তরুণদের প্রতি রহমতের ছায়া


প্রকাশিত: ০৬:০০ এএম, ০২ অক্টোবর ২০১৫

যৌবনের ইবাদাত আল্লাহর দরবারে কবুল হয়। কারণ তরুণ সমাজের মাঝে এক ধরনের কামনা, বাসনা ও হতাশা কাজ করে। বয়ঃসন্ধিক্ষণে যারা নিজেদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, তারাই সফলকাম। এ বয়সে নিজেকে নির্মল ও সচ্চরিতের নমুনা তৈরি করতে কুরআন ও হাদিসের জ্ঞান একান্ত আবশ্যক। এ আল্লাহ তাআলা বান্দাকে তার রহমত হতে নিরাশ না হওয়ার আহ্বান করেছেন। আল্লাহ্ তায়ালা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে উদ্দেশ্য করে বলছেন- قُلْ يَا عِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَى أَنفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوا مِن رَّحْمَةِ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ  (হে রাসূল!) আপনি বলুন, হে আমার বান্দাগণ! যারা নিজেদের উপর যুলুম করেছ, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গোনাহ মাফ করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরা যুমার : আয়াত ৫৩)

আমাদেরকে অবশ্যই স্বীকার করতে হবে, যে ব্যক্তি আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের ওপর বিশ্বাস করে, সে যতো খারাপ কাজই করুক জন্মগতভাবে সে সম্পূর্ণভাবে মন্দ হতে পারে না এবং বড় ধরনের পাপ করলেও সে একেবারে ঈমানশূন্য হয়ে যায় না, যতোক্ষণ না সে ইচ্ছাকৃত আল্লাহ্ কে অস্বীকার করে ও তাঁর আদেশ অবজ্ঞা করে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পাপাচারীকে চিকিৎসকের দৃষ্টিতে দেখতেন। অসুস্থ ব্যক্তির যেমন চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।

এ প্রসঙ্গে একটি হাদিসের উল্লেখ করা যায়-
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- এর কাছে এক কুরাইশি যুবক ব্যভিচারের অনুমতি চাইল। সাহাবায়ে কেরাম রাগান্বিত হয়ে তাকে শাস্তি দিতে উদ্যত হলেন; কিন্তু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দৃষ্টিভঙ্গি ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। তিনি শান্ত চিত্তে যুবকটিকে তাঁরে আরো নিকটে আসতে বললেন। তারপর বললেন, “তুমি কি তোমার মায়ের জন্যে এটা (ব্যভিচার) মেনে নেবে? যুবকটি জবাব দিল, ‘না’, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘(অন্য) লোকেরাও এটা তাদের জন্যে অনুমোদন করবে না।’  অতঃপর তিনি বারবার যুবককে জিজ্ঞেস করলেন সে তার কন্যা, বোন ও চাচীর জন্যে (ব্যভিচার) অনুমোদন করবে কিনা? প্রতিবারই যুবক বলল, ‘না’, এবং প্রতিবারই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘(অন্য) লোকেরাও এটা তাদের জন্য অনুমোদন করবে না।” তারপর তিনি যুবকটির হাত ধরে বললেন, ‘আল্লাহ্ তার (তরুণের পাপ মার্জনা করুন, তার অন্তর পবিত্র করুন এবং তাকে সহিষ্ণু করুন (তার এই কামনার বিরুদ্ধে)।’ (মুসনাদে আহমদ, তাবরানি)

পরিশেষে...
উপরোক্ত আয়াত ও হাদিসের আলোকে আল্লাহর বান্দা ও রাসূলের উম্মতের জন্যে আল্লাহ্‌র উদ্বেগ ও দয়ার চিত্রই ফুটে উঠেছে। তাই পরবর্তী আয়াতে আল্লাহ বলেন- وَأَنِيبُوا إِلَى رَبِّكُمْ وَأَسْلِمُوا لَهُ مِن قَبْلِ أَن يَأْتِيَكُمُ الْعَذَابُ ثُمَّ لَا تُنصَرُونَ  অর্থাৎ ‘তোমরা তোমাদের পালনকর্তার অভিমূখী হও এবং তাঁর আজ্ঞাবহ হও তোমাদের কাছে আযাব আসার পূর্বে। এরপর তোমরা সাহায্যপ্রাপ্ত হবে না। (সূরা যুমার : আয়াত ৫৪) আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সব অন্যায় থেকে হিফাজত করুন। সঠিক পথে ধাবিত হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

জাগো ইসলামে লেখা পাঠাতে ই-মেইল : [email protected]

জাগোনিউজ২৪.কমের সঙ্গে থাকুন। কুরআন-হাদিস মোতাবেক আমলি জিন্দেগি যাপন করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করুন। আমিন, ছুম্মা আমিন।

এমএমএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।