ভারতে মুসলিম শিক্ষার্থীদের জন্য মমতার নির্দেশনা

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:০৪ এএম, ৩০ জুন ২০১৯

ভারতে উদার মানবতাবাদী নেতা-নেত্রীদের মধ্যে মমতা ব্যানার্জি একজন। রাজ্যের কোথাও কোনো ধরনের হিন্দু-মুসলিম সম্প্রতি নষ্ট হোক কিংবা মুসলিমদের প্রতি জুলুম হোক এ ব্যাপারে মমতা ব্যানার্জিসহ পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার সতর্কতা অবলম্বন করেন।

সম্প্রতি মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকার তাদের স্কুলগুলোতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের তথা মুসলিম শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা ডাইনিং রুম রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি বরাবরই মুসলিমদের অধিকারের প্রতি সজাগ। পশ্চিমঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালে এমনটিই দেখে যাচ্ছে। গত রমজানেও বিভিন্ন প্রতিবাদ ও নিন্দাকে উপেক্ষা করে তিনি মুসলিমদের অনেক অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছেন। ঈদের মাঠে গিয়ে মুসলমানদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যনার্জি বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহারের যেসব সরকারি স্কুলে মুসলিম শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ৭০ শতাংশেরও বেশি সেখানে মুসলিমদের জন্য আলাদা ডাইনিংয়ের ব্যবস্থা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

মমতা বন্যার্জির নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকারের এ নির্দেশনায় বলা হয়, রাজ্য সরকারি অথবা সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলোরে মধ্যে যেগুলেঅতে ৭০ শতংশের বেশি সংখ্যালঘু শিক্ষার্থী রয়েছে, তারা যেন তাদের একটি তালিকা রাজ্য সরকারের কাছে পাঠান।

তাতে ওই স্কুলগুলোতে মিড-ডে মিল পরিবেশন করার জন্য একটি আলাদা খাওয়ার ঘর তৈরির বিষয়েও প্রস্তাব পাঠানোর কথা বলা হয়েছে।

ইতোমধ্যে মমতা ব্যনার্জির নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকার বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগ তুলছে বিরোধীরা। এ নির্দেশনা নিয়ে তুমুল বিরোধিতা করে চলেছেন পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

তিনি বলেন, ‘ ‘উদ্দেশ্য প্রণোদিত’। তার প্রশ্ন ‘ধর্মের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কেন এ বিভেদ করা হচ্ছে? এই পৃথকীকরণের পেছনে কি কোন বিশ্বাসঘাতকতামূলক উদ্দেশ্য রয়েছে? এটা কি আরেকটি ষড়যন্ত্র?

অন্য দিকে মুসলিমদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট এ বিষয়টি নিয়ে সিপিআইএম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী জানান, ‘এ ঘটনার নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। শিক্ষার্থীদের ধর্মের ভিত্তিতে ভাগাভাগি করা উচিত নয়। যদি ডাইনিং হল তৈরি করাই হয়, তবে তা সকলের জন্য করা উচিত। মিড-ডে মিল প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্যই হল সবার জন্য সমান।

তবে রাজ্য সরকারের এ নির্দেশের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রী গিয়াসুদ্দিন মোল্লা জানান, ‘এটা রাজ্যের সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয়ের চলমান প্রকল্প। তার অভিমত নতুন ভাবে তৈরি করা খাবারের ঘরগুলো কেবলমাত্র মুসলিমই নয়, সব শিক্ষার্থীদেরই সুবিধা হবে।’

উল্লেখ্য যে, ভারতের ১৭তম লোকসভা নির্বাচনের পর আশঙ্কাজনক হারে মুসলিম সংখ্যালঘু নির্যাতন বেড়ে চলেছে। কিছু কিছু রাজ্যের মুসলিমরা নির্বাচনের পরে ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। আবার বিভিন্ন রাজ্যে চরম অস্থিরতা ও অত্যাচার-নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে। কিছু কিছু রাজ্যে মুসলিমদেরকে ভোটার তালিকা থেকেও বাদ দেয়ার মহাপরিকল্পনা চলছে। আর সেসব জায়গায় মুসলিম সংখ্যালঘুরা চরম আতঙ্কে দিনযাপন করছে।

এমএমএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।