যে বিশ্বাসে আলোকিত হয় মুমিন
আসমান ও জমিনের একচ্ছত্র অধিপতি, মহান আরশের মালিক, মহা শক্তিধর সুনিপুন স্রষ্ঠা, পরম দয়ালু অসীম করুনার আধার আল্লাহ তাআলার প্রতি ঈমান আনায়ন করা প্রতিটি মানুষের ওপর ফরজ। কোনো মানুষকে মুমিন হতে হলে সর্বপ্রথম আল্লাহর প্রতি ঈমান আনতে হয়। ঈমান ও মুমিনের বিষয়ে কুরআন ও হাদিসে রয়েছে বিশদ আলোচনা। জাগো নিউজে তার কিছু তুলে ধরা হলো-
ঈমান কি?
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তুমি আল্লাহ তাআলা, তাঁর ফিরিশতাগণ, আসমানী কিতাবসমূহ, রাসুলগণ, শেষ দিবসের প্রতি (আখিরাত) এবং ভাগ্যের ভালো-মন্দের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে। (মুসলিম)
তাহলে ঈমানের সংজ্ঞা হলো- উপরোক্ত বিষয়গুলো, মুখে বলা, অন্তরে বিশ্বাস করা এবং বাস্তবে অঙ্গ-প্রতঙ্গের মাধ্যমে সম্পাদন করা। আর এ কথা মনে রাখা যে, আনুগত্যের মাধ্যমে ঈমান বৃদ্ধি পায় এবং অবাধ্যতায় হ্রাস পায়। সুতরাং যারাই ঈমান আনে তারা হয় মুমিন।
সুতরাং মুমিনের পরিচয়...
প্রকৃত মুমিন তারাই যখন তাদের নিকট আল্লাহর নাম নেয়া হয়, তখন তাদের অন্তর কেঁপে ওঠে। আর যখন তাদের নিকট তাঁর (আল্লাহর কুরআনের) আয়াত পঠিত হয় তখন তাদের ঈমান বৃদ্ধি পায়। তারা তাদের প্রভুর ওপরই ভরসা করে। তারা নামাজ প্রতিষ্ঠা করে, এবং আমার দেয়া রুজি হতে (আল্লাহর পথে) খরচ করে। তারাই হলো সত্যিকারের মুমিন। (সুরা আনফাল : আয়াত ২-৪)
মুমিনের ঈমানের পাওয়ার এতবেশি যে, কোনো মুমিন পরিপূর্ণ ঈমানের অধিকারী হওয়া অবস্থায় কোনো ধরনে গুনাহের কাজে লিপ্ত হয় না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ব্যাভিচারী পরিপূর্ণ ঈমানদার অবস্থায় ব্যাভিচারে লিপ্ত হতে পারে না। চোর পরিপূর্ণ ঈমানদার অবস্থায় চুরি করে না এবং মদ্যপায়ী পরিপূর্ণ ঈমানদার অবস্থায় মদপান করে না। (বুখারি ও মুসলিম) অর্থাৎ যখন মানুষের ঈমানের দুর্বলতা প্রকাশ পায় বা ঈমান দুর্বল হয়ে যায় তখনই মানুষ উক্ত গুনাহে লিপ্ত হতে পারে।
সুতরাং বুঝা যায়, আল্লাহ, ফিরিশতা, কিতাব, রাসুল, শেষ দিবস, ভাগ্যে ভালো-মন্দের ওপর ঈমান আনার মাধ্যমে একজন লোক পরিপূর্ণ মুমিন হয়। যখনই আল্লাহর নাম শুনে তখনই তার অন্তর কেঁপে ওঠে এবং কুরআনে তিলাওয়াত শুনলে তাঁর ঈমান বেড়ে যায়।
পরিশেষে...
ঈমানের স্বাদ লাভ করার পর প্রত্যেক মুমিনের উচিত, কুরআনের ভাষায়- হে লোকসব! তোমরা তোমাদের পালনকর্তা ইবাদাত কর, যিনি তোমাদিগকে এবং তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে সৃষ্টি করেছেন। যাতে তোমরা পরহেযগার হতে পার। যে পবিত্র সত্ত্বা তোমাদের জন্য জমিনকে বিছানা, আকাশকে ছাদস্বরূপ স্থাপন করেছেন। আর আকাশ থেকে পানি বর্ষণের মাধ্যমে তোমাদের জন্য ফল-ফসল উৎপাদন করেছেন তোমাদের খাদ্য হিসেবে। (সুরা বাক্বারা : আয়াত ২১-২২) হে আল্লাহ! আপনি আমাদেরকে পরিপূর্ণ ঈমানদার হয়ে আপনার পথে ও মতে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/পিআর