নির্যাতিত মুসলিমদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডার ভূমিকা কী হবে?

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:২৬ এএম, ৩১ মার্চ ২০১৯

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুই মসজিদে ভয়াবহ হামলায় ৫০ জন মুসল্লি নিহত হওয়ার দুই সপ্তাহ পর চীন সফরে যাচ্ছেন মুসলিমদের প্রতি আন্তরিক নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্দা আরডার্ন। চীন সফরকালে সে দেশের নির্যাতিত উইঘুর মুসলিমদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী জাসিন্দার ভূমিকা কী হবে? এ প্রশ্ন এসেই যায় যে, তিনি কি নিজ দেশের মতো সেখানে শান্তি ও মানবতার কথা অব্যাহত রাখবেন?

নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর উপলক্ষে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানায়, ক্রাইস্টচার্চে হামলার পর জাসিন্দা আরডার্ন যেভাবে মুসলমানদের অধিকার বিষয়ে সুস্পষ্ট অবস্থান নিয়েছে, বেইজিংয়েও তার এ অবস্থানের পুণরাবৃত্তি করা উচিত এবং সময়ের দাবি।

তাই শান্তি ও মানবতার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’ মুসলিম নির্যাতনের বিষয়ে চীনের কাছে জবাবদিহিতা চাইতে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্দা আরডার্নের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

চীন সরকার তার দেশে ১০ লাখ উইঘুর মুসলিমকে বন্দিশিবিরে আটকে রেখে নির্যাতন, ধর্মান্তর এবং মুসলিম তরুণীদেরকে জোরপূর্বক অমুসলিমদের কাছে বিবাহ বসতে বাধ্য করছে বলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর রিপোর্টে ওঠে এসেছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্দা আরডার্নকে অনুরোধ জানিয়েছে, বন্দিশিবিরে আটক মুসলিমদের নির্যাতন বন্ধ এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের শিনজিয়াং প্রদেশে যাওয়ার অনুমতি প্রদানে তিনি যেন চীন সরকারের কাছে জোরাল দাবি জানান।

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কমিটি গত বছরের আগস্টে জানিয়েছিল যে, চীন সরকার দেশটির ১০ লাখ উইঘুর মুসলিমকে বন্দিশিবিরে আটকে রেখেছে। চীনের জাতিগত উইঘুর মুসলমানদের বেশিরভাগ সেদেশের শিনজিয়াং প্রদেশে বসবাস করেন। প্রদেশের শতকরা প্রায় ৪৫ ভাগ জনগোষ্ঠী উইঘুর সম্প্রদায়ের।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো জাতিসংঘের ওই কমিটির কাছে নানা তথ্যচিত্র তুলে ধরে দাবি করেছে, চীনা মুসলমানদেরকে বন্দিশিবিরে আটকে রেখে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করতে বাধ্য করা হচ্ছে।

উইঘুর মুসলমানদের আন্তর্জাতিক সংগঠন ওয়ার্ল্ড উইঘুর কংগ্রেস দাবি করে যে, উইঘুর মুসলিমদের তারা নির্যাতনের পাশাপাশি ঠিকভাবে খাদ্য সামগ্রীও সরবরাহ করছে না। তাদেরকে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির স্লোগান দিতে জোরপূর্বক বাধ্য করছে।

উল্লেখ্য যে, নিউজিল্যান্ডেরি ক্রাইস্টচার্চ মসজিদে হামলায় ৫০ জন মুসল্লি নিহত হয়। তাদের প্রতি সমবেদনা ও শান্তির লক্ষ্যে দেশটি ব্যাপক বাস্তব ও প্রতীকী কার্যক্রমে অংশ নেয়। যার ফলে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব নেতাদের কাতারে তার অবস্থান তৈরি করে নিয়েছে।

নিউজিল্যান্ডের মুসলিম দরদি প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন ক্রাইস্টচার্চ হামলার ২ সপ্তাহ পর চীন সফরে যাচ্ছেন। শান্তির লক্ষ্যে চীনের ১০ লাখ উইঘুর নির্যাতিত মুসলিমদের নিয়ে তার ভূমিকা কী হবে তা দেখতে তাকিয়ে আছে সারাবিশ্বের মুসলমান। আর মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দাবি তিনি চীনের কাছে জবাবদিহিতা ও শান্তিপূর্ণ সমাধানে যথাযথ ভূমিকা রাখবেন।

এমএমএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।