আল্লাহর পক্ষ থেকে মারইয়ামের রিজিক লাভ

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:২৩ পিএম, ১৫ আগস্ট ২০২০

হজরত ঈসা আলাইহিস সালামের মা মারইয়ামের জন্মের পর তাঁর মা হান্নাহ মানত পূরণে তাঁকে বায়তুল মুকাদ্দাসের খেদমতে উৎসর্গ করেন। সেখানে তিনি তাঁর খালু হজরত জাকারিয়া আলাইহিস সালামের তত্ত্বাবধানে লালিত-পালিত হন। বায়তুল মুকাদ্দাসের পাশে নির্মিত কামরায় অবস্থদান কালে আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ রিজিক লাভ করতেন হজরত মারইয়াম। কুরআনে সে কথাও উঠে এসেছে-
فَتَقَبَّلَهَا رَبُّهَا بِقَبُولٍ حَسَنٍ وَأَنبَتَهَا نَبَاتًا حَسَنًا وَكَفَّلَهَا زَكَرِيَّا كُلَّمَا دَخَلَ عَلَيْهَا زَكَرِيَّا الْمِحْرَابَ وَجَدَ عِندَهَا رِزْقاً قَالَ يَا مَرْيَمُ أَنَّى لَكِ هَـذَا قَالَتْ هُوَ مِنْ عِندِ اللّهِ إنَّ اللّهَ يَرْزُقُ مَن يَشَاء بِغَيْرِ حِسَابٍ
‘অতপর তাঁর পালনকর্তা তাঁকে উত্তম ভাবে গ্রহণ করে নিলেন এবং তাঁকে প্রবৃদ্ধি দান করলেন-অত্যন্ত সুন্দর প্রবৃদ্ধি। আর তাঁকে জাকারিয়ার তত্ত্বাবধানে সমর্পন করলেন। যখনই যাকারিয়া মেহরাবের মধ্যে তার কছে আসতেন, তখনই কিছু খাবার দেখতে পেতেন। (জাকারিয়া আলাইহিস সালাম) জিজ্ঞাসা করতেন- মারইয়াম! কোথা থেকে এসব (ফল-ফলাদি) তোমার কাছে এলো? তিনি বলতেন- ’এসব আল্লাহর কাছ থেকে আসে। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা বেহিসাব রিজিক দান করেন।‘ (সুরা ইমরান : আয়াত ৩৭)

আয়াতের ব্যাখ্যামূলক অনুবাদ
অতএব তাঁকে (মারইয়ামকে) তাঁর পালনকর্তা উত্তম পন্থায় কবুল করে নিলেন এবং উত্তম বর্ধনে তাকে বর্ধিত করলেন। আর (হজরত) জাকারিয়া (আলাইহিস সালাম) তাঁর অভিভাবকত্ব গ্রহণ করলেন। যখনই (হজরত) জাকারিয়া (আলাইহিস সালাম) তাঁর কাছে (বায়তুল মুকাদ্দাস সংলঘ্ন সেই উত্তম কক্ষে- যেখানে তাকে রাখা হয়েছিল) আসতেন, তখন তাঁর কাছে কিছু পানাহারের (খাবার, ফল-ফলাদি) বস্তু দেখতে পেতেন। তিনি বলতেন-
’হে মারইয়াম! এগুলো তোমার কাছে কোথা থেকে এলো? (অথচ কক্ষ তালাবদ্ধ। বাইরে থেকে কারও আসা-যাওয়ারও কোনো সুযোগ-সম্ভাবনাও নেই। মারইয়াম) বলতেন, আল্লাহ তাআলার কাছ থেকে (অর্থাৎ আল্লাহ তাআলার কাছে যে অদৃশ্য ধনভাণ্ডার রয়েছে, তা থেকে)। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা যাকে ইচ্ছা অকল্পনীয় রিজিক দান করেন। (যেমন এ ক্ষেত্রে শুধু অনুগ্রহবশতঃ বিনাশ্রমে দান করলেন)। (তাফসিরে মারেফুল কুরআন)

হজরত জাকারিয়া আলাইহিস সালামের অভিভাবকত্ব লাভ
মারইয়ামের মা তার মানত অনুযায়ী নিজ মেয়েকে বায়তুল মুকাদ্দাসের খেদমে উৎসর্গ করেন। হজরত জাকারিয়া আলাইহিস সালাম ছিলেন মারইয়ামের খালু এবং সে সয়ের পয়গাম্বর। তাই সর্বোত্তম অভিভাবক ও তত্ত্বাবধায়ক হওয়ার জন্য তিনিই উপযুক্ত ছিলেন। যদিও অনেকেই মারইয়ামের লালন-পালনে আগ্রহী ছিলেন। মারইয়ামের আর্থিক প্রয়োজন এবং শিক্ষা ও নৈতিক তরবিয়তের সব দাবি পূরণের সঠিক যত্ন নেয়া কেবল হজরত জাকারিয়া আলাইহিস সালামের পক্ষেই সম্ভব ছিল।

আয়াতে উল্লেখিত মেহরাব বলতে মারইয়াম-এর জন্য নির্ধারিত বায়তুল মুকাদ্দাসের পাশ্ববর্তী একটি ঘর। আর আয়াতে উল্লেখিত রিজিক বলতে ফল-মূলকে বুঝানো হয়েছে। এ রিজিক তথা ফল-মূল সম্পর্কে তথ্য এসেছে যে, এ ফলগুলো ছিল অসময়ের। অর্থাৎ গ্রীষ্মের ফল শীতে আর শীতের ফল গ্রীষ্মে মৌসুমে তার ঘরে বিদ্যমান থাকতো।

আর এ ফলগুলো হজরত জাকারিয়া আলাইহিস সালাম তার জন্য আনতেন না আবার অন্য কেউও তা আনতেন না। তাই হজরত জাকারিয়া আলাইহিস সালাম তাঁকে ফল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতেন যে, এগুলো কোথা থেকে এসেছে?

মারইয়াম বলতেন, এ ফল আল্লাহর পক্ষ থেকে। আর এটা ছিল মারইয়ামের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে অলৌকিক ব্যাপার (কারামত)। (তাফসির আহসানুল বয়ান)

বিপরীত মৌসুমের এসব ফল-ফলাদি ছিল মারইয়ামের জন্য মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে অকল্পনীয় রিজিক ও নেয়ামত। আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রিয় বান্দাদের এভাবেই রিজিক দিয়ে থাকেন।

এমএমএস/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।