প্রতিবেশীর সঙ্গে যেমন হবে আপনার আচরণ

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:১১ এএম, ০৭ অক্টোবর ২০১৭

মানুষের কাছে তার আত্মীয়-স্বজনের চেয়েও পাড়া-প্রতিবেশ অধিক কাজে আসে। কেননা আত্মীয়-স্বজন সাধারণত সব সময় কাছে থাকে না; সুখে-দুঃখে বিপদে-আপদে প্রতিবেশীরাই প্রথমে এগিয়ে আসে।

আত্মীয়-স্বজন কোনো বিষয়ের খবর পাওয়ার পর তার সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আগে এক প্রতিবেশী তার অন্য প্রতিবেশীর খোঁজ-খবর নেয় এবং সেবাযত্ন করে থাকে। তাই সমাজের সব কাজে আত্মীয়-স্বজনের চেয়ে পাড়া-প্রতিবেশীর ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।

তাই সমাজ জীবনে প্রত্যেক মানুষেরই উচিত যে, সে তার পাড়া-প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্প্রীতি ও সদ্ভাব বজায় রাখবে। প্রতিবেশীর পারস্পরিক সম্পর্ক ও অধিকারের বিষয়ে সচেতন থাকবে।

আল্লাহ তাআলা কুরআন কারিমে প্রতিবেশীর সঙ্গে উত্তম আচরণের নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-

‘তোমরা আল্লাহর উপাসনা কর ও কোনো কিছুকে তার অংশী কর না এবং পিতা-মাতা
আত্মীয়-স্বজন, পিতৃহীন, অভাবগ্রস্ত, নিকট প্রতিবেশী
দূর প্রতিবেশী এবং সাথী-সহপাঠী, পথচারী এবং তোমাদের অধিকারভূক্ত
দাস-দাসীদের সঙ্গে উত্তম ব্যবহার(আচরণ প্রকাশ) কর।
নিশ্চয় আল্লাহ আত্মম্ভরী দাম্ভিককে ভালবাসেন না।’ (সুরা নিসা : আয়াত ৩৬)

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও পাড়া-প্রতিবেশীর সঙ্গে উত্তম আচরণের নসিহত পেশ করেছেন। যে কারণে কোনো মুমিন মুসলমানই প্রতিবেশীর সঙ্গে অন্যায় আচরণ করবে না।

মনে রাখতে হবে প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়া একজন মুসলমানের ঈমানের পরিপন্থী কাজ। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

‘যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং পরকালে বিশ্বাস রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়।’ (মিশকাত)

প্রতিবেশীর পারস্পরিক আচরণ
পাড়া-প্রতিবেশীর অধিকার প্রসঙ্গে এক সাহাবী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করেন যে, একজন প্রতিবেশী থেকে অন্য প্রতিবেশী কেমন আচরণ আশা করে? প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উত্তরে যা বললেন, তাহলো-
>> যদি এক প্রতিবেশী অপর প্রতিবেশীর কোছে ধার (কর্জ) চায়, তাহলে তাকে কর্জ দেয়া;
>> যদি একে অপরকে দাওয়াত করে, তবে তা গ্রহণ করা;
>> প্রতিবেশীর কেউ অসুস্থ হলে তার সেবা করা;
>> যদি কখনো একে অপরের কাছে কোনো বিষয়ে সাহায্য প্রার্থনা করে, তবে তাকে সহযোগিতা করা;
>> প্রতিবেশীর দুঃখে সমবেদনা প্রকাশ করা;
>> প্রতিবেশীর আনন্দে তাকে মোবারকবাদ বা অভিনন্দন জানানো;
>> প্রতিবেশীর উপকারে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা;
>> প্রতিবেশীর মৃত্যু হলে জানাযায় অংশগ্রহণ করা;
>> প্রতিবেশীর অনুপস্থিতিতে তার সব ধরনের সহায়-সম্পদের হেফাজত করা। এমনকি কোনো প্রতিবেশীর বাড়ির পাশে বাড়ি নির্মাণে অনুমতি ছাড়া তাঁর বাড়ির চেয়ে উঁচু বাড়ি নির্মাণ না করা।

পরিশেষে...
কুরআন এবং হাদিসের বর্ণনানুযায়ী পাড়া-প্রতিবেশী পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নে সহনশীল ও সহযোগিতার মাধ্যমে উত্তম আচরণ করা। একে অন্যের প্রতি আন্তরিকতা প্রদর্শন করা মুমিনের একান্ত কর্তব্য।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর প্রত্যেক পাড়া-প্রতিবেশীকে তাদের পারস্পরিক আচার-ব্যবহার ও ভাব-বিনিময়ে উত্তম আচরণ করার তাওফিক দান করুন। প্রতিবেশীর হক আদায়ে কুরআন-সুন্নাহর রীতি-নীতি অনুসরণ ও অনুকরণ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।