রোজাদার নারী-পুরুষের স্বপ্নদোষ হলে কী করবেন?
স্বপ্নদোষ প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষ উভয়ের হতে পারে। ঘুমের মধ্যে মানুষের বীর্জপাতের ঘটনাই হলো স্বপ্নদোষ। এটাকে ‘ভেজাস্বপ্ন’ও বলা হয়ে থাকে। রোজা অবস্থায় নারী-পুরুষের স্বপ্নদোষ হলে করণীয় কি? অনেকেই তা জানতে লজ্জাবোধ করেন।
অনেকেই মনে করে থাকেন যে, স্বপ্নদোষ হলে রোজা ভেঙে যায়। লজ্জার কারণে অনেকে এ বিষয়টি কারো কাছে জানতে না চেয়ে রোজা ভেঙে গেছে মনে করে দিনের বেলায় খাবার গ্রহণ করে থাকে।
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ সম্পর্কে সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন। আর তাহলো-
হাদিসের বর্ণনায় এসেছে, তিনটি কারণে রোজা ভাঙে না-
>> বমি করলে; তা অল্প কিংবা বেশি হোক;
>> শিঙ্গা লাগানো। রোগের জন্য শরীরে শিঙ্গা লাগালে রোজার কোনো ক্ষতি নেই।
>> স্বপ্নদোষ। নারী হোক কিংবা পুরুষ রোজা রাখা অবস্থায় দিনের বেলায় স্বপ্নদোষ হলে রোজার কোনো ক্ষতি হবে না। (মুসনাদে বাযযার, মাজমাউয যাওয়ায়েদ তিরমিজি, বাইহাকি)
সুতরাং রোজা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে রোজা ভেঙে যায় ভেবে খাওয়া-দাওয়া করা ঠিক নয়। এটা মারাত্মক ভুল ও অন্যায়। এ অবস্থায় রোজা ভেঙে ফেললে তা পুনরায় আদায় করতে হবে।
তবে স্বপ্নদোষে পবিত্রতা অর্জনের ক্ষেত্রে অজু বা নাভীর নিচ থেকে পা পর্যন্ত ধোয়াই যথেষ্ট নাকি গোসল করতে হবে। এ ব্যাপারেও রয়েছে সুস্পষ্ট বিধান-
উম্মুল মুমিনীন হজরত উম্মে সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, ‘সাহাবি আবু তালহা রাদিয়াল্লাহু আনহুর স্ত্রী উম্মে সুলাইম রাদিয়াল্লাহু আনহা প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আল্লাহ তাআলা সত্যের বিষয়ে নিঃসঙ্কোচ। কোনো নারীর যদি স্বপ্নদোষ হয় তবে তার ওপর কি গোসল ফরজ হয়?’
উত্তরে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘হ্যাঁ’, যদি সে পানি (ভেজা) দেখতে পায়।’ (বুখারি)
আরও পড়ুন > রোজার নিয়ত ও সাহরি-ইফতারের দোয়া
এ হাদিস থেকে বুঝা যায়-
>> ছেলেদের মতো মেয়েদেরও স্বপ্নদোষ হয়।
>> স্বপ্নদোষ হলে ছেলে-মেয়ে উভয়ের জন্যই গোসল করা ফরজ হয়।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর নারী-পুরুষ সবাইকে রোজা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে তাতে রোজা না ভেঙে হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী তা পূর্ণ করার তাওফিক দান করুন। পবিত্রতা অর্জনের ক্ষেত্রেও হাদিসের ওপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/আরআইপি