শাবান যে কারণে দোয়া কবুলের মাস

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:০৮ পিএম, ১৫ এপ্রিল ২০২০

হিজরি বছরের অষ্টম মাস শাবান। এ মাসকে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার নিজের মাস হিসেবে ঘোষণা করেছেন। বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মনোবাসনা পূর্ণ হওয়ার মাসও এটি। তাছাড়া বিশেষ দুটি কারণে শাবান মনের আশা পূরণের মাস।

যে মনোবাসনা পূরণের জন্য প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বার বার আকাশের দিকে ওহি নাজিল হওয়ার অপেক্ষায় তাকিয়ে থাকতেন। আর দোয়া কবুলের শর্ত দরূদের নির্দেশেনামূলক আয়াতটি এ শাবান মাসেই নাজিল হয়।

বায়তুল্লাহকে কেবলা হিসেবে পাওয়ার মাস
মহান আল্লাহ তাআলা সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মনোবাসনা পূরণে পবিত্র শাবান মাসেই আয়াত নাজিল করেন। আর তা ছিল কেবলা পরিবর্তনের নির্দেশ। আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘নিশ্চয়ই আমি তোমার আকাশের দিকে মুখ ফিরিয়ে দেখাকে লক্ষ্য করেছি, যে ক্বিবলা তুমি পছন্দ কর, আমি তোমাকে সেদিকে ফিরে যেতে আদেশ করছি। তুমি মাসজিদুল হারামের দিকে মুখ ফিরাও এবং তোমরা যেখানেই থাক, ওরই দিকে মুখ ফিরাও; বস্তুতঃ যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের জানা আছে যে, ক্বিবলার পরিবর্তন তাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে প্রকৃতই সত্য এবং তারা যা করে আল্লাহ সে সম্পর্কে মোটেই গাফিল নন।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৪৪)

এ শাবান মাস শুধু মৌখিক অর্থে কাবা পরিবর্তনের মাসই নয়, বরং কাবা পরিবর্তনের মাধ্যমে মুসলিম জাতীয়তা ও ভ্রাতৃত্ববোধে উজ্জীবিত হওয়ার মাসও এটি। এসব কারণে আনন্দে উদ্বেলিত বিশ্বনবি শাবান মাসকে নিজের মাস হলে ঘোষণা দিয়েছেন।

কাবা পরিবর্তনের এ ঘটনা থেকেও বুঝা যায়, শাবান মাস শুধু বিশ্বনবির মাসই নয় বরং এটি ছিল তার মনোবাসনা পূরণের মাস। তাছাড়া এ মাসে বিশ্বনবি রহমত বরকত মাগফেরাত ও নাজাতের মাস রমজানের পরিপূর্ণ প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন।

সুতরাং বিশ্বনবির মনোবাসনা যে মাস পূর্ণ হয়েছে সে মাসটিতে এবং বিশ্বনবি যে মাসটিতে রমজানের প্রস্তুতি নিতেন, সেটি উম্মতে মুহাম্মাদির জন্যও মনোবাসনা পূর্ণ হওয়ার মাস এবং রমজনের রহমত বরকত মাগফেরাত ও নাজাত লাভের চূড়ান্ত প্রস্তুতির মাস।

মনোবাসনা পূরণে এ মাসে বিশ্বনবির সম্মান ও মর্যাদায় অন্যতম একটি আমল হতে পারে তার ওপর দরূদ ও সালাম পাঠানো। যে দরূদ ও সালাম না পড়লে বান্দার দোয়া আল্লাহর দরবারে পৌছে না।

রমজানের প্রস্তুতির এ মাসের বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি বেশি বেশি দরূদ পড়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাহলে দরূদ পাঠের মাধ্যমেই মুমিন বান্দার মনের একান্ত চাওয়াগুলো পূরণ হতে পারে।

দরূদ পড়ার নির্দেশের মাস
আশ্চর্যজনক হলেও শর্ত যে, বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি দরূদ পড়ার নির্দেশনার তাৎপর্যপূর্ণ আয়াতটিও এ শাবান মাসের নাজিল হয়। আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন-
নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা নবির প্রতি পরিপূর্ণ অনুগ্রহ নাজিল করেন, তাঁর ফেরেশতাগণ নবির জন্য অনুগ্রহের প্রার্থনা করে। হে মুমিনগণ! তোমরাও নবির জন্য দরূদ তথা অনুগ্রহ প্রার্থনা কর এবং যথাযথ শ্রদ্ধাভরে সালাম জানাও।’ (সুরা আহজাব : আয়াত ৫৬)

শাবান বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্য এক অনন্য মাস। আর এ মাসের বিশ্বনবি রমজানের প্রস্তুতি ও তার প্রতি অসংখ্য নেয়ামতের জন্যই তিনি বেশি বেশি ইবাদত বন্দেগি করতেন।

সুতরাং উম্মতে মুহাম্মাদির উচিত, প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসরণ ও অনুকরণে তার প্রতি বেশি বেশি দরূদ পড়ার পাশাপাশি ইবাদত-বন্দেগির অনুশীলন করে রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণ করা।

মহামারি করোনাসহ যাবতীয় বিপদ ও রোগ-ব্যধি থেকে মুক্তি লাভে তাওবাহ-ইসতেগফারসহ বেশি বেশি দোয়া করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে বেশি বেশি দরূদ পাঠ ও ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে শাবান মাসের দিনগুলো অতিবাহিত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।