নবিজির জবানে কুরআন তেলাওয়াত শুনলেই যে প্রতিক্রিয়া হতো...
ঐশী বাণী। মহাগ্রন্থ আল-কুরআনুল কারিম। এটি মানুষের রচিত কোনো কিতাব নয়। বহু চ্যালেঞ্জের পরও আরবের বিখ্যাত কবি-সাহিত্যিকরা এ মহাগ্রন্থের সমকক্ষ কোনো একটি ছোট আয়াতও রচনা করতে সক্ষম হয়নি। পরিশেষে এ কথা বলতে বাধ্য হয়েছে যে, 'লাইসা হাজা কালামুল বাশার'। অর্থাৎ এটি মানুষের রচিত কোনো কালাম বা কথা নয়।
প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন পবিত্র কুরআনুল কারিম তেলাওয়াত করতেন তখন আরবের অমুসলিম পণ্ডিতদের মাঝে দুই ধরনের প্রতিক্রিয়া প্রকাশ পেতো। তাদের এক শ্রেণী কুরআনের উচ্চ মর্যাদায় অভিভূত হয়ে ঈমান গ্রহণ করতেন।
>> তাদের প্রতিক্রিয়া ও বক্তব্য
কি অসাধারণ কথা!
এভাবে তো আমরা কখনও আরবি ব্যবহার করার কথা ভেবে দেখিনি!
এত অসাধারণ বাক্য গঠন, শব্দ নির্বাচন- এ তো আমাদের সবচেয়ে বিখ্যাত কবি সাহিত্যিকরাও করতে পারে না!
এমন কঠিন বাণী, এমন হৃদয় স্পর্শী করে কেউ তো কোনো দিন বলতে পারেনি!
এই জিনিস তো মানুষের পক্ষে তৈরি করা সম্ভব নয়!
এটা নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলার বাণী! আমি সাক্ষী দিচ্ছি- 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ...
আর এক শ্রেণীর অভিজাত পণ্ডিতরা ক্ষমতা হারানোর ভয়ে কুরআনের বাণীকে জাদু হিসেবে আখ্যায়িত করতেন। তবে এ বাণী যে মানুষের তৈরি নয় তাও স্বীকার করতেন। যে কারণে তারা রাতের আঁধারে লুকিয়ে লুকিয়ে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পবিত্র জবানিতে কুরআন তেলাওয়াত শুনতে যেতেন। তারা নিজেদের জীবনাচরণকে কঠিন মনে করতেন। কুরআনের বাণীকে সত্য মনে করেও তারা কঠিন বিরোধীতা করতেন।
>> তাদের বক্তব্য ও প্রতিক্রিয়া
সর্বনাশ, এটা নিশ্চয়ই জাদু!
এ জিনিস মানুষের পক্ষে বানানো সম্ভব নয়। এটা তো মনে হচ্ছে সত্যি সত্যিই কোনো দ্বৈব বাণী। কিন্তু এ জিনিস আমি মেনে নিলে তো আর-
- মদ খেতে পারবো না, জুয়া খেলতে পারাবো না, আমার দাস গুলোর সঙ্গে যা খুুশি তা করতে পারবো না।
- এ সব শুরু করলে আমার পরিবার আর গোত্রের লোকেরা আমাকে বের করে দেবে।
- আমার মান-সম্মান, সম্পত্তি চলে যাবে। যেভাবেই হোক তা আটকাতে হবে।
দাঁড়াও, আজকেই আমি আমার দলবল নিয়ে এই লোকটাকে...
যারাই প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পবিত্র জবানে কুরআনের তেলাওয়াত শুনে তা বিশ্বাস করেছেন তারাই দুনিয়া ও পরকালের সেরা মানুষে পরিণত হয়েছেন। আর যারা অস্বীকার করেছেন তারা হয়েছেন ধ্বংসপ্রাপ্ত।
এ কুরআনই সর্বযুগের সর্বকালের সেরা মুজিজা। আজও বিশ্বব্যাপী মানুষ কুরআনের মুজিজায় আকৃষ্ট। যা আমাদের মাঝে হুবহু সে ভাষা ও বর্ণে বিদ্যমান যেভাবে তা প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর নাজিল হয়েছিল।
আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমের এমন সব ঘটনা নাজিল করেছেন যা বহু যুগ আগে সংঘটিত হয়েছিল। আর তা পৃথিবীতে অবিশ্বাসীদের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ছিল সত্য জীবন ব্যবস্থা ইসলাম ও প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুয়তের অকাট্য দলিল।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআনের সেসব ঘটনাগুলো জেনে এবং কুরআনের বিধান মেনে জীবন পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন। কুরআনের সমাজ বিনির্মাণের তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমকেএইচ