রোজাদারের জন্য ফেরেশতাদের দোয়া


প্রকাশিত: ০৯:৩৪ এএম, ২৭ জুন ২০১৫

রোজাদার ব্যক্তির জন্য আল্লাহর সৃষ্টি জগতের সকল জীব দোয়া করে; কারণ রমজান মাসের ফরজ রোজা শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য রাখা হয়, আর আল্লাহ নিজেই রোজাদারের রোজার প্রতিদান দেবেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন অন্যান্য নেক আমলের প্রতিদান দশ থেকে সাতশ’ গুণ পর্যন্ত দিয়ে থাকেন, শুধুমাত্র রমজানের রোজা ছাড়া। কারণ রোজা আল্লাহর জন্য রাখা হয় আর এর প্রতিদান আল্লাহ নিজেই দেবেন। এ জন্য মাখলুকাতের সকল জানদার রোজাদারের জন্য আল্লাহর দরবারে মাগফেরাত কামনা করে; এমনকি মুমিন বান্দার জন্য আরশ বহনকারী ফেরেশতাগণও জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্ত করে জান্নাত দানের দোয়া করে থাকেন।

দোয়াটি হচ্ছে : রাব্বানা ওয়াসি’তা কুল­া সাইয়ির রাহমাতাওঁ ওয়া ই’ল্মান ফাগফির লিল্লাজিনা তা-বু ওয়াত্তাবাউ’ সাবি-লাকা ওয়াক্বিহিম আ’যা-বাল জাহিম। রাব্বানা ওয়া আদখিল্হুম জান্না-তি ‘আদনিনিল­াতি ওয়া আ’ত্তাহুম ওয়া মান ছালাহা মিন আ-বাইহিম ওয়া আঝওয়াজিহিম ওয়ার্যুরিইয়্যা-তিহিম, ইন্নাকা আনতাল আ’জিজুল হাকিম। (সুরা মুমিন-৪০ : আয়াত ৭ ও ৮; কোরআন শরিফ থেকে বের করে শিখতে পারেন)

অর্থ : হে আমাদের পালনকর্তা! তোমার রহমত ও জ্ঞান সব কিছুতে পরিব্যাপ্ত। অতএব যারা তাওবা করে এবং তোমার পথে চলে তাদের ক্ষমা করো এবং জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করো। হে আমাদের পালনকর্তা! আর তাদেরকে দাখিল করো চিরকাল বসবাসের জান্নাতে, যার ওয়াদা তুমি তাদেরকে দিয়েছ। আর তাদের বাপ-দাদা, পতি-পত্নী ও সন্তানদের মধ্যে যারা সৎকর্ম করে তাদেরকে। নিশ্চয়ই তুমি পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়।

সংক্ষিপ্ত আলোচনা : ক্ষমা করা ও জাহান্নামের আজাব থেকে রক্ষা করা; আবেদন দুটি যদিও পরস্পর ওতপ্রোতভাবে জড়িত এবং একটি কথা বলার পর অপর কথাটি বলার কোনো প্রয়োজন থাকে না। তথাপিও বাচনভঙ্গি দ্বারা মূলত ঈমানদারদের প্রতি ফেরেশতাদের গভীর আগ্রহ প্রকাশ পায়। তাইতো ফেরেশতাকুল বান্দার জন্য ক্ষমা চেয়ে জাহান্নামের আজাব থেকেও মুক্তি চেয়েছেন। এই দু’টি আবেদন মঞ্জুর হলে জান্নাতের বিষয়টিতো এমনিতেই চলে আসে এবং ওই ব্যক্তির বাবা-দাদা, সন্তান-সন্ততি, পতি-পত্নীদের জন্য দোয়া করতে থাকেন।

প্রচলিত নিয়ম হচ্ছে- কোনো ব্যাপারে কারো মন যদি আকৃষ্ট হয় সে যখন শাসকের কাছে আবেদন জানানোর সুযোগ লাভ করে তখন একই আবেদনকে সে বার বার নানাভাবে মিনতি করে পেশ করতে থাকে। এক্ষেত্রে একটি কথা একবার মাত্র পেশ করে সে তৃপ্তি ও সান্ত্বনা পায় না বিধায় বারংবার একই শব্দ বিভিন্ন ভাষায় প্রয়োগ করতে থাকে।

বান্দাকে ক্ষমা করবে কখন- যখন বান্দা অবাধ্যতা পরিত্যাগ করে, বিদ্রোহ থেকে বিরত হয় এবং আনুগত্য গ্রহণ করে। আল্ল­াহর নির্দেশিত পথে জীবন-যাপন করতে শুরু করে। এবং বান্দা নিজেও আল্ল­াহর কাছে ক্ষমা প্রাথর্ণা করতে থাকে। তখনই আল্ল­াহ বান্দাকে ক্ষমা করেন।

সুতরাং রোজাদার ব্যক্তি আল্ল­াহর হুকুম পালন করে দিনের বেলায় পানাহারসহ আল্ল­াহর নিষিদ্ধ কাজগুলো পরিত্যাগ করে এবং ফরজ নামাজগুলো আদায় করার পাশাপাশি রাতের বেলায় তারাবিহ নামাজ আদায়; কোরআন তেলাওয়াত; সাদকা করে। সুতরাং ফেরেশতারা বান্দার আমলে মুগ্ধ হয়ে আল­াহর দরবারে রোজাদার বান্দাদেরকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করানো আবেদন জানায়। এবং এ আবেদন বারংবার মাওলার দরবারে করতে থাকে, দোআ কবুলের জন্য।

আল্ল­াহর অনুগ্রহ- এটা হচ্ছে মুমিন বান্দার জন্য আমার মাওলার একান্ত অনুগ্রহ, রহমত যে, ফেরেশতাদের দিয়েও বান্দাকে মাফ করে দেওয়ার একটা পন্থা উদ্ভাবন করবে। তাই ফেরেশতাদের পাশাপাশি এই রমজান মাসে আমরাও উক্ত দোয়া প্রত্যেক নামাজের পর মুনাজাতে পাঠ করে আল্ল­াহ তাআলার অফুরন্ত রহমত কামনা করতে থাকবো এবং জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্ত হয়ে বংশের সকলকে জান্নাতের সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছানোর আশা করবো। আল্ল­াহ আমাদেরকে উক্ত আমল করার তাওফিক দান করুন। আমাদেরকে কবুল করুন। আমিন।

তথ্যসূত্র : কোরআনুল কারিমের ৪০ নং সুরা মুমিনের ৭ ও ৮ নং আয়াতংশ। (দোয়াটি কোরআনুল কারিম দেখে মুখস্ত করে আমল করাই উত্তম হবে)

জাগো নিউজের সঙ্গে থাকুন। রমজান সম্পর্কিত সুন্দর সুন্দর ইসলামি আলোচনা পড়ুন। কোরআন-হাদিস মোতাবেক আমলি জিন্দেগি যাপন করে রমজানের রহমত, বরকত ও মাগফেরাত অর্জন করুন। আমিন, ছুম্মা আমিন।

বিএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।