যেভাবে রসিকতা করেছেন প্রিয়নবি

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:৫১ এএম, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭

রসিকতা, কৌতুক ও খোশগল্প চিত্ত বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম। তা মিথ্যা ও পাপ কাজ ত্যাগ করে তা বৈধভাবেই করা যায়। রসিকতার বৈধতার প্রমাণ মেলে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জীবনে।

তিনি নিজেও সাহাবায়েকেরাম ও পরিবার-পরিজনের সঙ্গে কৌতুক, রসিকতা ও খোশগল্প করেছেন। রসিকতার প্রসঙ্গে কুরআন এবং হাদিসের অনেক দৃষ্টান্ত রয়েছে।

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রসিকতা
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতিটি রসিকতার দিকে দৃষ্টিপাত করলে দেখা যাবে তাতে মিথ্যার লেশমাত্র নেই। শুধু মানসিক প্রশান্তি ও চিত্তবিনোদন এবং প্রশংসা করার জন্যই তিনি সবার সঙ্গে রসিকতা করেছেন, যা এ উম্মতের জন্য উত্তম শিক্ষা।

একবার তিনি হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বলেছিলেন, ‘হে দু’কানওয়ালা!’ এ কথায় যেমন মিথ্যা নেই। তাতে আবার রয়েছে আনন্দ ও বিনোদন। কারণ মানুষের কান তো দুটিই হয়। তা সত্ত্বেও যখন কাউকে ‘দু’কানওয়ালা’ সম্বোধন করে ডাকা হয়; স্বভাবতই ওই ব্যক্তি প্রথম ডাকেই চমকে যাবে।

আর এটি যে ছিল রসিকতা বা কৌতুক; তা সে পরে বুঝে আনন্দ পাবে। কারণ এ ডাকে তাকে প্রশংসিত ও গুণান্বিত করা হয়েছে। ‘হে দু’কানওয়ালা!’ মানে হলো সে কোনো কিছু নিখুঁত শোনে এবং সঠিকভাবে বুঝতে পারে। হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহুর ক্ষেত্রে যা ছিল সত্য কথার অপূর্ব রসিতকা।

আবার কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা মানুষকে হেয় বা উপহাস করতে বিশেষভাবে নিষেধ করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! পুরুষগণ যেন অপর পুরুষদেরকে উপহাস না করে। তারা (অর্থাৎ যাদেরকে উপহাস করা হচ্ছে, তারা) তাদের চেয়ে উত্তম হতে পারে। এবং নারীগণও যেন অপর নারীদেরকে উপহাস না করে। তারা (অর্থাৎ যে নারীদেরকে উপহাস করা হচ্ছে) তাদের চেয়ে উত্তম হতে পারে। তোমরা একে অন্যকে কটাক্ষ করো না এবং একে অন্যকে মন্দ উপাধিতে ডেকো না। (এসব ফাসেকি কাজ। আর) ঈমানের পর ফাসেকি নামযুক্ত হওয়া বড় খারাপ কথা। যারা এসব থেকে বিরত না হবে তারাই জালেম বা অত্যাচারী।’ (সুরা হুজরাত : আয়াত ১১)

রসিকতা সব সময় নয়। রসিকতা করার ব্যাপারে মানুষের ‘স্থান-কাল-পাত্র’ এ তিনটি দিক বিশেষভাবে বিবেচনায় রাখা জরুরি। কেননা সব রসিকতা সবার সঙ্গে যায় না। আবার রস গ্রহণের যোগ্যতা সবার সমান থাকে না। কেউ খোশগল্প বা রসিকতাকে সানন্দে গ্রহণ করলেও অন্যজন আবার অসময়ে হওয়ার কারণে তাতে ক্ষেপে যায়। তাই রসিকতা করার সময় অবশ্যই স্থান-কাল-পাত্র হিসেব করেই করতে হবে।

পরিশেষে...
রসিকতা শুধুমাত্র সত্য হওয়াই যথেষ্ট নয় বরং তা সাধু ও সুন্দর হওয়াও জরুরি। অসৎ উদ্দেশ্যে সত্য কথা দিয়েও রসিকতা করা যাবে না। কাউকে আক্রমনাত্মক উদ্দেশ্যে সত্য কথা দ্বারা রসিকতা করাও বৈধ হবে না।

মনে রাখতে হবে সত্য কথার দ্বারা কারো চরিত্র হরণ বা কাউকে কষ্ট দেয়ার উদ্দেশ্যে রসিকতা থেকে হেফাজত থাকতে হবে।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে চিত্ত বিনোদন ও সত্য ও সুন্দরের পক্ষে উত্তম সমাজ বিনির্মাণে রসিকতা ও কৌতুক করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।