মুজদালিফা : কোটিপতি-ভিখারির পাশাপাশি রাত্রিযাপন

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা মক্কা থেকে
প্রকাশিত: ০১:৪৭ পিএম, ২৩ আগস্ট ২০১৮

বাসটিতে ঠাসাঠাসি হাজিদের ভিড় । দম বন্ধ হয় হয় দশা। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হলেও ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুণ হওয়ায় হাজিদের কেউই স্বাভাবিকভাবে দম ফেলতে পারছিলেন না। গরমে ঘেমে ভিজে সবাই একাকার। তবু কারও মুখে রা নেই। কারণ কিছুক্ষণ আগে তারা আরাফাত ময়দানে আল্লাহর কাছে অতীতের সকল অপরাধ ও কৃতকর্মের জন্য মাফ চেয়ে এসেছেন। এখন যাচ্ছেন মুজদালিফায়।

সৌদির মক্কা নগরীর নিকটবর্তী একটি সমতল এলাকার এ স্থানটি হজের সাথে সম্পর্কিত। মিনা ও আরাফাতের পথে মিনার দক্ষিণ-পূর্বে এর অবস্থান। আরাফাত ময়দান থেকে মুজদালিফার দুরত্ব খুব বেশি না। লাখ লাখ যাত্রী নিয়ে বাসটি চলছিল ধার গতিতে।

ঘণ্টাদুয়েক পর বাসটি মুজদালিফা পৌঁছালে এক অভাবনীয় দৃশ্য চোখে পড়ে। খোলা আকাশের নিচে ময়দানে ছোট-বড় কঙ্কর, বালুকণার মাঝে মাঝে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ কক্ষ ও টয়লেট। বাস থেকে নামার কয়েক মিনিটের মধ্যেই পুরো ময়দান মানুষে মানুষে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। খোলা আকাশের নিচে পাথুরে-বালু বিছানাতে শুয়ে থাকতে হয় সবাইকে। হোক না সে কোটিপতি, তারপরও তাকে থাকতে হবে এই পাথুরে বিছানায়। এখানে সবার পরিচয় একটাই-তারা আল্লাহর বান্দা। আর আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই এখানে সমবিত হয়েছেন।

hajj

সরেজমিনে দেখা গেছে, নারী, পুরুষ ও শিশু নির্বিশেষে সকলে পাথরের বিছানায় শুয়ে আছেন। মাহমুদ হাসান প্রিন্স নামে একজন হাজি জানান, দিনের গরমে পাথর এতটাই গরম হয়েছিল যে, ঘুমাতে গিয়ে মনে হচ্ছিল যেন জ্বলন্ত উনুনের ওপর শুয়ে আছি। সারা শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। বারবার মনে পড়ছিল সেই আমলে জনমানবশূন্য মরুভূমিতে কীভাবে নবীরা চলাফেরা করতেন।

সারারাত খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করে ফজরের নামাজের পর লাখো মানুষের কাফেলা ছুটে চলে শয়তানকে পাথর মারতে মিনার উদ্দেশে।

এমইউ/এসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।