বিশ্বনবির আবেগঘন দোয়া

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:৪২ পিএম, ০৮ জুলাই ২০২১

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দোয়ায় ছিল প্রচণ্ড আকর্ষণ। হৃদয়ের উত্তাপ। বিনয়-কাতরতা। প্রচণ্ড আবেগমাখা আবেদন, নিবেদন ও মুখাপেক্ষিতায় ছিল ভরপুর। তাঁর দোয়ায় ছিল কান্না, অশ্রুপ্লাবিত কান্না। এখনও যারা তাঁর মতো দোয়া করে; তারাই সফল। কেমন ছিল তাঁর দোয়ার নমুনা?

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আবেগঘন দোয়া ছিল এমন-

১. হে আল্লাহ! আমাকে এমন বানিয়ে দিন, যেন আমি আপনাকে (সবচেয়ে বেশি) ভয় করি; সারাক্ষণ আপনাকে দেখার মতো ভয় করি; যতক্ষণ না আপনার দিদার না পাই।

২. হে আল্লাহ! আমাকে আপনার তাকওয়া (ভয়) দ্বারা সৌভাগ্যবান করুন। আপনার নাফরমানির দ্বারা যেন আমি বদ-নসিব না হই।

৩. হে আল্লাহ! আপনার জিকির (শোনা ও অনুধাবন)-এর জন্য আমার অন্তরের কানগুলো খুলে দিন। আর আমাকে আপনার আনুগত্য এবং (আপনার রাসুলের আনুগত্য) এবং আপনার কিতাবের উপর আমল করার তাওফিক দান করুন।

৪. হে আল্লাহ আপনার কাছে স্থায়ী ও সত্য ঈমান চাই; অনুগত হৃদয় চাই; সঠিক দ্বীন (জীবন ব্যবস্থা) চাই। আপনার কাছে রোগ-শোক থেকে নিরাপত্তা চাই। আপনার কাছে স্থায়ী নিরাপত্তা চাই। আপনার কাছে নিরাপত্তার উপর শোকর করার যোগ্যতা চাই আর মানুষের প্রতি মুখাপেক্ষী হওয়া থেকে আপনার কাছে আশ্রয় চাই। হে আল্লাহ! আপনার সহায়তা ছাড়া আমাদের যে কোনো শক্তি নেই।

এ দোয়াগুলো ছিল উম্মতের জন্য বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শিক্ষা। তিনি তো উম্মতের জন্য সব বিষয়ের শিক্ষক হিসেবেই দুনিয়াতে এসেছেন। হাদিসে এসেছে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আমি তোমাদের জন্য শিক্ষক হিসেবে প্রেরিত হয়েছি।'

উম্মতের জন্য সবচেয়ে বড় শিক্ষা হলো-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দুনিয়ার জীবনের প্রতিটি মুহূর্তই ছিল দোয়া ও ক্ষমা প্রার্থনায় ভরপুর। আবার এ দোয়াগুলো ছিল আবেগ, ভক্তি ও ভালোবাসায় পরিপূর্ণ।

সুতরাং মুসলিম উম্মাহর উচিত, আল্লাহর সঙ্গে নিবিড় ভালোবাসার সম্পর্ক গঠনে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ অনুসরণ করা। আল্লাহর কাছে সর্বোচ্চ ভালোবাসায় নিজেদের চাওয়া-পাওয়ার আবেদন তুলে ধরা। ঠিক যেভাবে আবেদন-নিবেদন করেছেন বিশ্বনবি। কেননা তিনিই তো সর্বকালের সর্বযুগের সব মানুষের জন্য সব বিষয়ে মডেল। তাই মুমিনের দোয়া হোক- অন্তর দিয়ে, মন দিয়ে, প্রাণ দিয়ে, জান দিয়ে; ঠিক প্রিয় নবির মতো।

আল্লাহর কাছে ধরণায় যে বিশ্বাস জরুরি-
মানুষ যখন আল্লাহর কাছে কাঙ্গাল ও ভিখারী হয়ে কোনো কিছু চাইবে তখন অন্তরে এ বিশ্বাস রাখা জরুরি যে, 'আল্লাহ আপনার দোয়া, আপনার মোনাজাত, আপনার চাওয়া, আপনার ফরিয়াদ অবশ্যই কবুল করবেন। কবে, কীভাবে, কখন তিনি এসব দোয়া কবুল করবেন; তা প্রার্থনাকারীর জানা নেই। শুধু এটুকু সুনিশ্চিত যে, তিনি বান্দার দোয়া ও মোনাজাত অবশ্যই কবুল করবেন।

ক্ষমা প্রার্থনাই হবে মুমিন বান্দার সেরা রোনাজারি। আল্লাহর কাছে নিজের সব চাওয়া-পাওয়া পূরণ করতে হৃদয়ের সব আকুতি ও ভালোবাসা দিয়ে বেশি বেশি ক্ষমা প্রার্থনার এ দোয়া পড়া-
اللَّهُمَّ إِنَّكَ عُفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي يَا غَفُوْرُ
উচ্চারণ : 'আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুওউন; তুহিব্বুল আফ্ওয়া; ফাফু আন্নি; ইয়া গাফুরু।
অর্থ : 'হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল; আপনি ক্ষমাকে ভালবাসেন; সুতরাং আমাদের ক্ষমা করে দিন- হে ক্ষমাকরী!'

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসরণ ও অনুকরণে সর্বোচ্চ আবেগ ও ভালোবাসায় তারই কাছে হৃদয়গ্রাহী সব দোয়া ও রোনাজারি যথাযথভাবে করার তাওফিক করুন। দুনিয়া ও পরকালের সফলতা ও কল্যাণ দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।