যাদের ওপর জাকাত আবশ্যক


প্রকাশিত: ০৭:২৩ এএম, ১১ জুলাই ২০১৫

জাকাত ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ। ঈমানের সাক্ষ্য এবং নামাজের পরেই জাকাতের স্থান। ইহা মুসলমানদের গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ইবাদত। এই ইবাদত পালনে কিছু নিয়ম-নীতি রয়েছে। জাকাতের ইবাদত সবার জন্য নয়। জাকাত যার ওপর ফরজ সেই জাকাত দেবে। আসুন জেনে নিই জাকাত ফরজ হওয়ার শর্তগুলো।

ক. মুসলমান;
খ. স্বাধীন;
গ. নিসাব পরিমাণ মালের মালিক হওয়া এবং তা বিদ্যমান থাকা;
ঘ. বছর পূর্ণ হওয়া;

মুসলমান :
জাকাত মুসলমানের মালী তথা সম্পদের ইবাদত; যা অমুসলিমদের কাজ নয়। জাকাতের নামে কোনো অমুসলিম দান করলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তা গ্রহণ করবেন না। কোরআনে আল্লাহ বলেন, তাদের সম্পদ ব্যয় শুধুমাত্র এ কারণে গ্রহণ করা হবে না যে, তারা আল্লাহ ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে কুফরি করেছে। (সূরা তাওবা : আয়াত ৫৪) পাশাপাশি এ কথা মনে রাখতে হবে কাফেরের উপর যাকাত ফরজ নয় এবং আদায় করলেও গ্রহণ করা হবে না এ কথার অর্থ এই নয় যে, পরকালে তাকে ক্ষমা করে দেয়া হবে; বরং তাকে এ জন্য শাস্তি দেয়া হবে।

স্বাধীন :
জাকাত স্বাধীন মুসলমানের ওপর ফরজ; ক্রীতদাসের ওপর জাকাত ফরজ নয়। ক্রীতদাসের কোনো সম্পদ নেই। কোনো সম্পদ থাকলেও তা তার মালিকের সম্পদ হিসেবে গণ্য হবে। কেন না রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, `সম্পদের অধিকারী কোনো ক্রীতদাস যদি কেউ বিক্রয় করে, তবে উক্ত সম্পদের মালিকানা বিক্রেতার থাকবে। কিন্তু যদি ক্রেতা উক্ত সম্পদের শর্তারোপ করে থাকে তবে ভিন্ন কথা`। (বুখারি)

নিসাবের মালিক হওয়া :
মুসলিম ব্যক্তির নিকট এমন পরিমাণ সম্পদ থাকা; শরিয়ত যে পরিমাণ নির্ধারণ করেছে। সম্পদের প্রকার অনুযায়ী এর পরিমাণও বিভিন্ন রূপ হয়ে থাকে। অতএব কোনো মুসলমানের কাছে নিসাব পরিমাণ সম্পদ না থাকলে তাকে জাকাত দিতে হবে না।

বছর অতিক্রান্ত হওয়া :
নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিকের নিকট যদি উক্ত সম্পদ থাকা সত্বেও জাকাত আদায় করা না হয় তবে তা আল্লাহর হুকুমের অবাধ্যতা করা হয়। যার পরিণাম ভয়াবহ। পাশাপাশি জাকাতের হকদারদের প্রতি করা হয় অবিচার; ক্ষতি হয় অসহায় মানুষ সকল হকদারের। তাছাড়া বছর পূর্ণ না হওয়া সত্ত্বেও জাকাতের আবশ্যকতা সম্পদশালীর ওপর কঠোরভাবে করা হয়েছে। তাই তো শরিয়ত জাকাতের জন্য একটি প্রজ্ঞাপূর্ণ সীমারেখা নির্ধারণ করেছে এবং জাকাতের আবশ্যকতা নির্ধারণ করেছে। আর তা হচ্ছে বছর পূর্ণ হওয়া। অতএব এর মাধ্যমে সম্পদশালী এবং জাকাতের হকদারদের মধ্যে সামঞ্জস্যতার বিধান করা হয়েছে।

এ কারণে বছর পূর্ণ হওয়ার পূর্বেই যদি কোনো মানুষ মৃত্যুবরণ করে বা তার সম্পদ নষ্ট হয়ে যায়; তবে জাকাতের হুকুম রহিত হয়ে যাবে। অবশ্য তিনটি জিনিস এ বিধানের ব্যতিক্রম-
১. ব্যবসার লভ্যাংশ; ব্যবসার লভ্যাংশ মূলধনের সহিত যোগ করে জাকাত দিতে হবে।
২. চতুষ্পদ জন্তুর বাচ্চা; জন্তুর ভূমিষ্ট বাচ্চার জাকাত তার মায়ের সঙ্গে মিলিত করে দিতে হবে।
৩. উশর; জমিনের উৎপাদিত ফসল ঘরে উঠালেই ফসলের জাকাত দিতে হবে।

সুতরাং যে সকল স্বাধীন মুসলিম সম্পদশালীর সম্পদ মেয়াদোত্তীর্ণ হবে তাকে জাকাত দিতে হবে। এ শর্তাবলীর মাঝে যারা পড়বে তাদের ওপর জাকাত ফরজ। রমজানে জাকাতের হকদারের মাঝে জাকাত প্রদান করে আল্লাহর অধিক নৈকট্য লাভে এগিয়ে আসি। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন। আমিন।

লক্ষ্যণীয় : কী পরিমাণ সম্পদ হলে জাকাত দিতে হবে তা জানতে চোখ রাখুন জাগো নিউজে।

জাগো নিউজের সঙ্গে থাকুন। রমজান সম্পর্কিত সুন্দর সুন্দর ইসলামী আলোচনা পড়ুন। কোরআন-হাদিস মোতাবেক আমলি জিন্দেগি যাপন করে রমজানের রহমত, বরকত ও মাগফেরাত অর্জন করুন। আমিন, ছুম্মা আমিন।

এমএমএস/বিএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।