লোভ-লালসা ঈমানের অন্তরায়
আল্লাহ তাআলা মানব জাতির হিদায়াতের জন্য কুরআনুল কারিম নাজিল করেছেন। যাতে রয়েছে মানুষের সঠিক পথের দিশা। যারা কুরআনকে আঁকড়ে ধরবে তার জন্য কোনো চিন্তা ও ভয় নেই। আর যারা কুরআনের বিধানকে অমান্য করবে চাই সে মুনাফিক হোক আর কাফির হোক। তাদের জন্য রয়েছে ভয়াবহ শাস্তি। দুনিয়া ও আখিরাতের তাদের অবস্থার উপমা তুলে ধরে আল্লাহ তাআলা বলেন-
অর্থ : তাদের অবস্থা সে ব্যক্তির মত, যে লোক কোথাও আগুন জ্বালালো এবং তার চারদিককার সবকিছুকে যখন আগুন স্পষ্ট করে তুললো, ঠিক এমনি সময় আল্লাহ তার চারদিকের আলোকে উঠিয়ে নিলেন এবং তাদেরকে অন্ধকারে ছেড়ে দিলেন। ফলে, তারা কিছুই দেখতে পায় না। তারা বধির, মূক ও অন্ধ। সুতরাং তারা ফিরে আসবে না। (সুরা বাক্বারা : আয়াত ১৭-১৮)
পূর্ববর্তী আয়াতদ্বয়ে সমূহে মুনাফিকদের পরিচয় ও স্বরূপ তুলে ধরা হয়েছিল অত্র আয়াতদ্বয়ে মাধ্যমে দুটি উপমা তুলে ধরা হয়েছে।
প্রথম উপমাটি ঐ শ্রেণীরে লোকদের বেলায় প্রযোজ্য যারা কুফরিতে সম্পূর্ণ নিমগ্ন থাকা সত্ত্বেও মুসলমানদের কাছ থেকে আর্থিক স্বার্থ উদ্ধারের লক্ষ্যে মুখে ঈমানের কথা প্রকাশ করতো।
দ্বিতীয় উপমাটি ঐ শ্রেণীর মুনাফিকদের সম্পর্কে যারা ইসলামের সত্যতায় প্রভাবিত হয়ে কখনো কখনো প্রকৃত মুমিন হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করত কিন্তু দুনিয়ার উদ্দেশ্য হাসিলে তাদেরকে এ ইচ্ছা থেকে বিরত রাখতো। এভাবে তারা অস্থির অবস্থায় দিনাতিপাত করতো।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ ও অন্যান্য সাহাবাগণের তাফসির হচ্ছে- যখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদিনায় আগমন করলেন, তখন কিছু লোক ইসলাম গ্রহণ করে। কিন্তু তারা অল্প সময়ে আবার মুনাফিক হয়ে যায়। তাদের দৃষ্টান্ত ঐ লোকের মতো যে, অন্ধকারে ছিলো; তারপর সে বাতি জ্বালাল। ফলে তার চতুর্দিক আলোকিত হয়ে গেল এবং উপকারী ও অপকারী জিনিস তার সামনে পরিষ্কার হয়ে গেল। হঠাৎ সে বাতি নিভে গেল এবং পুনরায় চতুর্দিক অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে গেল। এই অবস্থা হলো মুনাফিকদের। প্রথমের তারা শির্কের অন্ধকারে নিমর্জিত ছিল, তারপর মুসলিম হয়ে আলোয় আসে। হালাল-হারাম, ভলো-মন্দ জেনে নেয়। অতপর তারা আবার কুফরি ও নিফাক্বের দিকে ফিরে যায়। ফলে সমস্ত আলো নিভে যায়। (ফতহুল কাদির ও জালালাইন)
এ দুনিয়ার মোহ, লোভ-লালসা মানুষকে সত্য সুন্দর ও ন্যায় পথ থেকে অন্ধকারের পথে নিয়ে যায়। যা মানুষকে ঈমান হারা করে দেয়। সুতরাং সর্বাবস্থায় আল্লাহর রহমত কমনা করা আবশ্যক। আল্লাহ তাআলা সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে সব ধরনের নিফাকি থেকে হিফাজত থাকার এবং কুরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী আমলি জিন্দেগি যাপন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস