ভাষা শহীদদের মর্যাদায় করণীয়


প্রকাশিত: ০৭:১৩ এএম, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

ফেব্রুয়ারি মাস ভাষার মাস। এ মাস আমাদেরকে মাতৃভাষা ও ভাষার জন্য জীবনদানকারী বীর শহীদদের স্মরণ করিয়ে দেয়। যাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি নিজেদের ভাষায় কথা বলার স্বাধীনতা, তাদের প্রতি রয়েছে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। তারা কিয়ামাত পর্যন্ত আমাদের নিকট অমর হয়ে থাকবে। প্রতিদান দিবসে তাঁরা আল্লাহর নিকট পাবেন উত্তম প্রতিদান।

ভাষার জন্য যারা প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন, তাদের সিংহভাগই মুসলমি ধর্মে বিশ্বাসী। আর মুসলমান পরকালে বিশ্বাসী। একজন মুসলমানের চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে, পরকালের সুখ-শান্তি লাভ করা। হাদিসে এসেছে, মানুষের মৃত্যুর সাথে সাথে তার সকল আমলের দরজা বন্ধ হয়ে যায়। পানিতে হাবুডুবু খাওয়া ব্যক্তির মতো মৃত ব্যক্তি বিপদাবস্থায় (দুনিয়ায় অবস্থানরত) জীবিতদের অপেক্ষায় থাকে। জীবিত ব্যক্তি যদি তার জন্য দোয়া করে, ক্ষমা প্রার্থনা করে, দান সদকা করে, তাতে তার আত্মার মাগফিরাত তথা ক্ষমা লাভ হয়। তাদের রূহের মাগফিরাত কামনা করা আমাদের কর্তব্য।
ভাষা শহীদের মর্যাদায় আমাদের করণীয় হচ্ছে, তাদের জন্য দোয়া করা, তাদের নামে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান তথা মসজিদ, মাদরাসা, সেবামূলক প্রতিষ্ঠান তথা হাসপাতাল, সেতু ইত্যাদি স্থাপন করার মাধ্যমে তাদের স্মরণ করা। যার বিনিময়ে তাদের পরকালীন জীবন হবে সুখ ও শান্তিময়।

বিশেষত শুধু ভাষার মাস আসলেই আমরা তাদের স্মরণ করি। তাঁদের প্রসংশায় সভা, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম করে থাকি। যাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা নিজ ভাষায় কথা বলার অধিকার লাভ করেছি, তাদের স্মরণ এবং কল্যাণে সর্বদা কাজ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।

জাতি হিসেবে আমাদের নৈতিক দায়িত্ব হচ্ছে শহীদ সালাম, জাব্বার, রফিক, বরকত, আউয়াল এবং অহিদুল্লাহসহ সকল শহীদের অবদান আগামী প্রজন্মের জন্য তুলে ধরা। এ কথাগুলো জানিয়ে দেয়া যে, সকল ভাষা শহীদ আমাদের শ্রদ্ধার পাত্র, আমাদের জন্য আল্লাহর রহমত স্বরূপ। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য তাঁদের ত্যাগ ও তাঁদের অবদান হবে দেশ প্রেমের অনুকরণীয় আদর্শ।

যারা ভাষার জন্য জীবন দিয়ে গেছেন, তাঁদের রক্তের ঋণ শোধ হবার নয়। জ্ঞানীদের কথা, রক্তঋণ এবং মায়ের দুধের ঋণ কখনো শোধ হয় না। তাই ব্যক্তি পরিবার সমাজ ও রাষ্ট্রের উচিত, তাদের পরকালীন জীবনের সুখ-শান্তি কামনায় এবং তাঁদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে ধর্মীয়, সেবামূলক, শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করে তাদের মর্যাদাকে সমুন্নত করা।
তাদের পরকালীন জীবনের জন্য সাদকায়ে জারিয়ার ব্যবস্থা করা। পাশাপাশি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নিকট তাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য তুলে ধরাও আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। এমন কোনো কাজ না করা, যা দ্বারা তাদের পরকালীন জীবনের জন্য গোনাহের কাজ হয়।

পরিশেষে…
যারা ভাষার জন্য জীবন দিয়েছেন, আল্লাহ তাআলা তাদেরকে শহীদ হিসেবে কবুল করুন। তাদের সকল অপরাধ মার্জনা করুন। তাদের প্রতি রহমত বরকত মাগফিরাতের বর্ষণ করুন। আমাদেরকে সকল ভাষা শহীদের মর্যাদা রক্ষা ও কল্যাণ কামনা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।