প্রকাশ্য ও গোপন দান সম্পর্কে কুরআনের ঘোষণা

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:২৩ পিএম, ৩১ মার্চ ২০১৮

সাদকা বা দান প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা আগের আয়াতে ঘোষণা করেছেন, নিয়ত যেমনই হোক সব দান সম্পর্কেই আল্লাহ তাআলা জানেন। পরবর্তী আয়াতে আল্লাহ তাআলা প্রকাশ্য এবং গোপন দানের ব্যাপারে আয়াত নাজিল করেছেন।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, নফল সাদকা গোপনে দান করলে তাতে ৭০ গুণ বেশি সাওয়াব লাভ হয়, পক্ষান্তরে ফরজ সাদকা তথা জাকাত প্রকাশ্যে আদায় করলে তাতে ২৫ গুণ বেশি সাওয়াব পাওয়া যায়।

বিশেষ করে দানের সাওয়াব লাভের পাশাপাশি গোনাহ মাফের ঘোষণাও আল্লাহ তাআলা এ আয়াতে প্রদান করেছেন। আয়াতে বলা হয়েছে-

Quran-inner

আয়াতের অনুবাদ

Quran-inner

আয়াত পরিচিতি ও নাজিলের কারণ
সুরা বাকারার ২৭১ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা মানুষের দান প্রকাশ্যে করতে যেমন বলেছেন তেমনি গোপনে দান করাকেও অতি উত্তম বলেছেন এবং দানের ফলে মানুষের গোনাহ মাফের ঘোষণাও দিয়েছেন।

ইমাম শাবি বর্ণনা করেন এ আয়াত হজরত আবু বকর ও হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমার দানের ব্যাপারে নাজিল হয়।

তাবুক যুদ্ধের সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুসলমানদেরকে যুদ্ধের জন্য সাহায্য দিতে বললেন। প্রত্যেক সাহাবিই সাধ্যমত দান করলেন। কিন্তু হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু তার সব সম্পদের অর্ধেক দান করলেন। হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু তার সর্বস্ব প্রিয়নবির সামনে পেশ করলেন।

প্রিয়নবি হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুকে জিজ্ঞাসা করলেন, হে ওমর! কি নিয়ে এসেছ? হজরত ওমর বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার যা কিছু ছিল তা সমান দু’ভাগ করে একভাগ আমার সন্তানদের জন্য রেখে এসেছি। আর বাকি অর্ধেক আল্লাহর রাহে ব্যয় করার জন্য নিয়ে এসেছি।

এবার প্রিয়নবি হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুকে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আবু বকর! কি নিয়ে এসেছ? তিনি উত্তরে বললেন, ‘আমার যা কিছু ছিল তার সর্বস্ব নিয়ে এসেছি। প্রিয়নবি বললেন, তোমার পরিবার-পরিজনের জন্য কি রেখে এসেছ? হজরত আবু বকর জানালেন, আল্লাহ এবং তাঁর রাসুলই আমার পরিবার-পরিজনের জন্য যথেষ্ট।

হজরত আবু বকরের এ কথা শুনে হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু কাঁদতে লাগলেন এবং বললেন, আল্লাহর শপথ! আমি যখনই যে কাজের ইচ্ছা করেছি, হে আবু বকর সিদ্দিক! তখনই আপনাকে অগ্রগামী পেয়েছি।

আলোচ্য আয়াতে যে সাদকার কথা বলা হয়েছে তা ফরজ সাদকাও হতে পারে বা নফল সাদকাও হতে পারে। জাকাত তথা সাধারণ সাদকা সবই এ আয়াতের অন্তর্ভূক্ত।

প্রকাশ্য সাদকা বা দান থেকে গোপন সাদকাই অতি উত্তম। আর সাদকা বা দানের ফলে আল্লাহ বান্দার গোনাহ মাফ করে দেন। সাদকার ফলে দানকারীর মর্যাদা বৃদ্ধি পায়।

প্রিয়নবি বলেছেন, ‘নিশ্চয় সাদকা বা দান পাপাচারের কারণে আল্লাহর গজবের যে আগুন সৃষ্টি হয় তাকে নিভিয়ে দেয়। (তিরমিজি)

আর আল্লাহ তাআলা দান-সাদকাসহ বান্দার সব কাজের বিষয়ে জানেন।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রকাশ্যে এবং গোপনে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে দান করার তাওফিক দান করুন। বিশেষ করে গোপনে দান করে অধিক সাওয়াব লাভের তাওফিক দান করুন। দানের মাধ্যমে গোনাহ থেকে মুক্তি এবং মর্যাদা বৃদ্ধির তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।