ঋণমুক্ত হতে আল্লাহর সাহায্য পাওয়ার উপায়

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:১৬ এএম, ১৬ আগস্ট ২০২১

কুরআনুল কারিমেও মানুষের জন্য করজে হাসানা বা উত্তম ঋণ গ্রহণের নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু এ ঋণ পরিশোধের সদিচ্ছা খুবই জরুরি। ঋণ নেওয়ার পর তা পরিশোধে অপরাগ হয়ে পড়লে করণীয় কী?

করজে হাসানা বা উত্তম ঋণের বিনিময় সম্পর্কেও রয়েছে সুস্পষ্ট ঘোষণা। কেননা প্রয়োজনের তাগিদেই মানুষ ধার বা ঋণ নিয়ে থাকে। আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘নিশ্চয় দানশীল ব্যক্তি ও দানশীলা নারী, যারা আল্লাহকে উত্তমরূপে ধার (ঋণ) দেয়, তাদেরকে দেয়া হবে বহুগুণ এবং তাদের জন্যে রয়েছে সম্মানজনক পুরস্কার।’ (সুরা হাদিদ : আয়াত ১৮)

মানুষকে প্রয়োজনের সময় উত্তম ঋণ দেয়ার ব্যাপারেও উৎসাহিত করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন-
’তোমরা নামাজ প্রতিষ্ঠা কর, জাকাত দাও এবং আল্লাহকে উত্তম ঋণ দাও।’ (সুরা মুযাম্মিল : আয়াত ২০)

মানুষের কাছ থেকে উত্তম ঋণ তথা করজে হাসানা নেয়ার পর তা পরিশোধের প্রবল আকাঙ্ক্ষা থাকা যেমন জরুরি। তেমিন তা পরিশোধে মহান আল্লাহর দরবারে ধরণা দেয়ার বিকল্প নেই।

কারণ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ধার-দেনা পরিশোধের তাওফিক কামনা করে আল্লাহ তাআলার দরবারে ধরনা দেয়ার কথা বলেছেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখনই কোনো পেরেসানি অনুভব করতেন, তখনই এ দোয়া পড়তেন।

ঋণমুক্ত হতে আল্লাহর সাহায্য পেতে এ দোয়ার মাধ্যমে ধরনা দেওয়ার বিকল্প নেই। হাদিসে পাকে এসেছে-
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ الْعَجْزِ وَالْكَسَلِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ الْجُبْنِ وَالْبُخْلِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ غَلَبَةِ الدَّيْنِ وَقَهْرِ الرِّجَالِ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাযানি, ওয়া আউজুবিকা মিনাল আঝযি ওয়াল কাসালি, ওয়া আউজুবিকা মিনাল ঝুবনি ওয়াল বুখলি, ওয়া আউজুবিকা মিন গালাবাতিদ দাইনি ওয়া কাহরির রিঝালি।
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আমি আপনার কাছে দুশ্চিন্তা ও দুঃখ থেকে আশ্রয় চাই, অপারগতা ও অলসতা থেকে আশ্রয় চাই, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে আশ্রয় চাই এবং ঋণের ভার ও মানুষদের দমন-পীড়ন থেকে আশ্রয় চাই।’ (বুখারি ও মুসলিম, মিশকাত)

করজে হাসানার উপকারিতা পেতে হলে-
করজে হাসানা তথা উত্তম ঋণ হবে এমন, যা দেয়ার পেছনে দুনিয়ার কোনো স্বার্থ বা বুদ্ধি থাকবে না বরং নিছক আল্লাহ তাআলাকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে এ ঋণ দিতে হবে। শুধু তাই নয়, সে অর্থ এমন কাজে খরচ করতে হবে যে কাজ আল্লাহ তাআলা পছন্দ করেন।

তারপর হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী করজে হাসানা বা উত্তম ঋণ গ্রহণ করার পর যদি তা পরিশোধের প্রচেষ্টা থাকে এবং ঋণ গ্রহণকারী আল্লাহর কাছে তা পরিশোধে বেশি বেশি এ দোয়া পড়ে তবে আল্লাহ তাআলা তাদের ঋণ পরিশোধের তাওফিক দান করবেন।

করজে হাসানা গ্রহণ যেমন আল্লাহর নির্দেশ, তেমনি তা পরিশোধে সচেষ্ট থাকাও জরুরি। তবেই করজে হাসানা দেয়া ও নেয়া হবে স্বার্থক ও সফল।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে করজে হাসানা গ্রহণ ও তা সময় মতো ফেরত দেয়ার মাধ্যমে উত্তম পুরস্কার লাভের তাওফিক দান করুন। ঋণ পরিশোধের নিয়তে হাদিসে বর্ণিত দোয়া বেশি বেশি পড়ে ধার-দেনামুক্ত হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।