হজরত মারইয়ামের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা ও ইবাদতের নির্দেশ
হজরত মারইয়াম ছিলেন তাঁর সময়ের সব নারীদের মধ্য শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব। আল্লাহ তাআলা তাকে সব দিক থেকে হেফাজত করে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেন। আর তাঁরই ইবাদত-বন্দেগি নির্দেশ দেন। কুরআনের বর্ণনায় তা এভাবে উঠে এসেছে-
وَإِذْ قَالَتِ الْمَلاَئِكَةُ يَا مَرْيَمُ إِنَّ اللّهَ اصْطَفَاكِ وَطَهَّرَكِ وَاصْطَفَاكِ عَلَى نِسَاء الْعَالَمِينَ - يَا مَرْيَمُ اقْنُتِي لِرَبِّكِ وَاسْجُدِي وَارْكَعِي مَعَ الرَّاكِعِينَ
‘আর যখন ফেরেশতা বলল হে মারইয়াম!, আল্লাহ তোমাকে পছন্দ করেছেন এবং তোমাকে পবিত্র পরিচ্ছন্ন করে দিয়েছেন। আর তোমাকে বিশ্ব নারী সমাজের উর্ধ্বে মনোনীত করেছেন। হে মারইয়াম! তোমার পালনকর্তার উপাসনা কর এবং রুকুকারীদের সঙ্গে সেজদা ও রুকু কর।’ (সুরা ইমরান : আয়াত ৪২-৪৩)
আয়াতের ব্যাখ্যামূলক অনুবাদ
সে সময়টিও স্মরণযোগ্য,যখন ফেরেশতা হজরত জিবরিল আলাইহিস সালাম বলেছিলেন- হে মারইয়াম! নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা তোমাকে মনোনীত করেছেন, গ্রহণ করে নিয়েছেন এবং পুরুষের স্পর্শ থেকে তোমাকে পবিত্র রেখেছেন। আর তোমার যুগের বিশ্বের নারীদের মাঝে তোমাকে মনোনীত করেছেন, নির্বাচিত করেছেন।
হে মারইয়াম! তুমি তোমার প্রতিপালকের বন্দেগি কর। তাঁর আনুগত্য প্রদর্শন কর। সেজদা কর এবং যারা রুকু করে তাদের সঙ্গে রুকু কর। অর্থাৎ নামাজ আদায়কারীদের সঙ্গে নামাজ আদায় কর।’ (তাফসিরে জালালাইন)
হজরত মারইয়ামের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা
হজরত জাকারিয়া ও হজরত ইয়াহইয়া আলাইহিস সালামের ঘটনা প্রসঙ্গক্রমে মাঝে চলে এসেছিল। যেখানে হজরত ইমরানের পরিবারের বিষয়টিকে সুস্পষ্ট করা হয়েছে। আর তা ছিল হজরত ঈসা আলাইহিস সালামের ঘটনার ভূমিকা স্বরূপ।
হজরত ঈসা আলাইহিস সালামকে দুনিয়ায় পাঠানোর আগে আল্লাহ তাআলা তাঁর মা হজরত মারইয়ামকে শ্রেষ্ঠ নারী হিসেবে শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি দেন। ফেরেশতা জিবরিল আলাইহিস সালামের মাধ্যমে তাকে জানিয়ে দেন-
হে মারইয়াম! আল্লাহ তাআলা আপনাকে প্রথম দিন থেকেই বাছাই করে নিয়েছেন। যে কারণে মেয়ে হওয়া সত্ত্বেও নিজ নজরানায় আপনাকে কবুল করেছেন। নানা রকম উচ্চতর অবস্থা ও উন্নত কারামত তথা অলৌকিক ঘটনা আপনাকে দান করেছেন।
আপনাকে নির্মল চরিত্র, অনাবিল প্রকৃতি এবং প্রকাশ্য ও আভ্যন্তরীন উৎকর্ষে ভূষিত করেছেন। প্রসিদ্ধ মসজিদ বায়তুল মুকাদ্দাসের সেবার জন্য উপযুক্ত করে তুলেছেন।
সর্বোপরি তাঁর সময়ে বিশ্বের সব নারীর উপর বিভিন্ন দিক থেকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। তাঁর মাঝে এমন যোগ্যতা ও ক্ষমতা নিহিত রেখেছিলেন যে, পুরুষের স্পর্শ ব্যতিত কেবল তার একার অস্তিত্ব থেকে হজরত ঈসা আলাইহিস সালামের মতো একজন মহান নবি ও রাসুলের জন্ম হতে পারে। এ বৈশিষ্ট্য পৃথিবীর কোনো নারীকে দেয়া হয়নি।’ (তাফসিরে ওসমানি)
এর শুকরিয়া স্বরূপ আল্লাহ তাআলা হজরত মারইয়ামের প্রতি এ নির্দেশ দেন যে- হে মারইয়াম! তুমি তোমার পালন কর্তার উপাসন কর। সেজদা কর এবং রুকুকারীদের সঙ্গে রুকু কর।’
এ নির্দেশনা থেকে বুঝা যায়, আল্লাহর কাছে শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করতে হলে নিষ্কলুষ চরিত্রের অধিকারী হতে হবে। আর নামাজের মাধ্যমেও এ মর্যাদা লাভ করা যায়। কেননা নামাজই বান্দার জন্য আল্লাহর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের সেরা মাধ্যম।
এমএমএস/এমকেএইচ