হজে অংশগ্রহণকারী মুসলিম রাষ্ট্রদূতদের আবেগঘন স্মৃতিচারণ
মহামারি করোনার প্রাদুর্ভাবের এ সময়ে সৌদি আরবে নিয়োজিত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা তাদের হজে অংশগ্রহণের স্মৃতিচারণ করেছেন। যাদের অনেকে এবারই প্রথম হজ করেছেন; আবার কারো এটি দ্বিতীয় হজ। এ বছরের হজে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রদূতদের অনেকে যে আবেগঘন অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন; তা তুলে ধরেছেন গণমাধ্যম আরবনিউজ ডটকম।
২০২১ সালের (১৪৪২ হিজরির) হজে ৬০ হাজার হাজি অংশগ্রহণের সৌভাগ্য অর্জন করেছেন। হাজিরা যেন করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থেকে হজের কার্যক্রম সহজেই সম্পন্ন করতে পারেন; এদিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। হজে অংশগ্রহণকারী যেসব রাষ্ট্রদূত তাদের অভিব্যক্তি পকাশ করেছেন; তাহা হলেন-
১. মাহমুদ আল-নাশরাতি, মিসর
রাজধানী রিয়াদে অবস্থানকারী মিসরের রাষ্ট্রদূত মাহমুদ আন নাশরতি এ বছরই তিনি প্রথম হজ করেছেন। প্রথম হজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে গিয়ে তিনি বলেন, হজের সময় বিভিন্ন দেশের লোকজনের সঙ্গে দেখা হওয়ার সুবাদে ভিন্ন ভিন্ন অভিজ্ঞতা ও ধর্মীয় বিভিন্ন জ্ঞান অর্জনের গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ পেয়েছি।
তিনি আরব নিউজকে বলেন, ‘আরাফার ময়দান। এক পবিত্র স্থান থেকে আরেক পবিত্র স্থানের সফর অনেক বরকতময় ও মর্যাদাপূর্ণ ছিল। মহান আল্লাহ পবিত্র এ স্থানগুলো সফরে সাহায্য করেছেন; এ সফরের গুরুত্ব যে অপরিসীম তা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। নিজে হজে অংশগ্রহণ করে তা দেখা, উপলব্দি করা, অভিজ্ঞতা অর্জন করা আর অন্যের কাছে শোনা সত্যিই এক জিনিস নয়।
২. মোহাম্মদ কাসেম জিবরিল, দক্ষিণ আফ্রিকা
জেদ্দায় অবস্থানকারী দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ কাশেম জিবরীলও এ বছর হজে অংশগ্রহণ করেছেন তার কাছে আবেগ-ভালোবাসা ও মর্যাদাপূর্ণ সময়টি ছিল আরাফার ময়দানে অবস্থানের দিন। হজ অংশগ্রহণকারীদের জন্য এ দিনটি আধ্যাত্মিকতার অনন্য উচ্চতার দিন। কারণ এ দিন আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদের সাক্ষী রেখে বলেন-
‘ আজ এই (আরাফাতের) ময়দানে একত্রিত সব হাজির গোনাহগুলো ক্ষমা করে দিলাম।’
মহামারি করোনার প্রাদুর্ভাবের এ সময়ে পবিত্র হজের আয়োজন করায় কাসেম জিবরিল দেশটির বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ ও যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমানকে ধন্যবাদ জানান।
৩. জুমালি আমান, ইন্দোনেশিয়া
জেদ্দায় অবস্থানকারী ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত জুমালি আমানও এ বছর হজ করেছেন। এর আগেও তিনি হজ করেছেন। তার ভাষায় এ বছরের হজ বাস্তবেই তার প্রশান্তি ও আনন্দকে দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
তিনি বলেছেন, ‘যখন আমি পবিত্র স্থান সমূহে ছিলাম. হজ চলাকালীন সময়ে খাবার-দাবার, যানবাহনসহ সব সেবায় সহজলভ্যতা ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়ায় উন্নত সেবাগুলোই লাভ করেছি। এবারের হজে বিভিন্ন দেশের লোকদের সাথে অভিজ্ঞতা বিনিময় করার একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ ছিল।
ইন্দোনেশিয়ার এই রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, ‘হজের সঙ্গে সম্পৃক্ত সংস্থাগুলোর এ ধরনের অবিশ্বাস্য সেবা ও সহযোগিতা আশ্চর্যজনক। জামারাতে কংকর নিক্ষেপের সময় এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়ার বিষয়টি যেভাবে সহজভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তা অত্যন্ত গর্বের। হজে সব ব্যবস্থাপনাই ছিল অসাধারণ!
৪. আবু নাসর সুজা আকরাম, পাকিস্তান
জেদ্দায় অবস্থানকারী পাকিস্তানি কূটনৈতিক আবু নাসর সুজা আকরাম এ বছর তার জীবনের দ্বিতীয় হজ পালন করেছেন। এবারের হজের সফরে প্রতিটি মুহূর্তে ও প্রত্যেক স্থানেই বিশেষ ধরনের অনুভূতি কাজ করেছে।
তিনি বলেন, প্রতিটি ক্ষেত্রেই মনে হয়েছিল যেন, আপনি মহান আল্লাহর সঙ্গে আধ্যাত্মিকভাবে সংযুক্ত আছেন। প্রতিটি মুহূর্তেই তিনি আপনার আবেগ-অনুভূতি ও কথা শুনছেন।
হজে অংশগ্রহণকারীদর জন্য ব্যাপক স্বাস্থ্য নিরাপত্তা ও উন্নত সেবা নিশ্চিত করায় তিনিও সৌদির বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ এবং কাউন প্রিন্স মোহাম্মাদ বিন সালমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
এমএমএস/জিকেএস