বিশ্ববিখ্যাত ক্বারি মোস্তফা ইসমাইলের দূর্লভ আজান
আজান শুনতে কার না ভালো লাগে? মুমিন মুসলমানের হৃদয়ে অনন্য প্রশান্তি দান করে এ আজান। মিসরের বিখ্যাত ক্বারি শায়খ মোস্তফা ইসমাইলের কণ্ঠে রেকর্ডকৃত আজান এখনও মুমিন হৃদয়কে অবচেতন করে দেয়।
আরবি সুরের জননী শায়খ ক্বারি মোস্তফা ইসলামইলের কণ্ঠে রেকর্ড করা আজানটি সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। যা তিনি ১৯৫৮ সালে বর্তমান সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের ঐতিহ্যাবহী 'মসজিদ আল-আময়িল কাবির-এ আজানটি পরিবেশন করেছিলেন। তার বিখ্যাত সে আজানটি মুমিন মুসলমানের জন্য তুলে ধরা হলো-
আজান নিয়ে যুগে যুগে অনেক কবি লেখেছেন অনেক ছড়া, কবিতা ও গান। আজানের সূরে মুগ্ধ হয়ে মহাকবি কায়কোবাদ 'আজান' অসাধারণ এক কবিতা লেখেছেন। যা মানুষ স্মরণ করবে শতাব্দীর পর শতাব্দী। সে কবিতার শুরু হয়েছে এভাবে-
'কে ওই শোনাল মোরে আযানের ধ্বনি।
মর্মে মর্মে, সেই সূর, বাজিল কি সুমধুর
আকুল হইল প্রাণ, নাচিল ধমনী।
কি মধুর আযানের ধ্বনি।
আমি তো পাগল হয়ে সে মধুর তানে,
কি যে এক আকর্ষণে, ছুটে যাই মুগ্ধ মনে
কি নিশীথে, কি দিবসে মসজিদের পানে।
হৃদয়ের তারে তারে, প্রাণের শোনিত ধারে,
কি যে এক ঢেউ উঠে ভক্তির তুফানে-
কত সুধা আছে সেই মধুর আযানে।'
দূর্লভ এ আজান পরিবেশনকারী শায়খ ক্বারি মোস্তফা মুহাম্মদ মুরসি ইসমাইল ১৯০৫ সালের ১৭ জুন মিসরের তানতার মিতগজল নামক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। দাদার কাছে কুরআনের হাতে খড়ি। ছোটবেলা থেকেই তিনি কুরআনের প্রতি দুর্বল ছিলেন। ১০ বছর বয়সেই তিনি কুরআন মুখস্ত করেন। ইসলামি আইন শাস্ত্রের পাশাপাশি তিনি কুরআনের উচ্চতর গবেষণায় নিজেকে নিয়োজিত রাখেন।
কুরআন তেলাওয়াতের সাধনা ও ভালোবাসায় মিসরের সমকালীন বড় বড় ক্বারি আব্দুল বাসিত, মিনশাওয়ি, আল-হুসারিদের কাতারে নিজেকে তুলে ধরেন।
তিনি ১৯৫৮ সালে আরব উপদ্বীপ বর্তমান সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক সফর করেন। সে সময় রাজধানী দামেস্কের ঐতিহ্যবাহী 'মসজিদ আল-আময়িল কাবির'-এ মুমিনের হৃদয়ে ঢেউ তোলা দূর্লভ এ আজান পরিবেশন করেন। যা বিশ্বের সব মুমিন মুসলমানের হৃদয়কে আবেগে আপ্লুত করে তোলে। তার আজানের সুর মুমিন মুসলমানের হৃদয়, শিরা-উপশিরা নেচে ওঠে।
বিশ্ব বিখ্যাত ক্বারি শায়খ মোস্তফা মুহাম্মাদ মুরসি ইসমাইল সারাজীবন কুরআনের খেদমতেই নিজেকে উৎসর্গ করেন। তার ছেলে শায়খ ওয়াহিদ মোস্তফা বাবার স্মৃতিচারণ করেন বলেন-
'তৎকালীন সময়ে বিশ্ব বিখ্যাত ক্বারি শায়খ রিফাতের সঙ্গে আমার বাবা শায়খ মোস্তফা ইসমাইলের ১০ মিটিন কুরআন তেলাওয়াতের সময়সূচি নির্ধারিত ছিল। কিন্তু শায়খ রিফাত তার তেলাওয়াতে এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে, ১০ মিনিটের স্থলে শায়খ মোস্তফা ইসমাইল একটানা ৮০ মিনিট কুরআন তেলাওয়াত করে সবাইকে মুগ্ধ করে দেন।'
বিশ্ববিখ্যাত কারী শায়খ মোস্তফা মুহাম্মদ মুরসি ইসমাইল ২৬ ডিসেম্বর ১৯৭৮ খিস্টাব্দে ইন্তেকাল করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন।
আল্লাহ তাআলা বিশ্ববিখ্যাত ক্বারি শায়খ মোস্তফা মুহাম্মদ মুরসি ইসমাইলকে জান্নাতের সর্বোচ্চ মাকাম দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জেআইএম