মুসলিম নারীর জমি ফেরত দিতে গির্জা ভাঙার নির্দেশ দিলেন আদালত
৭৭ বছরের বৃদ্ধা মুসলিম নারী ফাতা অলিভিচ। তার বাড়ির বাগানে অবৈধভাবে জোরপূর্বক নির্মাণ করা হয় গির্জা। বৃদ্ধার নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে দীর্ঘ ২০ বছর পর গির্জা ভেঙে মুসলিম নারীর জমি ফিরিয়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ইউরোপীয় আদালত।
তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘ইয়ানি শাফাক’-এর তথ্য মতে জানা যায়, ১৯৯২-১৯৯৫ সালে বসনিয়া-হার্জেগোভিনায় যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে জোরপূর্বক এ বৃদ্ধা নারীকে তার বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়।
তারপর এ বৃদ্ধা মুসলিম নারীর বাড়ির বাগানে সার্বিয়ার এক নাগরিক অবৈধভাবে জোরপূর্বক গির্জা নির্মাণ করে বসে। ইউরোপের আদালত অবৈধভাবে নির্মিত এ গির্জা আগামী ৯০ কর্মদিবসের মধ্যে ভেঙে নির্দেশ দেয়।
বসনিয়া হার্জেগোভিনার যুদ্ধ চলাকালীন সময় পর্যন্ত দেশটির শ্রাবিনিসা উপশহরে স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে বসবাস করতে ওই মুসলিম নারী। ১৯৯৫ সালে এ উপশহরে ঘটে যাওয়া গণহত্যাও তিনি স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করেছেন।
ফাতা অলিভিচ-এর স্বামী সাজির অলিভিচ বসনিয়া-হার্জেগোভিনার এ যুদ্ধে মারা যান। স্বামী ছাড়াও তার ২২ জন আত্মীয় এ যুদ্ধে মারা যান। স্বামী ও আত্মীয়-স্বজনের মৃত্যুর পরপরই তাকে বাপদাদার ভিটেমাটি ছেড়ে যেতে বাধ্য করা হয়।
১৯৯৯ সালে যুদ্ধের পর ফাতা অলিভিচ তার বাড়ি ফিরে এসে দেখেন, তার বাড়ির বাগানে সার্বিয়ান এক ব্যক্তি তাকে না জানিয়েই নির্মাণ করেছেন গির্জা।
ফাতা অলিভিচ আইনি লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নেন এবং আদালতের দারস্থ হন। যদিও গির্জা নির্মাণকারী ব্যক্তিরা তাকে জমির মূল্য ফেরত দিতে চেয়েছেন। কিন্তু এ বৃদ্ধা নারী জমির মূল্য পরিশোধের এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।
দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর ইউরোপীয় আদালতের নির্দেশে বৃদ্ধা মুসলিম নারী ফাতা অলিভিচ নিজ জমি থেকে গির্জা ভেঙে জমি ফেরত দেয়ার রায় পেলেন।
উল্লেখ্য যে, বসনিয়া-হার্জেগোভিনার যুদ্ধে সার্বিয় বাহিনী ব্যাপক গণহত্যা চালায়। জাতিসংঘের তথ্য মতে, ‘যুদ্ধে ৩ লাখেরও বেশি মুসলিমকে নির্মমভাবে হত্যা করে সার্বিয় বাহিনী।
এমএমএস/এমকেএইচ