি ছবিতে তিনি বাজিমাৎ করেন। বুবলী অভিনীত ছবি দুটি হচ্ছে ‘বসগিরি’ এবং ‘শুটার’। কোনোরকম চড়াই উৎরাই ছাড়াই ছবি দুটিতে লগ্নি করা অর্থ ফিরে পায় প্রযোজকরা। সুতরাং বলা যায়, প্রথম বছরেই বুবলী সফল নায়িকার তকমা পেয়েছেন।

নুসরাত ফারিয়া
বছরটা ভালো কাটেনি চলচ্চিত্রের ‘শো পিস’ খ্যাত চিত্রনায়কা নুসরাত ফারিয়ার। তার অভিনীত দুটি ছবি মুক্তি পায় এবার। এই ছবি দুটি যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত। বছরের শুরুতে ‘হিরো ৪২০’ এবং মাঝামাঝি সময়ে ‘বাদশা’ মুক্তি পায়। ‘হিরো ৪২০’ সুপার ফ্লপ ছবি হয়। অন্যদিকে ‘বাদশা’ ছবিটি ব্যবসা সফল হলেও তার কৃতিত্ব ওপার বাংলার নায়ক জিতের। ফারিয়ার দুর্বলা সংলাপের উপস্থিতি ছিলো বিরক্তিকর। তার ন্যাকামো অভিনয়ও যথেষ্ট বিরক্তিকর। আগামী বছর জ্বলে না উঠতে পারলে তার চলচ্চিত্র ক্যারিয়ার হরিষে বিষাদময় হয়ে উঠবে সেটি বলা অপেক্ষা রাখে না।

পরীমনি
এই বছরটা পরীমনি জন্য ছিল ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট। কারণ তিনি যৌথ প্রযোজনার ছবি ‘রক্ত’ দিয়ে ঢালিউডে বেশ আলোচনায় ছিলেন। কিন্তু কথায় আছে যত গর্জে তত বর্ষে না। ‘রক্ত’ ছবিটি যতটা আলোচনা করেছিল, ততটাই দর্শকদের হতাশ করেছে। ব্যবসায়িকভাবে ছবিটি ব্যর্থ হয়। একইসঙ্গে পরীর অভিনয় দর্শকদের মনে দাগ কাটেনি। তারপর ‘পুড়ে যায় মন’ ও ‘মন জানেনা মনের ঠিকানা’ ছবিগুলোও দর্শকপ্রিয়তা পায়নি। তবে বছরের শেষ দিকে শাকিব খানের বিপরীতে ‘ধুমকেতু’ ছবিটি নিয়ে বেশ আশাবাদী ছিলেন পরীর ভক্তরা। কিন্তু এই ছবিটিই বছরের সবচেয়ে সুপার ফ্লপ ছবির তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে! সবমিলিয়ে চলচ্চিত্রে পরীর সম্ভাবনা দিনে দিনে নিভে যাচ্ছে। তাই দর্শকরাও তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। এখন ক্যারিয়ার এবং নিজের অস্তিত্ব রক্ষায় কোণঠাসা এই অভিনেত্রী।

braverdrink

আঁচল
দুটি ছবি মুক্তি পায় আঁচলের। একটি ‘আড়াল’ অন্যটি, অন্যটি ‘মেন্টাল’। আড়াল ছবিটি অনেকটাই আড়ালে থাকলেও মেন্টালে আঁচল অভিনয়ের ক্যারিশমা দেখিয়েছিন। তার মধ্যে অমিত সম্ভাবনার প্রমাণ আবারো দেখিয়েছেন। ভালো নির্মাতার সান্নিধ্য পেলে আঁচল আগামী বছর আবারো ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন তিনি দেখতেই পারেন।

তিশা
ছোটপর্দায় তিশা অপ্রতিদ্বন্দ্বী। এই বছর তার অভিষেক হয়েছে রূপালি পর্দায়। ‘অস্তিত্ব’ এবং ‘মেন্টাল’ নামে দুটি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিশা। ছবি দুটি ব্যবসায়িক সফলতা না পেলেও তিশার আবেদন চলচ্চিত্রের দর্শকরা লুফে নিয়েছেন। আগামীতে তার অভিনীত ‘ডুব’ ছবিটি মুক্তি পাবে। ২০১৬ হতে পারে তিশার চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট।

ববি
গত বছর ববিকে নিয়ে আলোচনবা হলেও এই বছর তিনি অনেকটাই নিশ্চুপ ছিলেন। ‘ওয়ান ওয়ে’ নামে মাত্র একটি ছবি মুক্তি পায় তার। তবে আগামী বছর ববি অভিনীত নীলিমা, বিজলী এবং বৃদ্ধাশ্রম নামে তিনিতি ছবি মুক্তি কথা রয়েছে। এগুলো দিয়ে রাজত্ব করতে পারেন ববি- প্রত্যাশা অনেকের।

তানহা তাসনিয়া
চলতি বছরে অভিষেক হয় মিষ্টি হাসির নায়িকা তানহা তাসনিয়ার। রফিক শিকদারের ‘ভোলা তো যায় না তারে’ ছবিতে নিরবের বিপরীতে অভিনয় করে আলোচনায় আসেন তিনি। বর্তমানে কাজ করছেন জাকির হোসেন রাজুর ‘ভালো থেকো’ ছবিতে। এখানে আরিফিন শুভ’র নায়িকা হয়ে পর্দায় হাজির হবেন তানহা। এই বিগ বাজেটের ছবিটি বদলে দিবে তার ভাগ্য, এমনটাই দাবি করছেন চলচ্চিত্রের মানুষেরা।

এছাড়াও বছরজুড়ে আলোচনায় ছিলেন বিপাশা কবির, মিষ্টি জান্নাত, অমৃতা খান, অধরা খান, শিরীন শিলা, নিঝুম রুবিনা, তানিন সুবাহ, মৌমিতা মৌয়ের মতো নতুম মুখেরা। তবে নানা ঘটনায় ঘুরে ফিরে এসেছে শাবনূর, পূর্ণিমা, পপি ও কেয়াদের নাম।

এনই/এলএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।