সুরা কাহফের উল্লেখযোগ্য ঘটনা ও তেলাওয়াতের ফজিলত

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:৫০ এএম, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭

কুরআনের ১৮ নম্বর সুরা হলো ‘সুরা আল-কাহফ’। এটি অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ একটি সুরা; যা পবিত্র নগরী মক্কায় অবতীর্ণ হয়। ১১০ আয়াত বিশিষ্ট সুরাটি সম্পর্কে হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত হাদিসে এসেছে যে, ‘সম্পূর্ণ সুরাটি একসঙ্গে নাজিল হয়েছে এবং এর সঙ্গে ৭০ হাজার ফেরেশতা দুনিয়াতে আগমন করেছেন।’

সুরাটির নামকরণ
এ সুরাটি এক দল মুমিন যুবক নিয়ে আলোচিত; যাদের বলা হয় ‘আসহাবে কাহফ’। মুমিন যুবক দল আল্লাহর দ্বীনকে সংরক্ষণের জন্য দেশ ত্যাগ করে দূর দেশের কোনো এক পাহাড়ের গুহায় আত্মগোপন করেছিলেন। তাদের ঘটনা বর্ণিত হওয়ার কারণেই সুরাটিকে কাহফ হিসেবে নামকরণ করা হয়েছে।

সুরা কাহফে উল্লেখযোগ্য ৩টি ঘটনা
>> ওইসব যুবকের ঘটনা, যারা ঈমান আকিদা রক্ষার জন্য নিজেদের ওপর কুরবানি করে নিজেদের আবাস, সহায়-সম্পদের মায়া ত্যাগ করে দূর অজানায় কোনো পাহাড়ের গুহায় আত্মগোপন করে আশ্রয় নিয়েছিলেন এবং সেখানে ৩০৯ বছর ঘুমিয়ে কাটানোর পর আল্লাহ তাআলা তাদের আবার জাগ্রত করেন।

>> হজরত মূসা ও খিজির আলাইহিস সালামের মাঝে সংঘটিত ঘটনাও এ সুরায় আলোচিত হয়েছে।

>> দুনিয়ার ক্ষমতাশালী বাদশাহদের একজন ‘বাদশাহ জুলকারনাইন’। যিনি সারাবিশ্বের বাদশাহ ছিলেন এবং সারা পৃথিবী ভ্রমণ করেছিলেন। তাঁর রাজত্বকালের অনেক তথ্যবহুল ঘটনার জন্যও এ সুরাটি যেমন বৈশিষ্ট্যপূর্ণ তেমনি অনেক তাৎপর্যপূর্ণ।

সুরা কাহফের ফজিলত
>> হজরত সাহাল ইবনে মুআয রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি সুরা কাহাফের প্রথম ও শেষ আয়াতগুলো পাঠ করবে; তার পা থেকে মাথা পর্যন্ত একটি নূর হয়ে যায়। আর যে পূর্ণ সুরা তেলাওয়াত করে তার জন্য জমিন থেকে আসমান পর্যন্ত নূর হয়ে যায়। (মুসনাদে আহমদ)

>> হজরত আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত আছে, যে সুরা কাহাফের প্রথম ১০ আয়াত মুখস্ত করবে; সে দাজ্জালের ফিৎনা হতে নিরাপদ থাকবে। অন্য হাদিসে ভিন্ন রেওয়ায়েতে শেষ ১০ আয়াতের ব্যাপারে উল্লিখিত ফজিলতের বর্ণনা রয়েছে। (মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিজি, নাসাঈ ও মুসনাদে আহমদ)

সুতরাং প্রথম বা শেষ ১০ আয়াত অথবা উভয় দিক দিয়ে মোট ২০ আয়াত যে মুখস্ত করবে সেও হাদিসের ঘোষিত ফজিলত লাভের অন্তর্ভুক্ত হবেন।

জুমার ‍দিন সুরা কাহফ তেলাওয়াতে ফজিলত
>> হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহফ পাঠ করবে তার জন্য এক জুমা থেকে অপর (পরবর্তী) জুমা পর্যন্ত নূর হবে।

>> হজরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহাফ তেলাওয়াত করবে, সে আটদিন পর্যন্ত সর্বপ্রকার ফিৎনা থেকে মুক্ত থাকবে। যদি দাজ্জাল বের হয় তবে সে দাজ্জালের ফিৎনা থেকেও মুক্ত থাকবে।

>> অন্য রেওয়ায়েতে আছে এক জুমা থেকে অপর জুমা পর্যন্ত তার সব গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। তবে উল্লিখিত গুনাহ মাফ হওয়ার দ্বারা সগিরা গুনাহ উদ্দেশ্য। কারণ ওলামায়ে কেরামের ঐকমত্য হচ্ছে যে, কবিরা গুনাহ তওবা করা ছাড়া ক্ষমা হয় না।

পরিশেষে...
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জুমার দিন সুরা কাহাফ বেশি বেশি তেলাওয়াত করার তাওফিক দান করুন এবং এর মর্মার্থ বুঝে তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ ও ঘোষিত ফজিলত অর্জন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।