প্রতি ৫০ জন হজযাত্রীর জন্য একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ১১:১৪ এএম, ২৯ জুলাই ২০২০
ফাইল ছবি

সুদীর্ঘ নয় দশকের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মাত্র ১০ হাজার হজযাত্রী নিয়ে আজ বুধবার থেকে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। পবিত্র হজে মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রতিরোধে প্রতি ৫০ জন হজযাত্রীর জন্য একজন করে চিকিৎসক নিয়োগ দিয়েছে সৌদি সরকার।

নিয়োগপ্রাপ্ত দক্ষ ও অভিজ্ঞ চিকিৎসক নেতা তার অধীনে থাকা হজযাত্রীদের হজকালীন সকল সতর্কতা ও করোনা প্রতিরোধের সব ধরনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করবেন। মিনা, আরাফাহ ও মুজদালিফায় নির্দিষ্ট সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ও বিভিন্ন পবিত্র স্থানসমূহ পরিদর্শনকালে শারীরিক সুস্থতার বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।

সৌদি প্রেস এজেন্সির বরাত দিয়ে দেশটির জাতীয় দৈনিক সৌদি গেজেটে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়।

মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে এবার সীমিত পরিসরে হজ পালিত হবে। মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) রাত থেকেই হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। হজযাত্রীরা আজ বুধবার মিনায় অবস্থান করবেন। বৃহস্পতিবার আরাফাতের ময়দানে অবস্থান গ্রহণের মাধ্যমে হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে।

হজ পালনের জন্য সমবেত ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা গতকাল সন্ধ্যার পরপরই পবিত্র মসজিদুল হারাম (কাবা শরিফ) থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে মিনায় পৌঁছেন। সেলাইবিহীন দুই টুকরা সাদা কাপড় পরে হজের নিয়তে তাদের মুখে ছিল ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাকা (আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই , সব সাম্রাজ্যও তোমার)। মিনার খিমায় (তাঁবু) রাত কাটান তারা।

হজযাত্রীরা আজ মিনাতেই নিজ নিজ তাঁবুতে নামাজ আদায়সহ অন্যান্য ইবাদত পালন করবেন। আগামীকাল ভোরে ফজরের নামাজ আদায় করে মিনা থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে আরাফার ময়দানে যাবেন এবং সূর্যাস্ত পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করবেন। এরপর সেখান থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে মুজদালিফায় গিয়ে রাতযাপন এবং জীবাণুমুক্ত পাথর সংগ্রহ করবেন। ভোরে ফজরের নামাজ আদায় করে মুজদালিফা থেকে মিনায় ফিরবেন।

হাজিরা বড় শয়তানকে পাথর মারবেন, কোরবানি দেবেন, মাথা মুণ্ডন বা চুল ছেঁটে মক্কায় গিয়ে কাবা শরিফ তাওয়াফ করবেন। তাওয়াফ, সাঈ শেষে আবার মিনায় ফিরে ১১ ও ১২ জিলহজ (সৌদি আরবের তারিখ অনুযায়ী) পর্যন্ত অবস্থান করবেন। সেখানে প্রতিদিন শয়তানকে তিনটি পাথর নিক্ষেপ করবেন তারা।

প্রত্যেক শয়তানকে সাতটি করে পাথর মারতে হয়। প্রথমে জামারায় সগির বা ছোট শয়তান, তারপর জামারায় ওস্তা বা মেজ শয়তান, এরপর জামারায় আকাবা বা বড় শয়তানকে মারতে হয় পাথর।

বৈশ্বিক বিপর্যয় সৃষ্টিকারী মহামারি করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) থেকে রক্ষা পেতে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে সৌদি সরকার। হজের জন্য মনোনীতদের প্রত্যেকের করোনা পরীক্ষা করানো হয়েছে। হজ শুরুর আগেই দুই ধাপে কোয়ারেন্টাইনে থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। হজে অংশগ্রহণকারী ও আয়োজকদের বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। রোগ প্রতিরোধ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুসারে এ বছর হজের সময় কাবা শরিফ স্পর্শ বা চুম্বন নিষিদ্ধ থাকবে। হজের প্রতিটি কাজে একজন থেকে অন্যজনের শারীরিক দূরত্ব থাকবে ১.৫ মিটার (পাঁচ ফুট)। তাওয়াফ, নামাজ, সাঈ প্রতিটি কাজেই এই দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। এছাড়া মিনা, আরাফাহ ও মুজদালিফায় ২ আগস্ট পর্যন্ত হাজিদের জন্য অবস্থান নির্ধারিত থাকবে।

দীর্ঘ ৯০ বছরের মধ্যে এবারই প্রথম সৌদি আরবের বাইরে থেকে হজযাত্রী আসা ছাড়া এত ছোট পরিসরে হজ পালিত হচ্ছে। তবে বিভিন্ন সময় যুদ্ধ-বিগ্রহ, বন্যা ও অন্যান্য কারণে ৪০ বারের মতো হজ বন্ধ ছিল।

এমইউ/এসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।