পবিত্র মক্কা নগরীর মর্যাদা ও হাজিদের করণীয়

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:০০ পিএম, ১৬ জুলাই ২০১৮

সারা বিশ্ব থেকে মুসলিম উম্মাহ হজ ও ওমরাহ পালনে পবিত্র ভূমি মক্কায় গমন করেন। হজের সব রোকনগুলো মক্কায় অবস্থিত। দুনিয়ার সবচেয়ে দামি স্থান কাবা শরিফ তথা আল্লাহ ঘরও মক্কায় অবস্থিত। এ কারণেই পবিত্র ভূমি মক্কার সম্মান ও মর্যাদা অনেক বেশি।

হজ ও ওমরার রোকনগুলোতে করণীয় কাজ শ্রদ্ধা ও সম্মানের সঙ্গে আদায় করতে হয়। পবিত্র ভূমি মক্কার মর্যাদা ও সম্মান এত বেশি যে, সেখানে কোনো প্রকার অশান্তিমূলক কার্যক্রমই বৈধ নয়।

মক্কা বিজয়ের পরের দিন প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক হাদিসে পবিত্র মক্কা নগরীর মর্যাদা ও সম্মানের প্রতি লক্ষ্য রেখে সেখানে রক্তপাতমূলক কাজ থেকে বিরত থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। প্রিয়নবির এ সংবাদ যুগ যুগ ধরে মানুষের কাছে পৌছে দেয়ার আহ্বানও তিনি করেছিলেন।

পবিত্র ভূমি মক্কা নগরীর সম্মান ও মর্যাদা রক্ষার কথা প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে পাকে সুস্পষ্ট ভাষায় তুলে ধরেছেন-

হজরত আবু শুরাইহ্ আল-আদাওবি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, যখন মদিনার গভর্নর আমর ইবনু সাঈদ (হজরত আবদুল্লাহ ইবনে যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহুর বিরুদ্ধে) মক্কায় সৈন্যবাহিনী পাঠাচ্ছিলেন, তখন তিনি (হজরত শুরাইহ্) তাকে বললেন, ‘হে আমির! আমাকে একটি হাদিস বর্ণনা করার অনুমতি দিন।

মক্কা বিজয়ের পরের দিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা বর্ণনা করেছিলেন। তখন তা আমার কান শুনেছিল, আমার হৃদয় তা সংরক্ষণ করেছিল, চোখ তা দেখেছিল।

তিনি আল্লাহর প্রশংসা ও গুণগান করলেন অতঃপর বললেন-
‘মক্কাকে আল্লাহ তাআলা ‘হারাম’ ঘোষণা করেছেন, কোনো মানুষ ‘হারাম’ করেনি। অতএব আল্লাহ তাআলা ও আখেরাতের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, তার জন্য (মক্কায়) রক্তপাত করা বা এখানের কোনো বৃক্ষ কাটা বৈধ নয়।

যদি কোনো লোক রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মক্কা বিজয়ের প্রশ্ন তোলে এখানে কোনো ধরনের যুদ্ধাভিযান বা আক্রমণের চিন্তা করে, তবে তাকে বলে দেবে যে, আল্লাহ তাআলা তাঁর রাসুলকে বিশেষভাবে অনুমতি দিয়েছিলেন; তোমাকে এর (যুদ্ধাভিযানের) অনুমতি দেন নি। শুধু দিনের কিছু সময়ের জন্য তিনি আমাকে অনুমতি দিয়েছিলেন।

যেমনিভাবে গতকাল তা (এ স্থানে যুদ্ধ-বিগ্রহ-রক্তপাত) হারাম ছিল, আজও তা হারাম। তোমাদের উপস্থিত লোক যেন অনুপস্থিত লোকের কাছে তা পৌছে দেয়।।’ (বুখারি ও মুসলিম, তিরমিজি)

মদিনার গভর্নর আমর ইবনু সাঈদ হাদিস কি বলেছিলেন প্রশ্নের উত্তরে হজরত আবু শারাইহ্ বললেন, ‘সে বলেছিল, হে আবু শুরাইহ্! আমি এ হাদিস প্রসঙ্গে আপনার চেয়ে বেশি অবগত। কোনো পাপী, পলাতক অপরাধী ও পলাতক খুনিকে হারাম শরিফ আশ্রয় দেয় না।’

সুতরাং মক্কা ও মদিনায় গমনকারী আল্লাহর মেহমানদের কর্তব্য হলো পবিত্র ভূমি মক্কার যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা রক্ষা করা। যাতে কোনোভাবেই মক্কা ও মদিনার হারামের কোনো অসম্মান না হয়।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হজ ও ওমরাহ পালনে পবিত্র ভূমি মক্কার যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা রক্ষা করার তাওফিক দান করুন। মদিনার হারাম এলাকার মর্যাদাও অক্ষুন্ন রাখার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।