পারিবারিক জীবনে নারীর অধিকার


প্রকাশিত: ০৮:১৭ এএম, ০৮ মার্চ ২০১৬

কুরআন-হাদিসে নারীর অধিকারের বিষয়ে এমন কোনো দিক নেই যা আলোচনা হয়নি। নারীকে যেখানে পূর্ববর্তী জীবনাদর্শ ও সমাজগুলোতে মানবাত্মাই মনে করা হতো না। সেখানে ইসলাম নারীকে দিয়েছে সর্বক্ষেত্রে সর্বোত্তম অধিকার। পারিবারিক জীবনে নারীর অধিকার তুলে ধরা হলো-

মা হিসেবে
ইসলাম নারীকে মায়ের অধিকার দান করে সর্বোচ্চ মর্যাদাবান করেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘আমি মানব জাতিকে তার মাতা পিতার প্রতি সদ্ব্যবহারে উপদেশ দিচ্ছি।’

হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন একজন লোক রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে উপস্থিত হয়ে আবেদন করে, হে আল্লাহর রাসুল! আমার উত্তম ব্যবহারের সবচেয়ে বেশী উপযুক্ত কে? তিনি বলেন, তোমার মা! পুনরায় জানতে চাইলেন, তারপর কে? বললেন, তোমার মা! পুনরায় জানতে চাইলেন, তারপর কে? বললেন তোমার মা; পুনরায় জানতে চাইলেন, তারপর কে? বললেন, তোমার পিতা।’ (বুখারি)

কন্যা হিসেবে
কন্যা সন্তানকে বেঁচে থাকার অধিকার দিয়েই ইসলাম ক্ষান্ত হয়নি; বরং সামাজিক এবং পারিবারিক সম্মানের উপর নারী জাতিকে অধিষ্ঠিত করে উত্তরাধিকার হওয়ার উপযুক্ত করেছে। আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদেরকে তোমাদের সন্তানের উত্তরাধিকার সম্বন্ধে নির্দেশ দিচ্ছি এক পুত্রের জন্য দুই কন্যার সমান অংশ থাকবে। আর যদি শুধু কন্যাই হয় দুইজন কিংবা দুইজনের চেয়ে বেশী তখন তাদের জন্য উক্ত সম্পদের দুই তৃতীয়াংশ থাকবে। আর যদি সে একাই হয় তাহলে তার জন্য অর্ধেকাংশ থাকবে”। (সুরা নিসা : আয়াত ১১)।

কন্যা সন্তানকে হত্যা করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ ঘোষণা করে আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমরা নিজেদের সন্তানকে দরিদ্রতার ভয়ে হত্যা করনা। আমিই তাদেরকে জীবিকা দিয়ে থাকি আর তোমাদেরকেও। নিশ্চয়ই তাদেরকে হত্যা করা বড় অপরাধ। (সুরা বনি ইসরাইল : আয়াত ১৭)

কন্যা সন্তানদের প্রতিপালনে উৎসাহ দিয়ে বিশ্বনবী বলেন, ‘যে ব্যক্তি বালেগ হওয়া পর্যন্ত দুটো কন্যা সন্তানকে লালন-পালন করলো সে কিয়ামত দিবসে এভাবে আসবে যে, আমি এবং সে অনুরূপ হব, এই বলে তিনি তাঁর আঙ্গুল দুটো একত্রিত করলেন।’ (বুখারি)

বোন হিসেবে
ইসলাম নারীর সামাজিক ও পারিবারিক মর্যাদা নির্দিষ্ট করার সাথে সাথে বোন হিসাবেও তার অধিকার নিশ্চিত করেছে। বোন হিসেবে নারীর ওয়ারিশী স্বত্ব সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, ‘আর যদি কোন এমন পুরুষ অথবা মহিলার উত্তরাধিকারী স্বত্ব বন্টন করা হচ্ছে যার পিতা-মাতা নেই সন্তানও নেই আর তার মায়ের দিক থেকে একজন ভাই অথবা বোন থাকে তখন তাদের উভয় জন থেকে প্রত্যেকের জন্য অষ্টমাংশ থাকবে অতপর যদি ভাই-বোন একের অধিক হয় তখন সবাই এক তৃতীয়াংশের মধ্যে অংশীদার হবে।’ (সুরা নিসা : আয়াত ১২)

মুসলিম উম্মাহর উচিত, কুরআন-সুন্নাহর বিধান অনুযায়ী পারিবারিক জীবনে নারীর সকল অধিকার অক্ষুন্ন রাখা। আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক পরিবারের সবাইকে নারীর পারিবারিক অধিকার রক্ষা করার মানসিকতা অর্জন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।